ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠি, রেললাইনে ক্ষতিগ্রস্থ-জমি হারানো ভুমি মালিক ও চাষীদের

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
জনগনের আশা ভরসার প্রতিক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। প্রথমে আমাদের লাখো সালাম গ্রহন করিবেন। চকরিয়া পৌরসভার পালাকাটা মৌজার পৌরসভা অংশে রেললাইনের কারনে ক্ষতিগ্রস্থ ও জমি হারানো একদল ভুমি মালিক ও চাষীর খোলা চিঠি।
মহাত্মন,
            আপনার সু-শৃঙ্খল রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও বুদ্ধিমত্তায় রাষ্ট্রের প্রতিটি সেক্টরে উন্নয়ন ও দুর্ণীতি মুক্ত করে সফলতায় আমরা দেশবাসী মুগ্ধ। আমরা আপনার আরো সফলতা কামনা করে আপনার কাছে খোলা চিটি লিখতে বসলাম।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
                    আপনার মহানুভবতায় দোহাজারী থেকে কক্সবাজার হয়ে ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন উন্নয়ন প্রকল্প একটি যুগান্তকারী ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তাই স্বাগত জানাই।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এ রেললাইন জনগন ও দেশবাসীর জন্য নিসন্দেহে আশির্বাদ। কিন্তু আপনার এ উন্নয়নে কালিমা লেপনকারীরা তৎপর। সরকারী-বেসরকারী দায়ীত্ববান কিছু কু-চক্রী মহলের কারনে চকরিয়া পৌরসভার পালাকাটা অংশের ভুমি মালিকদের জন্য রেল লাইন
আজ অভিশাপ হয়ে দাড়িয়েছে।
কারন, চকরিয়ার  পালাকাটা মৌজার একটি অংশ পৌরসভার ৬ ও ৭ নং ওয়ার্ড । পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ড
থেকে   মাত্র  ১০ একর জমি অধিগ্রনে পড়েছে। এ অংশটি সাবেক পালাকাটা মৌজা হলেও বর্তমানে পৌরসভা হিসাবে এর জমি
আলাদা মৌজা, আলাদা মুল্যে পৌরসভার ভিন্ন ভিন্ন চাহিদায় কর দিয়ে বেচাবিক্রী করে থাকি। পালাকাটা মৌজার অন্যান্য এলাকার জমির দামের চেয়ে ১০ গুন বেশী দামে চকরিয়া পৌরসভার জমি বিক্রী করি। যা চকরিয়া সাব-রেজিষ্ট্রার কার্যালয়ে আলাদা মৌজা চিহ্নীত করে উচ্চদামের মুল্যের মৌজা রেইট বিদ্যমান রয়েছে।

কিন্তু রেললাইনের জন্য নিয়োগকৃত ভুমি অধিগ্রহন কমিটি সরেজমিনে প্রমানের জন্য পরিদর্শন করে নাই।
তাই চিরিঙ্গা উপকুলের সমমান করে পৌরসভার জমিও একই দাম দেখান রোয়েদাদে।
 যদিও বাতিলকৃত ১৯৮২ সালের অধিগ্রহন আইন ও ২০১৭ সালের সংশোধিত আইন উভয়েই বাধ্যতামুলকভাবে   সরেজমিনে উপস্থিতি, ভিড়িও করন নিশ্চিতসহ বর্নিত বিষয় যেমন,–

ভূমি অধিগ্রহণ সহজ করতে গত বছরের ডিসেম্বরে মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাওয়া আইনের খসড়াটি ‘স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল আইন, ২০১৭’ নামে সংসদে বিল আকারে উত্থাপন করা হয়েছে। তাতে এসব বিধান রাখা হয়েছে। এটি আইনে পরিণত হলে যাঁর জমি অধিগ্রহণ করা হবে, তিনি এখনকার তুলনায় আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। এতে জমি অধিগ্রহণ অনেক সহজ হবে বলে আশা করেছেন সরকার।

এত দিন ১৯৮২ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী ভূমি অধিগ্রহণ করত সরকার।

এতে জমির মূল্যের অতিরিক্ত দেড় গুণ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান ছিল। জেলা প্রশাসক এ ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করতেন। এতে অনেক জমি ও স্থাপনার মালিক জমি দিতে নিরুৎসাহ হয়ে আদালতে মামলা করতেন। ফলে অধিগ্রহণ কার্যক্রম বিঘ্নিত হতো। নতুন আইন জারি করে এসব সংকট কেটে যাবে বলে মনে করছে সরকার। তা ছাড়া উচ্চ আদালতের রায়ে সামরিক সরকারের সময় জারি করা অধ্যাদেশগুলো অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এসব কারণেই নতুন আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে বলে সংসদে উত্থাপিত বিলে উল্লেখ করা হয়েছে। কেউ এ আইন অমান্য করলে বা প্ররোচনা দিলে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
সম্প্রতি পিপিপি বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, বিনিয়োগের বড় সমস্যা জমি পাওয়া। বিদ্যমান ব্যবস্থায় জমি অধিগ্রহণ করা কঠিন কাজ। জমির মালিককে ক্ষতিপূরণ কম দেওয়া হয়। এ জন্য অনেক মামলা হয়। ফলে ক্ষতিপূরণ বাড়িয়ে আইন পরিবর্তন করা হচ্ছে। শিগগিরই আইনটি পাস হবে।

বিলের ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো মালিক তাঁর বাড়ি, কারখানা বা ভবনের সম্পূর্ণ অংশ অধিগ্রহণ করতে হবে—এমন শর্ত দিলে সংশ্লিষ্ট বাড়ি, কারখানা বা ভবনের অংশবিশেষ অধিগ্রহণ করা যাবে না। তবে অধিগ্রহণের সময় কোনো স্থাবর সম্পত্তি কোনো বাড়ি, কারখানা বা ভবনের অংশ কি না, সে বিষয়ে জেলা প্রশাসক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

সংসদে উত্থাপিত এ বিল অনুযায়ী, ক্ষতিপূরণ হিসাবের ক্ষেত্রে স্থাবর সম্পত্তির বাজারমূল্য নির্ধারণ করা হবে যে জমি অধিগ্রহণ করা হবে তার আশপাশের একই শ্রেণির ও সমান সুবিধাযুক্ত স্থাবর সম্পত্তির নোটিশ জারির আগের ১২ মাসের মূল্যের গড় করে। এর সঙ্গে সম্পত্তিতে ফসল বা বৃক্ষ থাকলে ব্যক্তির ক্ষতি, সম্পত্তি বিভাজনের ক্ষতি, অধিগ্রহণের কারণে ব্যক্তির অন্যান্য স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি বা উপার্জনের ওপর কোনো ক্ষতিকর প্রভাবের ক্ষতি এবং অধিগ্রহণের কারণে ব্যক্তির আবাসস্থল ও ব্যবসাকেন্দ্র স্থানান্তর করতে বাধ্য হলে স্থানান্তরের জন্য যুক্তিসংগত খরচ দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে মালিক বাজারমূল্যের ওপর অতিরিক্ত ১০০ ভাগ ক্ষতিপূরণ পাবেন। অধিগ্রহণের কারণে কেউ বাস্তুচ্যুত হলে ক্ষতিপূরণ দেওয়া ছাড়াও পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে সরকার। বেসরকারি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য অধিগ্রহণ করা হলে এসব খরচ ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে। বর্গাদারের আবাদ করা ফসলসহ কোনো স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ করা হলে ফসলের জন্য জেলা প্রশাসক যেমন ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করবেন, একই রকম ক্ষতিপূরণ বর্গাদারকে দিতে হবে।

ক্ষতিপূরণ মঞ্জুরির প্রাক্কলিত অর্থ জমা দেওয়ার ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে জেলা প্রশাসক ক্ষতিপূরণের অর্থ বুঝিয়ে দেবেন। কোনো ব্যক্তি ক্ষতিপূরণের অর্থ নিতে অসম্মত হলে বা ক্ষতিপূরণ নেওয়ার দাবিদার পাওয়া না গেলে অথবা ক্ষতিপূরণ দাবিদারের মালিকানা নিয়ে কোনো আপত্তি দেখা দিলে ক্ষতিপূরণের অর্থ সরকারি কোষাগারে রাখা হবে। অধিগ্রহণের জন্য ক্ষতিপূরণ পরিশোধ হওয়ার ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে গেজেট জারির মাধ্যমে অধিগ্রহণ কার্যক্রম শেষ হবে।”
কিন্তু  কক্সবাজার জেলা প্রশাসন অথবা ভুমি অধিগ্রহনে নিয়োজিত কমিটি চকরিয়া পৌরসভার পালাকাটা নামের একটি মৌজা আছে, ওই মৌজার কোন খতিয়ানে কাদের নামে জমাভাগ খতিয়ান আছে, কার কার নামে নোটিশ হবে কিছুই ঠিক করতে পারেন নাই বা বিবেচনা করেন নাই। এবং যে তথ্য দিয়েছে তাও ভুলে ভরা। প্রায় ৬০ লক্ষ  টাকা একর প্রতি মৌজা রেইট সাব রেজিষ্ট্রার অফিসে বিদ্যমান থাকলেও একর প্রতি মাত্র ২১ লক্ষ টাকা মৌজা রেইট বসানো হয়েছে।  যা ভুমি মালিকদের পথে বসানোর সামিল।
শুরুতেই আমরা ৫ এবং ৬ ধারা নোটিশ  বিভিন্ন জমি মালিকের নামে ইস্যু হবার পর থেকে ৫-৬ বার অভিযোগ দিয়ে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে সংশোধনি চেয়েছি কিন্তু জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কমিটি আমাদের আবেদন যাচাই করেনি এমন কি যাচাই করা প্রয়োজন ও মনে করেন নি। বরং এরি মধ্যে ভুলে ভরা ৭ ধারা নোটিশ ইস্যু করেন যেখানে আমাদের নামে নোটিশ নাই।
ফলে নিরোপায় হয়ে আমি সহ এলাকার অর্ধশত জমি মালিক ২৫ জন বাদী হয়ে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে পৌরসভার মৌজা রেইট সহ আমাদের নামে নোটিশ ইস্যুর আবেদন করে সংশ্লিষ্ট ভুমি মন্ত্রণালয় সচিব সহ জেলা ভুমি হুকুম দখল কর্মকর্তার বিরোদ্ধে মামলা দায়ের করেছি। মামলায় সংশ্লিষ্ট সচিব সহ জেলা ভুমি হুকুম দখল কর্মকর্তাদের ৪ সপ্তাহের রোল নিশি জারী করেছেন মাননীয় হাইকোর্ট। কিন্তু ২ মাস পার হলেও কোন জবাব দেন নাই সচিব সহ জেলা ভুমি হুকুম দখল কর্মকর্তাগন। এমতাবস্থায় অনিশ্চয়তার মাঝেই রেললাইনের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আমাদের জমিতে কৃষকদের রোপিত ধান ও ক্ষেত খামার নষ্ট করে স্কেভেটর চালিয়ে কাজ শুরু করে গরিব কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছেন। অথচ  মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনিই ২০১৭ সালে নতুন আইন করে বলেছেন ১৯৮২ সালের আইন বাতিল ২০১৭ সালের আইনে জমি মালিকদের ক্ষতিপুরন দিতে। এবং ৮০ % ভাগ টাকা আদায়ের পর জমিতে রেলের কাজ আরম্ভ করতে। কিন্তু জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আপনার /সরকারের সিদ্ধান্তের কোন মুল্যায়ন প্রয়োজন মনে করেন নি।
এমতাবস্থায় আপনিই ক্ষতিগ্রস্থ জমি মালিকদের শেষ আশ্রয়স্থল।
    মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি ১৭ কোটি জনগনের রাষ্ট্র পিতা। আপনার রাজনীতি কৃষক, শ্রমিক, মেহনতী মানুষসহ সারাদেশের মানুষের কল্যাণের রাজনীতি। কোথাও অনিয়ম হলে তার সমাধান দিয়ে ইতিমধ্যে হাজার হাজার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাই জোর করে আমাদের জমি কেড়ে নেয়ার সুযোগ দিয়ে আমাদের বঞ্চিত করবেন না। আমরা আপনার সহযোগীতা চাই। আমাদের বাঁচতে দিন। সর্বোপরি আপনার সহৃদয় সহানুভুতি কামনা সহ

আপনার মঙ্গল ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আমার চিটি শেষ করছি। 

 ইতি/ নিবেদক

চকরিয়া পৌরসভার পালাকাটাবাসির পক্ষে-

সাংবাদিক মনির আহমদ

মোবাইল নং ০১৮১৯১২২১১০

আবু তালেব

সাবেক সভাপতি

চকরিয়া পৌরসভার

৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ

রুহুল আমিন

আওয়ামীলীগ নেতা।

পাঠকের মতামত: