ঢাকা,বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

মহেশখালীতে অপহৃত মাদ্রাসাছাত্র উদ্ধার, অস্ত্রসহ দুই অপহরণকারী আটক

শাহেদ মিজান, কক্সবাজার ::  মহেশখালীতে অস্ত্রের মুখে অপহৃত মাদ্রাসা ছাত্র মোঃ শাহীন আলম উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল ১৬ জানুয়ারি ভোরে এক রুদ্ধধার অভিযান চালিয়ে উপজেলার পানিরছড়ার বারঘরপাড়া থেকে ছাত্রটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় ম থানা পুলিশ। এই অপহরণের ঘটনায় জড়িত দুইজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। অপহৃত মাদ্রাসা ছাত্র মোঃ শাহীন আলম কুতুবজোম ইউনিয়নের সোনাদিয়ার মোঃ শফিউল আলমের পুত্র এবং কুতুবজোম আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্র। ১৩ জানুয়ারি নতুনবাজার থেকে তাকে অপহরণ করা হয়।

এই ঘটনায় আটকৃতরা হলেন, হোয়ানক ইউনিয়নের কেরুনতলী এলাকার শাহ আলম ও বড়মহেশালী ইউনিয়নের মুন্সিরডেইল এলাকর আবদুল গফুর।

অপহৃতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কুতুবজোম ইউনিয়নের সোনাদিয়া এলাকার রফিককে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে বড় মহেশখালীর জাগিরাঘোনার মানব পাচারকারী মোঃ আলম ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। এ ঘটনায় আলমসহ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ১৩ জানুয়ারী দুপুর ১২টায় নতুন বাজার থেকে রফিকের ভাইপো কুতুবজোম মাদ্রাসার ছাত্র শফি আলমের পুত্র শাহীন আলমকে করা হয়। সাতটি মানবপাচারসহ ১৩টি মামলার পলাতক আসামী জাগিরাঘোনার মোঃ আলমের নেতৃত্বে কয়েকজন লোক শাহীন আলমকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে।

অপহৃত শাহীন আলম জানান, অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে তাকে প্রথমে কেরুনতলীর পূর্বে পাহাড়ের একটি বাড়িতে নিয়ে যায় এবং তার মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেয়। রাত হলে সেখান থেকে পাহাড়ি পথ দিয়ে বড়মহেশখালীর বড়ডেইল পাহাড়ি এলাকার নির্জন একটি বাড়ি রাখা হয়। এক শেষ পর্যায়ে ১৪ জানুয়ারি রাতে পানিরছড়ার বারঘরপাড়ার একটি বাড়ি আটকে রাখা হয়।
মহেশখালী থানার ওসি (তদন্ত) বাবুল আজাদ জানান, ছাত্রটি অপহরণ হওয়ার সাথে সাথে তার ও অহপরণকারীদের মোবাইল ট্র্যাকিং করা হয়। কিন্তু স্থান পরিবর্তন হওয়ায় সহজে আয়ত্বে আনা যায়নি। এক পর্যায়ে তারা পানিরছড়া অবস্থান করার তথ্য পাওয়া যায়। দ্রুত পানিরছড়ার ওই পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহৃত শাহীন আলমকে উদ্ধার করা হয় এবং হাতেনাতে দুই অপহরণকারীকে আটক করা হয়। তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক বন্দুক ও গুলি উদ্ধার করা হয়। তবে অভিযান টের পেয়ে পালিয়ে যাওয়ায় মূল অপহরণকারী মোঃ আলমকে আটক করা যায়নি।

থানা সূত্রে জানা গেছে, অপহরণের ঘটনায় অপহৃত শাহীন আলম বাদী হয়ে তিনজনকে এজাহারনামীয় আসামী করে মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দায়ের করেন এবং এক পুলিশ সদস্য বাদি হয়ে একটি অস্ত্র মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অপহৃত শাহীন আলমের পিতা শফিউল আলম বলেন, আমার ছেলেটির মা তার জন্মের সময় মারা যায়। বর্তমানে আমার বোনের বাড়িতে থেকে কুতুবজোম আদর্শ দাখিল মাদ্রাসায় পড়ালেখা করছে। মামলা দায়েরের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে আমার ছেলেকে অপহরণ করেছে মোঃ আলম। মেরে ফেলার উদ্দেশ্যেই ছেলেকে অপহরণ করেছিলো। কিন্তু আল্লাহ আমার ছেলেকে রক্ষা করেছেন। আমার ছেলেকে উদ্ধারে পুলিশ যে আন্তরিকতা ও দায়িত্বশীলতা দেখিয়েছেন তার জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধর বলেন, রুদ্ধধার অভিযান চালিয়ে অপহৃত ছাত্রকে উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে দু জনকে আটক করেছে। মুল অপহরণকারী আলমকে আটক করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

পাঠকের মতামত: