ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

মিয়ানমারে রয়টার্স সাংবাদিকদের পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়া পুলিশ কর্মকর্তার কারাদণ্ড

বিদেশ ডেস্ক :
রোহিঙ্গা গণহত্যার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে কারাগারে আটক রয়টার্স সাংবাদিকদের পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়া এক পুলিশ কর্মকর্তাকে কারাদণ্ড দিয়েছে মিয়ানমার। মোয়ে আন নাইন নামের ওই কর্মকর্তাকে পুলিশের শৃঙ্খলাবিধি সংক্রান্ত আইন ভঙ্গের দায়ে সাজা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পুলিশের এক মুখপাত্র। তবে তাকে কতদিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কোনও তথ্য জানানো হয়নি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
২০ এপ্রিল আদালতে হাজির করা হয় পুলিশ কর্মকর্তা মোয়ে ইন নাইনকেগত বছরের ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় পুলিশ সদস্যদের আমন্ত্রণে এক রেস্টুরেন্টে যাওয়ার পর নিখোঁজ হন মিয়ানমারে কর্মরত রয়টার্সের দুই সাংবাদিক ওয়া লোন ও কিয়াও সোয়ে ও। পরে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ জানায় দাফতরিক গোপনীয়তা ভঙ্গের আইনে তাদের আটক করা হয়েছে। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানালেও তাতে কর্ণপাত করেনি মিয়ানমার। উল্টো আদালতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা চালাচ্ছে মিয়ানমার। মামলায় দোষী প্রমাণ হলে ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে এই সাংবাদিকদের।

সাংবাদিকদের মামলায় সাক্ষ্য দিতে গত ২০ এপ্রিল ইয়াঙ্গুনের আদালতে হাজির করা হয় পুলিশ কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোয়ে আন নাইনকে। আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে তিনি বলেন, এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পুলিশকে গত ডিসেম্বরে এক রয়টার্স সাংবাদিককে ‘ফাঁদে ফেলা’র নির্দেশ দেন। ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাকে সাংবাদিক ওয়া লোনের সঙ্গে এক রেস্টুরেন্টে দেখা করে তাকে ‘গোপন নথি’ দেওয়ার জন্য বলেন। আদালতকে তিনি জানান তাকেও ডিসেম্বরের ১২ তারিখ থেকে আটক করে রাখা হয়েছে। পরিবারের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয়নি।

গ্রেফতার হওয়ার সময় রয়টার্স সাংবাদিকেরা গত বছর রাখাইনের ইন দীন গ্রামে দশ রোহিঙ্গাকে গণহত্যার বিষয়ে তদন্ত করছিলেন। সাংবাদিকেরা আটক হলেও ওই খবর সামনে নিয়ে আসে রয়টার্স। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে নিজস্ব অনুসন্ধানের কথা জানায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এপ্রিলে ওই ঘটনায় দায়ী সাত সেনা সদস্যকে দশ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে বলে জানায় মিয়ানমার।

রবিবার মিয়ানমার পুলিশের মুখপাত্র কর্নেল মিয়ো থু সোয়ে রয়টার্সকে বলেন, একটি পুলিশি আদালতে মামলা চলার পর মোয়ে আন নাইনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সাজা ঘোষণার পর তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তবে কখন কোথায় এই আদালতের কার্যক্রম চলেছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি পুলিশের ওই মুখপাত্র। এসব বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, শাস্তি হিসেবে তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে আর বাকি তথ্য দয়া করে নিজেরা খুঁজে নিন। তাৎক্ষনিকভাবে এই বিষয়ে মন্তব্যের জন্য মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জাও তাইয়ের কাছেও পৌঁছাতে পারেনি মিয়ানমার।

পাঠকের মতামত: