ঢাকা,মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪

মাতারবাড়ির বেড়িবাঁধের নাজুক অবস্থা তলিয়ে যেতে পারে পুরো ইউনিয়ন

কক্সবাজার প্রতিনিধি ::
মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী ইউনিয়নের  ৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের অবস্থা খুব নাজুক হয়ে পড়েছে। জোয়ারের পানি বাড়লে যেকোন মুহুর্তে পুরো মাতারবাড়ি ইউনিয়ন পানিতে তলিয়ে যেতে পারে। তাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন না করলে দ্বিতীয় টুঙ্গিপাড়া খ্যাত মাতারবাড়ি ইউনিয়নে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তাই দ্রুত বেড়ীবাঁধ নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক বরাবরে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে আবেদন করেছেন মাতারবাড়ির চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ। তিনি আবেদনে বলেন ইউনিয়নের সাইট পাড়া এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৭০ নং ফোল্ডারের বেড়ীবাঁধের অবস্থা খুবই নাজুক। প্রায় ৩ কিলোমিটার ভাঙ্গা বেড়ীবাঁধ দিয়ে বঙ্গোপসাগরের পানি প্রবেশ করে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। ইতোমধ্যে সাইট পাড়া এলাকায় অনেক বসতবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে।  মাতারবাড়ি ইউনিয়ন বঙ্গোপসাগরের মোহনায় হওয়ায় যেকোন মুহুর্তে ব্যাপকভাবে প্লাবিত হতে পারে। ইতোমধ্যে নয়াপাড়াস্থ বেড়িবাঁধের ভাঙ্গন দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে প্রায় ১৫টি বসবাড়ি ও গোয়াল ঘর ভেসে গেছে। আরো ভেঙ্গে যাওয়ার আশংকা রয়েছে ঐ এলাকার একটি মসজিদসহ শতাধীক ঘরবাড়ি। গত রমজানের ঈদের পর ৬০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ঐ এলাকায় জরুরী ভিত্তিতে কাজ করার কথা থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ তা না করায় ঐ এলাকার ভাঙ্গনের এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
মাতারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ আরো জানিয়েছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড আর কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তারা শুধু মুখে আশ্বাস দিয়ে আসছে। পানি নিস্কাসনের সকল স্লুইচ গেইট কোলপাওয়ার কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দিয়ে বর্ষা মৌসুমে পানি ঢুকিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে মাতারবাড়ি ইউনিয়নকে। এ ছাড়া মাতারবাড়ি পশ্চিমে সাগরের চ্যানেল থেকে ড্রেজার দিয়ে বালি উত্তোলনের কারণে দীর্ঘ চরটি বিলীন হয়ে গেছে। ফলে সাগরের বিশাল ঢেউ আচড়ে পড়ছে বেড়ীবাঁধের উপর। যার ফলে বেড়ীবাঁধ রক্ষা করা যাচ্ছে না। এ ছাড়া কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে বেরিয়ে যাওয়া কাদা মাঠি, বালি ও ময়লা-আবর্জনা, কুহেলিয়া নদীতে পড়ায় নৌযান চলাচল বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কোহেলিয়া নদী ধীরে ধীরে মাতারবাড়ির ভুপৃষ্ট থেকে প্রায় সমান হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টির পানি ও বাড়ি ঘরে ব্যবহারের বর্জ্য কোহেলিয়া নদীতে পড়তে না পারায় রাস্তা-ঘাট আবর্জনায় ভরপুর হয়ে যাচ্ছে। চেয়ারম্যান আরো বলেন, জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত দ্বিতীয় টুঙ্গিপাড়ার এখন বেহাল দশা চলছে। প্রধানমন্ত্রীর অগোচরেই এই এলাকার মানুষকে চরম দুর্ভোগে ফেলেছেন সংশ্লিষ্টরা। তিনি আরেক বার মাতারবাড়ি সফর করলে প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসবে।

পাঠকের মতামত: