ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

ভারী বর্ষনে ঈদগাঁও বাজার এবার ডুবলো পানিতে : দোকানপাঠে পানিবন্দি : জনদূর্ভোগ চরমে

এম আবুহেনা সাগর, ঈদগাঁও ::

গত কয়েকদিন ধরে টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট বন্যায় ঈদগাঁও বাজার এবার পানিতে ডুবলো। প্রায় ব্যবসা প্রতিষ্টানে পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে। এতে করে সর্বশ্রেনী পেশার লোকজনের মাঝে জনদূর্ভোগ চরম পর্যায়ে পৌছেছে। ১২ জুন সকালে বাজারের অলিগলি পরিদর্শনকালে দেখা যায়, জেলা সদরের বৃহৎ বানিজ্যিক উপ শহর ঈদগাঁও বাজারের প্রধান ডিসি সড়কসহ অলিগলি জুড়ে হাঁটু পরিমান পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। এমনকি বাজারের নিউ মার্কেট, বেদার মার্কেট, মাতবর মার্কেট, হাজী মার্কেট, হাসপাতাল সড়ক,চাউল বাজার সড়ক,স্বর্ণপল্লী এলাকা,বাজারের পশ্চিমগলি,শহীদ মিনার সড়ক,মসজিদ সড়ক,কাপড়ের গলি,মাছবাজার সড়ক,ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ,ইউনিয়ন ভূমি অফিস,ঈদগাঁও উপ ডাকঘর ও তরিতরকারী বাজারে হাটু পরিমান পানিতে সয়লাভ হয়ে উঠেছে। ঈদগাঁও নদীতে ঢলের পানি বৃদ্বি পাওয়ায় লোকজন চরম আতংকে রয়েছে। এছাড়াও ঈদগাঁও বাজারে সকাল এগারটার পর কিছু কিছু ব্যবসায়ী তাদের দোকানপাঠ খুললে ও অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্টান বন্ধ রয়েছে। কর্মচারীরা দোকানের ভেতর প্রবেশ করা বন্যার পানি পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজে ব্যস্ত থাকতে চোখে পড়ে। আবার চাউল বাজার সড়কের চাউল ব্যবসায়ীরা লাখ লাখ টাকার চাউল নিয়ে মহাটেনশনে পড়েছে। পাশাপাশি পুরো ঈদগাঁও বাজার ছাড়াও পার্শ্ববতী বৃহত্তর ঈদগাঁওর অন্যান্য ইউনিয়নের নিন্মাঞল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে চলতি ব্যবসায়ীক ভরা মৌসুমে ক্রেতারা মার্কেটমুখী না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে বিভিন্ন মার্কেটে ক্রেতা শুন্য হয়ে পড়েছে। অপরদিকে প্রবল পানির তোড়ে গুরুত্বপূর্ণ পোকখালী যাতায়াত সড়কের জাহানারা ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন স্থানে ভেঙ্গে গিয়ে জন ও যান চলাচল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়াও বন্যার পানিতে ভেসে গেছে ঈদগাঁও বাশঁঘাটা হয়ে ইসলামাবাদ যাতায়াতের দীর্ঘদিনের একমাত্র কাঠের সেতুটি। সেখানে বর্তমানে কর্মমুখী লোকজন নদীর এপার ওপার হচ্ছে নৌকা দিয়ে। ঈদগাঁও বাশঁ ঘাটা পারাপার হয়ে বিভিন্ন এলাকায় আসা যাওয়ার লক্ষে নির্মিত কাঠের সেতুটি রাতে প্রবল পানির তোড়ে ভেসে যায়। পাশাপাশি জাহানারা বিদ্যালয়ের সামনে বিশাল অংশ ভেঙ্গে পোকখালী সড়কে বর্তমানে চলাচল বন্ধ রয়েছে। পোকখালী ও ইসলামাবাদের প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষজন সীমাহীন কষ্ট পাচ্ছে। দ্রত সময়ে যদি এ ভাঙ্গন সংস্কার করা না হয় তাহলে আরো ব্যাপক আকারে ভাঙ্গনের আশংকা প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। সে সাথে বাশঁঘাট সড়ক ও সুপারীগলি সড়কে পানিতে ভরপুর। একদিকে ঈদগাঁও বাশঁঘাটায় চলাচলের কাঠের সেতুটি পানিতে তলিয়ে গেছে,অন্যদিকে পার্শ্ববতী স্কুল সংলগ্ন স্থানে ঈদগাঁও পোকখালী যাতায়াত সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় দুই ইউনিয়নের অসংখ্য লোকজন বর্তমানে চলাচলে নিদারুন কষ্ট পাচ্ছে। আবার ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের নিচ তলায় প্রতিটি শ্রেনীকক্ষে পানি প্রবেশ করে। মাঠ ভর্তি পানি যেন যাওয়ার কোন ব্যবস্থায় নেই। অপরদিকে সুষ্ট ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় ঈদগাঁওর জাগির পাড়া,জালালাবাদ সওদাগর পাড়ায় বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে একাকার হয়ে পড়েছে। ঈদগাঁও ইউনিয়নের বৃহত্তর মাইজপাড়ায় ভরাখালের উপর কতিপয় লোকজন দোকান নির্মান আর ক্ষেত্র খামারের নামে খাল দখল করার কারনে ভরাখালটি দিনদিন সংকীর্ণ হওয়ায় বৃষ্টির পানি চলাচল করতে না পারায় খালের নিকটবর্তী বাড়ীঘরের উঠানে পানিবন্ধি হয়ে পড়ে। দূর্ভোগ আর দূর্গতিতে পড়ছে মহিলারা। রান্নারকাজেও কষ্ট পাচ্ছেন বলে জানান অনেক গৃহবধু। আবার বৃহত্তর ঈদগাঁওর বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় বৃষ্টির কারনে বিচ্ছিন্ন হওয়া বিদ্যুতের লাইন এখনো চালু হয়নি এমন অভিযোগ পবিস গ্রাহকদের। সেসব এলাকার বাড়ীঘরে ফ্রিজে রক্ষিত খাদ্রদ্রব্য নষ্ট হয়ে পড়ছে বলে জানান ভোক্ত ভোগীরা। ঈদগাঁও চাউল বাজার সড়কের ব্যবসায়ী বাবুল রুদ্র আজকের ককসবাজারকে জানান, ঈদগাঁও ইউনিয়নের পশ্চিম ভোমরিয়া ঘোনা,রুদ্র পাড়া,চৌধুরী পাড়া ও ইসলামাবাদ হিন্দু পাড়ায় অধিকাংশ বাড়ীঘর প্লাবিত হয়ে পড়েছে। তারা নানা কষ্টে দিনপার করে যাচ্ছে বলেও জানান। এ ব্যাপারে ঈদগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান ছৈয়দ আলমের মুঠোফোনে সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

পাঠকের মতামত: