আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: ২০১৮ সালের জুলাই মাসে রাশিয়ার মস্কোয় কিশোরী তিন বোন ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় তাদের বাবাকে ছুরিকাঘাত এবং আঘাত করে হত্যা করে। এই বোনদের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ থাকলেও তাদের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে রাশিয়ায় উত্তপ্ত বিতর্ক শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই তিন লাখ মানুষ একটি পিটিশন সই করে তাদের মুক্তি দেয়ার আহবান জানিয়েছে। কেননা তদন্তকারীরা নিশ্চিত হয়েছেন যে, মেয়েদের বাবা বছরের পর বছর ধরে তাদের শারীরিক এবং মানসিকভাবে পীড়ন করে আসছিলেন।বাবার কি হয়েছিল?
২০১৮ সালের জুলাই মাসের বিকালে ৫৭ বছরের মিখাইল খাচাতুরিয়ান তার তিন মেয়ে, ক্রিস্টিনা, অ্যাঞ্জেলিনা এবং মারিয়াকে একে একে ডেকে পাঠান। তিনজনই সে সময় ছিল অপ্রাপ্তবয়স্ক। ফ্ল্যাট পরিষ্কার পরিছন্ন করে না রাখার জন্য তিনি তাদের বকাঝকা করেন এবং মুখে পেপার গ্যাস স্প্রে করেন। কিছুক্ষণ পরে তিনি ঘুমিয়ে পড়লে মেয়েরা ছুরি, হাতুড়ি আর পেপার স্প্রে নিয়ে তার ওপর হামলা করে। তারা মাথায়, গলায় এবং বুকে মারাত্মক আঘাত করে। পরবর্তীতে তার শরীরে ৩০টির বেশি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এরপর মেয়েরা পুলিশে খবর দেয় এবং ঘটনাস্থলেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। খবর বিবিসির।
তদন্ত করতে গিয়ে ওই পরিবারের মধ্যে চরম নির্যাতন ও সহিংসতার ইতিহাস বেরিয়ে আসে। খাচাতুরিয়ান গত তিন বছর ধরে তার মেয়েদের নিয়মিত মারধর করতেন, নির্যাতন করতেন, দাসী করে রেখেছিলেন এবং যৌন নিপীড়নও করতেন। তিন বোনই তাদের বাবার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেছে। এই মামলাটি দ্রুতই রাশিয়ায় আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো দাবি করে যে, এই বোনরা কোন অপরাধী নয়, বরং ভুক্তভোগী। কারণ নির্যাতনকারী পিতার কবল থেকে বাইরে গিয়ে সাহায্য চাওয়ার কোন জায়গা বা সুরক্ষার কোন উপায় তাদের ছিল না। রাশিয়ায় পারিবারিক নির্যাতন থেকে ভুক্তভোগীদের রক্ষা কোন আইন নেই। ২০১৭ সালে প্রথম আইনে কিছু পরিবর্তন আনা হয়, যার ফলে পরিবারের কোন সদস্য অপর সদস্যকে যদি এমনভাবে মারধর করে যাতে তার আঘাত হাসপাতালে ভর্তি করার মত গুরুতর না হয় তাহলে তাকে শুধুমাত্র জরিমানা করা যাবে অথবা দুই সপ্তাহ পর্যন্ত আটক রাখা যাবে। রাশিয়ার পুলিশ সাধারণত পারিবারিক নির্যাতনের ঘটনাগুলোকে পরিবারের ব্যাপার বলে গণ্য করে থাকে, ফলে আসলে কোন সহায়তাই করে না।
এই বোনদের মাও অতীতে খাচাতুরিয়ানের কাছে মারধর ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, পুলিশের কাছেও গিয়েছিলেন। প্রতিবেশীরাও তার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং তাকে প্রচণ্ড ভয় পেতেন। কিন্তু এসব ঘটনায় পুলিশ কোন ব্যবস্থা নিয়েছে, এমন নজির নেই। হত্যাকাণ্ডের সময় কিশোরী বোনদের মা তাদের সঙ্গে বসবাস করতেন না এবং মেয়েদের সঙ্গে মায়ের যোগাযোগের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন খাচাতুরিয়ান। মনোবিজ্ঞানীদের পর্যালোচনা অনুযায়ী, মেয়েরা বসবাস করতো নিভৃতে এবং মানসিক কষ্টের ভেতর দিয়ে গিয়েছিল (পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস)।
তদন্তের সময় কি ঘটেছিল?
খাচাতুরিয়ান বোনদের মামলাটি খুবই আস্তে আস্তে এগোচ্ছে। তারা আটক অবস্থায় নেই, তবে তাদের চলাফেরার ওপর কিছু বিধিনিষেধ আছে। তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন না, এমনকি নিজেদের মধ্যেও না। কৌঁসুলিরা দাবি করছেন যে, খাচাতুরিয়ানকে হত্যার বিষয়টি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, যেহেতু তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন আর বোনরা সুসংগঠিতভাবে হামলা করেছে, আগেই ছুরি সংগ্রহ করে রেখেছে। তারা বলছেন, বোনদের উদ্দেশ্য ছিল প্রতিশোধ নেয়া। এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে বোনদের বিশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। অভিযোগ আছে যে অ্যাঞ্জেলিনা হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেছে, মারিয়া ছুরিকাঘাত করেছে আর ক্রিস্টিনা পেপার স্প্রে ছুঁড়েছে। তবে বোনদের আইনজীবীরা বলছেন, নিজেদের রক্ষা করতেই তারা এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে। রাশিয়ার ফৌজদারি আইনে আত্মরক্ষার বিষয়টি শুধুমাত্র তাৎক্ষণিক হামলা থেকে নিজেকে বাঁচাতেই নয়, বরং নিয়মিত অপরাধ থেকে বাঁচার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। যেমন কেউ জিম্মি হয়ে থাকলে, সে অবস্থায় নির্যাতনের শিকার হলে নিজের আত্মরক্ষার জন্য ব্যবস্থা নিতে পারেন। বিবাদী পক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, এই বোনরা নিয়মিত অপরাধের শিকার এবং এ কারণেই তাদের খালাস দেয়া উচিত। তারা আশা করছেন, মামলাটি বাতিল করা হবে, যেহেতু তদন্তকারীরা দেখতে পেয়েছেন যে, ২০১৪ সাল থেকেই এই বোনরা বাবার হাতে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। মানবাধিকার কর্মী এবং অনেক রাশিয়ান এখন দাবি করছেন যেন এক্ষেত্রে আইন পরিবর্তন করা হয় এবং সরকারি ব্যবস্থাপনায় আশ্রয় কেন্দ্র, সুরক্ষার ব্যবস্থা এবং পীড়নকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের মতো নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
প্রকাশ:
২০১৯-০৮-২৪ ১২:২৩:৩৭
আপডেট:২০১৯-০৮-২৪ ১২:২৩:৩৭
- চকরিয়ায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ কর্মী নাজমুল ইসলাম গ্রেফতার
- চকরিয়া সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা সম্পন্ন
- চকরিয়ায় টিসিবির ডিলারশীপ নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগে দু’জনের বরাদ্দ স্থগিত
- খাদ্য সংকটে বনের হিংস্র হাতি এখন লোকালয়ে
- চকরিয়ায় মা-মেয়ে হত্যার ঘাতক খুনি মেহেদী ও তার সহযোগীদের ফাঁসির দাবীতে মানববন্ধন
- চকরিয়ায় সেবা নিশ্চিতে তিনটি ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগ
- আনন্দ-উচ্ছ্বাসে সাংবাদিক সংসদ, কক্সবাজার’র পারিবারিক মিলনমেলা সম্পন্ন
- চকরিয়ায় প্রতিনিয়ত লোকালয়ে হানা দিচ্ছে বন্যহাতির পাল, আতঙ্কে স্থানীয় বাসিন্দারা
- ঈদগাঁও উপজেলা বাপার সমন্বয় সভায় কমিটি গঠন
- চকরিয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কাভার্ডভ্যান পুকুরে, চালক নিহত
- চকরিয়া এডভোকেট এসোসিয়েশনের নির্বাচন সম্পন্ন
- চকরিয়ায় মা-মেয়ে হত্যার ঘাতক খুনি মেহেদী ও তার সহযোগীদের ফাঁসির দাবীতে মানববন্ধন
- চকরিয়ায় সেবা নিশ্চিতে তিনটি ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগ
- চকরিয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কাভার্ডভ্যান পুকুরে, চালক নিহত
- চকরিয়ায় প্রতিনিয়ত লোকালয়ে হানা দিচ্ছে বন্যহাতির পাল, আতঙ্কে স্থানীয় বাসিন্দারা
- খাদ্য সংকটে বনের হিংস্র হাতি এখন লোকালয়ে
- ৯ মাসের জন্য বন্ধ হচ্ছে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ
- চকরিয়া এডভোকেট এসোসিয়েশনের নির্বাচন সম্পন্ন
- চকরিয়ায় টিসিবির ডিলারশীপ নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগে দু’জনের বরাদ্দ স্থগিত
- চকরিয়া সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা সম্পন্ন
- কুতুবদিয়া উপজেলা প্রশাসনের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
- ঈদগাঁও উপজেলা বাপার সমন্বয় সভায় কমিটি গঠন
পাঠকের মতামত: