ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

মা-বাবার পাশে চিরসমাহিত অধ্যাপক জিকু

ইমাম খাইর :: দুই মাস আগে করে যাওয়া অছিয়ত মতে মা মরহুমা রহিমাতুন্নেছা ও পিতা মরহুম আলহাজ্ব নজু মিয়ার কবরের পাশেই চির সমাহিত হলেন চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা কলেজের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক নুরুল আলম জিকু।
করোনা আক্রান্ত হয়ে রবিবার (৪ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ১১ টার দিকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

সোমবার (৫ অক্টোবর) বাদে জুহর খুটাখালী মেদা কচ্ছপিয়া অঙ্গিকার খেলার মাঠে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জানাজায় ইমামতি করেন মরহুম অধ্যাপক নুরুল আলম জিকুর বড় ভাই মাওলানা নুর আহমদ আনচারী।
অধ্যাপক নুরুল আলম জিকুর মৃত্যু পুরো এলাকাকে কাঁদিয়েছে। জানাজায় দূরদূরান্তের লোকজনের স্বতঃস্ফূর্ত অংশ গ্রহণ সেটিই প্রমাণ দেয়। তার মৃত্যু পরিবারের ১০ ভাই, ২ বোনের একগুচ্ছ তারাকা থেকে যেন একটি তারকা ঝরে গেল।
অধ্যাপক নুরুল আলম জিকুর নামাজে জানাজায় চকরিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রেজাউল করিম, ডুলাহাজারা কলেজের অধ্যক্ষ ফরিদুল আলম, খুটাখালী তমিজিয়া ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ ওমর হামজা, খুটাখালী ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মাওলানা আবদুর রহমান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাহাদুর হক, ঈদগাহ ফরিদ আহমদ কলেজের অধ্যাপক শফিকুর রহমান, জামাত নেতা মাওলানা মোজাম্মেল হক, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রমজান আলী, কক্সবাজার শহীদ তিতুমীর ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাস্টার শফিকুল হক, ডা. আবদুর রহিম আমানি, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের অর্গানিয়ার মোহাম্মদ শরীফ নেওয়াজসহ প্রচুর শোকার্ত মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।

নামাজে জানাজা শেষে দক্ষিণ মেদা কচ্ছপিয়া মহল্লার পুরনো কবরস্থানে চিরশায়িত থাকা মা মরহুমা রহিমাতুন্নেছা ও পিতা আলহাজ্ব নজু মিয়ার কবরের পাশে অধ্যাপক জিকুকে চিরসমাহিত করা হয়েছে বলে জানান মরহুমের বড় ভাই ফুলছড়ি ইসলামিয়া আদর্শ দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা বশির আহমদ।
তিনি বলেন, ‘আমার ছোট ভাই নুরুল আলম জিকু প্রায় ২ মাস আগে কবরের জায়গা ঠিক করে গেছেন। মা-বাবার পাশে তাকে দাফনের জন্য বলেছেন। তার অছিয়ত মতো সেখানেই দাফন করা হয়েছে।’
অধ্যাপক নুরুল আলম জিকু খুটাখালী দক্ষিণ মেদা কচ্ছপিয়া স্কুল পাড়ার বাসিন্দা হলেও কক্সবাজার শহরের উত্তর তারাবনিয়ারছরা এলাকায় বাড়ি করেছেন। সেখানেই স্বপরিবারে বসবাস করতেন।

তার একমাত্র মেয়ে নাবিহা চট্টগ্রাম মহিলা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে এবং একমাত্র ছেলে নাবিদ হাসান কক্সবাজার সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র।
পেশাগত জীবনে অধ্যাপক জিকু খুবই দক্ষ ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে পরিচিত। তিনি ডুলাহাজারা কলেজ ছাড়াও খুটাখালী তমিজিয়া ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসা, ঈদগাঁও ফরিদ আহমদ কলেজে শিক্ষকতা করেছেন। অনেক প্রতিষ্ঠানে খন্ডকালীন শিক্ষকতা করেন তিনি।
করোনার উপসর্গ নিয়ে অধ্যাপক নুরুল আলম জিকুকে গত ২৫ সেপ্টেম্বর তাকে জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি করানো হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর তার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। এরপর জিকুকে হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। ৪ অক্টোবর দিবাগত রাত সাড়ে ১১ টার দিকে মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫২ বছর।

পাঠকের মতামত: