রামু প্রতিনিধি :: রামুর খুনিয়াপালংয়ে সরকারি খাসজমিতে রাতের আঁধারে পাহাড় কেটে পোল্ট্রি খামার নির্মাণ করছে প্রভাবশালী চক্র। রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমার নির্দেশে ওইস্থানে তদন্তে গিয়ে খাসজমি দখল, পাহাড় কেটে পোল্ট্রি খামার নির্মাণের সত্যতা পেয়ে লিখিত প্রতিবেদন দিয়েছেন-ধেছুয়াপালং ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা আবছার কামাল।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে- খুনিয়াপালং ইউনিয়নের দারিয়ারদিঘী আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকার নুরুল হকের ছেলে আলী হোসেন এবং আমির হামজার ছেলে সুলতান আহমদের নেতৃত্বে একটি চক্র দারিয়ারদিঘী মৌজার ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত বিএস ২৯৪৬ নং দাগের পাহাড় শ্রেণির ৪০ শতক জমি কেটে তাতে মুরগীর খামার নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে- পাহাড় কাটায় জড়িতদের কয়েকবার নিষেধ করার পরও সরকারি বিধি-নিষেধকে তোয়াক্কা না করে বেআইনীভাবে মুরগীর খামার নির্মাণ অব্যাহত রেখেছে। সরকারি স্বার্থ তথা সরকারি মূল্যবান জমি উদ্ধার ও পরিবেশ রক্ষায় জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরী।
রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা জানিয়েছেন- ওই এলাকায় পাহাড় কেটে মুরগীর খামার নির্মাণের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তেও সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে শ্রীঘ্রই প্রয়োজনীয় আইনী প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এদিকে পাহাড় কেটে খামার নির্মাণের ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করে পাশর্^বর্তী জমির মালিক ফয়েজ আহমদ গত ১৩ ফেব্রæয়ারি রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। ওই অভিযোগে ফয়েজ আহমদ উল্লেখ করেছেন- তাঁর ব্যক্তি মালিকানাধিন জমির পাশে খাস পাহাড় শ্রেণির জমি রয়েছে। অভিযুক্ত আলী হোসেন ও সুলতান আহমদ অবৈধভাবে পাহাড় কেটে মুরগীর খামার নির্মাণ শুরু করেছে। একারণে বর্ষা মৌসুমে কেটে ফেলা পাহাড়ের অবশিষ্ট মাটি প্রবাহিত হয়ে কৃষি জমি ভরাট হওয়ার আশংকা রয়েছে। এছাড়াও পাহাড় শ্রেণির জমি নির্বিচারে কেটে ফেলায় ওই এলাকায় পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে।
অভিযোগ তদন্তকারি ধেছুয়াপালং ইউনিয়ন সহকারি কর্মকর্তা আবছার কামাল জানান- প্রাথমিক তদন্তে খাসজমি দখল, পাহাড় কাটা ও অবৈধভাবে পোল্ট্রি খামার নির্মাণের সত্য পাওয়া গেছে। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আলী হোসেন পাহাড় কাটার বিষয়টি অস্বীকার করে জানান- পাশে একটি মাঠ ছিলো, সেটি ভরাট করার জন্য কিছু মাটি কাটা হয়েছে। এছাড়া পোল্ট্রি খামার নির্মাণ নিয়ে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।
এলাকাবাসী জানান- সম্প্রতি এলাকায় পাহাড় কেটে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে একাধিক চক্র। এদের বিরুদ্ধে জরুরীভাবে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আগামীতে পরিবেশ বলতে কিছুই থাকবে না। সেই সাথে সরকারি জমি ভূমিগ্রাসীদের দখলে চলে যাবে।
পাঠকের মতামত: