ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

মাতামুহুরী নদীতে নতুন চার লেনের সেতু বদলে যাবে এই অঞ্চলের অর্থনীতিক ব্যবস্থা

্ি্‌্‌্‌্মিজবাউল হক, চকরিয়া:
অবশেষে মাতামুহুরী নদীর ওপর দিয়ে নির্মিত হচ্ছে চার লেন বিশিষ্ট সেতু। এই সেতু নির্মিত হলে দেশের সীমান্ত বাণিজ্য সম্প্রাসরণ সহ পর্যটন নগরী কক্সবাজারের ব্যাপক উন্নয়নের ধার উম্মোচন হবে। এই চার সেতু হচ্ছে, পটিয়ার ইন্দ্রপুল সেতু, দোহাজারির সাঙ্গু সেতু, চন্দনাইশের বরগুনি সেতু ও মাতামুহুরী সেতু। দক্ষিণ-চট্টগ্রামের চার সেতু নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০৮কোটি টাকা। এরমধ্যে এসব টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন জাতীয় অর্থনীতি নিবার্হী পরিষদ একনেক। জাপানি সংস্থা জাইকার অর্থ্যায়নে এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সার্বিক তত্বাবধানে এই সেতুটি নির্মাণ করা হবে। ফলে বদলে যাবে এই অঞ্চলের অর্থনীতিক ব্যবস্থা।
জানা যায়, বর্তমানে মাতামুহুরী নদীর ওপর নির্মিত সেতুটির মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক আগে থেকে। ১৯৬০সালে নির্মাণ করা হয়েছিলো এ সেতুটি। এরপর থেকে বড় ধরণের কোন মেরামত করা হয়নি। জোড়াতালি দিয়ে পারাপর হচ্ছে পরিবহন গুলো। জরাঝীর্ণ এই সেতুটির ওপর দিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়ত করছে শতশত ভারি যানবাহন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল আসা পর্যটক কক্সবাজারে আসতে এই সেতু দিয়ে যাতায়ত করতে হয়। দক্ষিণ অঞ্চলের লক্ষ লক্ষ মানুষের অর্থনীতির মুল চালিকা শক্তি হচ্ছে এই সেতুটি। বর্তমানে সেতুটি দিয়ে যাতায়ত করতে বড় ধরণের দূর্ঘটনার আশঙ্কা করছে পর্যটক সহ সাধারণ যাত্রীরা।
স্থানীয় লোকজন জানান, অতিরিক্ত যাতায়তের কারণে পাঁচ বছর পূর্বে সেতুটির মাঝখানে পুঠো হয়ে গেছে। ওইস্থানে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পুঠো স্থানটি মেরামত করা হয়। সেতুর মাঝখানে এক ধরণের (কবরের মতো) উচু হয়ে যায়। রাতের আধারে ওই উ”ু স্থানে একাধিকবার দূর্ঘটনার শিকার হয়েছে যানবাহন গুলো। গত চার বছর পূর্বে কক্সবাজারমুখী একটি বাস উচু স্থানের সাথে ধাক্কা লেগে সেতুর রেলিং ভেঙ্গে মাতামুহুরী নদীতে পড়ে যায়। ওইসময় ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান ২২জন। এভাবে একেরপর এক দূর্ঘটনার শিকার হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নজর দেয়নি। এবারেই প্রথম বর্তমান সরকার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও চার লেন করার সিন্দ্বান্ত নিয়েছে।
সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার পাশ্ববর্তী দেশ গুলোর সাথে বাণিজ্যিক সম্পূর্ক উন্নয়ন করতে চায়। বিশেষ করে ভারত, মিয়ানমার, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে দ্রুত সময়ে সড়ক যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চার লেন বিশিষ্ট সড়ক করার সিন্দ্বান্ত নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে এসব দেশের সীমান্ত বাণিজ্য সম্প্রাসারণের পাশাপাশি অবৈধ পথে চোরাচালানি বন্ধ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ সহজেই করা যাবে। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১৫৮ কিলোমিটার মহাসড়কটির চার লেন বিশিষ্ট সড়ক বাস্তবায়ন করার আগে পটিয়ার ইন্দ্রপুল সেতু, দোহাজারির সাঙ্গু সেতু, চন্দনাইশের বরগুনি সেতু ও চকরিয়ার মাতামুহুরী সেতু দ্রুত বাস্তবায়ন করতে চায়। দক্ষিণ-চট্টগ্রামের চার সেতু নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০৮কোটি টাকা। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি’র (জাইকা) অর্থ্যায়নে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সেতু গুলো নির্মাণ বাস্তবায়ন করবে। আগামী বছরের জানুয়ারীতে এ চার সেতুর কাজ শুরু হবে। ২০১৯ সাল নাগাদ নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট সূত্র।
চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাঁশিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী জানান, মাতামুহুরী নদীতে চার লেনের সেতু নির্মাণ করা হলে এ অঞ্চলরে মানুষের ভাগ্য বদলে যাবে। চট্টগ্রাম কক্সবাজারের যোগাযোগ সহজ হওয়ার পাশাপাশি পণ্য পরিবহন ও ব্যবসা-বাণিজ্যে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে। সহজ ও কম খরচে পণ্য পরিবহন, এলাকার শিক্ষা বিস্তার ও ব্যবসা-বাণিজ্যেও বড় ধরনের পরিবর্তন হবে বলে তিনি জানান।

পাঠকের মতামত: