নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
দেশে নারী ও শিশু থেকে শুরু করে মানুষের কারো জীবনের নিরাপত্তা নেই। বিগত ১২ বছর দেশে কোনো আইনের শাসন নেই। যেটা আছে তা হচ্ছে দলীয় শাসন। ফলে দেশে এক অরাজক পরিস্থিতি চলছে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও নারী-শিশু ধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা হচ্ছে। আজ দেশের মানুষ আইনের শাসনের নামে চরম বিচারহীনতায় ভুগছে। ভোটার বিহীন অবৈধ সরকারকে ক্ষমতার মসনদ থেকে বিদায় করতে আন্দোলনের বিকল্প নেই।
শনিবার (২০মার্চ) বিকালে মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহীর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং পায়রা উড়িয়ে দ্বি-বাষিক সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কক্সবাজার জেলা বিএনপি সভাপতি, সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী।
সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহবুবুর রহমান শামীম আরও বলেন, বর্তমানে দেশের অধিকাংশ জনসংখ্যা দরিদ্র সীমায় বসবাস করছে। সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছেনা। আজ দেশের পুঁজি বাজার সরকারের কব্জায়। সিন্ডিকেটের কবলে বাজার নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। হিমশিম খেতে হচ্ছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের। এখন পরিস্থিতি এমন হয়েছে, নিম্ন আয়ের মানুষের টিকে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে। এ সরকার তা দেখেও হুশ হারিয়ে ফেলেছে।
আছে শুধু বিএনপি নেতাকর্মী বিরুদ্ধে একের পর মিথ্যা মামলা-হামলা, নিষ্ঠুর নির্যাতন ও ব্যাপকহারে দমনপীড়নের মধ্যে। দমনপীডনের মাধ্যমে বিএনপিকে দমাতে চাই। বিএনপি নেতাকর্মী প্রতি যতো অবিচার ও জেল জুলম, নির্যাতন করা হচ্ছে ততো দেশের মানুষের কাছে বিএনপি সমর্থন এবং জনপ্রিয়তা আরো ব্যাপকভাবে বাড়ছে। সরকার দেশকে স্বৈরাচারী কায়দায় মানুষের বাকস্বাধীনতাকে রুদ্ধ করে রেখেছে।
এদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে রাজনীতি থেকে দূরে সরাতে সরকার তাকে বন্দী করে রেখেছে। বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান তারুণ্যের অহংহার তারেক রহমানকেও বিভিন্ন ভাবে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়েছে। যেন দেশের মাটিতে তারেক রহমান আসতে না পারে। একদিন দেশের মাটিতে বীরের বেশে দেশের সূর্য সন্তান তারেক রহমান ফিরে আসবেই, সেদিন কেউ থাকে আটকে রাখতে পারবে না। তাই দলের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে এই অবৈধ সরকারকে ক্ষমতার মসনদ থেকে বিতাড়িত করতে ঐক্যবদ্ধ ভাবে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ার জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।
মাতামুহুরী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জামিল ইব্রাহিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব হেফাজতুর রহমান টিপু, মোহাম্মদ আলী চৌধুরী ও সোয়াইবুল ইসলাম সবুজের সঞ্চালনায় ইলিশিয়া জমিলা বেগম উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুমে উক্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক সাবেক পিপি এডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না।
বিশেষ অতিথি ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি এটিএম নূরুল বশর চৌধুরী, সহ-সভাপতি এনামুল হক মিজানুর রহমান চৌধুরী খোকন মিয়া, দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, জেলা যুবদলের সভাপতি এডভোকেট সৈয়দ আহমদ উজ্জ্বল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি অধ্যাপক আজিজুর রহমান, জেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন, পেকুয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন।
সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- জেলা বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রাশেদুল হক রাসেল, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ফাহিমুর রহমান ফাহিম, জেলা স্বেচ্ছাসেবকদল সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মীর মোশরফ হোসেন টিটু, মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আবু ইউসুফ, বদরখালী ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি এম আলী আকবর, ডেমুশিয়া ইউনিয়ন বিএনপি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আলম জিকু, কোনাখালী বিএনপি সভাপতি ডা.আবদুল মাবুদ, বিএমচর ইউনিয়ন বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মাস্টার ইব্রাহিম খলিল, সাহারবিল ইউনিয়ন বিএনপি সাধারণ সম্পাদক হাসান মোহাম্মদ রেজাউল করিম, মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা যুবদলের সভাপতি ইমাম উদ্দিন মনির, ছাত্রদলের সভাপতি আসিফ নেওয়াজ, স্বেচ্ছাসেবকদল সভাপতি শহিদুল ইসলাম মানিক, শ্রমিকদলের সভাপতি রেজাউল করিম, কৃষকদলের সভাপতি খাইরুল বশর, মৎস্যজীবি দলের সভাপতি বেলাল উদ্দিন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলার আওতাধীন সাত ইউনিয়ন থেকে আসা বিপুল পরিমাণ নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে সম্মেলনস্থল জনসমুদ্রে পরিণত হয়। পরে অত্যন্ত সুরক্ষিত পরিবেশে দ্বি-বাষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে বিএনপির যে সকল নেতাকর্মী মৃত্যু বরণ করেছেন তাদের স্মরণে শোক প্রস্তাব করা হয় এবং দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পুরো সম্মেলনে ঘিরে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমান ও সালাহ উদ্দিন আহমদকে দেশে ফিরতে দাবি জানিয়ে নানা শ্লোগান সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুনে সম্মেলনের চারপাশ ভরে উঠে।
পাঠকের মতামত: