ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

মগনামায় সরকারী সড়কের ইট চুরিতে বাধা দেওয়ায় ৩ গ্রাম পুলিশের উপর সন্ত্রাসী হামলা

মুহাম্ম্দ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া ::

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নে সরকারী সড়কের ইট চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় বাধা দিতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলায় তিন গ্রাম পুলিশ গুরুতর আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজন নারী গ্রাম পুলিশও রয়েছে। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে পেকুয়া সরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে, আজ ৩০ জানুয়ারী দুপুরে মগনামা ইউনিয়নের কাজী মার্কেট টু মটকাভাঙ্গা সড়কে। আহতরা হলেন, মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের নারী গ্রাম পুলিশ বুলু আরা বেগম (৩০), গ্রাম পুলিশ মোস্তাক আহমদ ও গ্রাম পুলিশ মোস্তাফা কামাল।

স্থানীয় এলাকাবাসী, প্রত্যক্ষদর্শীদের সুত্রে জানা গেছে, ৩০ জানুয়ারী সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মগনামা ইউনিয়নের কাজী মার্কেট টু মটকাভাঙ্গা সরকারী সড়কের ইট চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিলেন কোদাইল্যা দিয়া গ্রামের আশরাফ মিয়ার পুত্র আবদুল হাকিমের নেতৃত্বে একদল দূর্বুত্ত। সড়কের ইট চুরির সংবাদ পেয়ে দুপুরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো: ইউনুচ চৌধুরী পরিষদ থেকে কয়েকজন গ্রাম পুলিশকে ঘটনাস্থলে পাঠান। গ্রাম পুলিশ আলমগীর, মোস্তাক আহমদ, মোস্তাফা কামাল ও বুলুয়ারা বেগম ঘটনাস্থলে এসে আবদুল হাকিমকে সরকারী সড়কের ইট চুরিতে বাধা প্রদান করেন। এসময় আবদুল হাকিম স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও গ্রাম পুলিশদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে করে। এক পর্যায়ে আবদুল হাকিমের নেতৃত্বে আরিফ, আবদুল মান্নানসহ একদল সন্ত্রাসী গ্রাম পুলিশের উপর লোহার রড ও লাটিসোটা নিয়ে বেপরোয়া হামলা চালায়। হামলায় নারী গ্রাম পুলিশ বুলুয়ারা বেগম, গ্রাম পুলিশ মোস্তাক আহমদ, মোস্তাফা কামাল গুরুতর আহত হয়। এরমধ্যে নারী গ্রাম পুলিশ বুলুয়ারাকে পরণে থাকা সরকারী পোষাক টেনে হিছড়ে ছিঁড়ে পেলে শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে আবদুল হাকিমের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা। গ্রাম পুলিশ মোস্তাফা কামালের হাতও ভেঙ্গে দিয়েছে আবদুল হাকিম বাহিনী।

এদিকে গ্রাম পুলিশের উপর হামলার ঘটনার খবর পেয়ে মগনামা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আরো কয়েকজন গ্রাম পুলিশ ও ইউপি সদস্যরা এসে সড়কের ইট চুরির সাথে জড়িত আবদুল হাকিমকে আটক করে পরিষদে নিয়ে যায়। তবে এদিন সন্ধ্যায় আবদুল হাকিমের পরিবার পরিষদে মুচলেকা দিয়ে আবদুল হাকিমকে পরিষদকে ছাড়িয়ে নেন। পরিষদ থেকে বের হয়ে এসে আবদুল হাকিম হাসপাতালে ভর্তি হয়ে উল্টো তার হামলায় গুরুতর আহত গ্রাম পুলিশদের মিথ্যা মামলায় আসামী করার জন্য নানান ধরনের তৎপরতা শুরু করেছে।

মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার মো: আলমগীর জানান, সকালে ইট চুরির খবর পেয়ে তারা কয়েকজন গ্রাম পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে সরকারী সড়কের ইট চুরি বাধা দিতে গিয়ে সন্ত্রাসী আবদুল হামিদ কর্তৃক হামলার শিকার হয়েছে।

সন্ত্রাসী হামলায় আহত গ্রাম পুলিশ মোস্তাফা কামাল জানান, সন্ত্রাসী আবদুল হাকিম বাহিনী তার হাত ভেঙ্গে দিয়েছে। সন্ত্রাসী আবদুল হাকিমের বিচার দাবী করেছেন আহত গ্রাম পুলিশ মোস্তাফা কামাল।

মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: ইউনুচ চৌধুরী বলেন‘ সরকারী সড়কের ইট চুরি বাধা দিতে গিয়ে তার পরিষদের ৩ গ্রাম পুলিশের উপর সন্ত্রাসী আবদুল হাকিম বাহিনী যে ন্যাক্করজনক হামলা চালিয়েছে তা খুবই নিন্দনীয় ঘটনা। সরকারী সড়কের ইট চুরির ঘটনা জঘন্য অপরাধ।

ইউপি চেয়ারম্যান আরো বলেন, মগনামা ইউনিয়নের কোদাইল্লা দিয়া গ্রামের আবদুল হাকিমের নেতৃত্বেই পরিষদের ৩ গ্রাম পুলিশের উপর হামলা করেছে। গ্রাম পুলিশের উপর হামলাকারী সন্ত্রাসীকে দ্রুত গ্রেফতারপূর্বক আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন।

পেকুয়া থানার ওসি (তদন্ত) কানন সরকার জানান, মগনামায় সড়কের ইট চুরি নিয়ে গ্রাম পুলিশ ও অপর একজনের মধ্যে একটি ঘটনা সংগঠিত হয়েছে বলে অবহত হয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

 

পাঠকের মতামত: