এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাবেক জাতীয় পরিষদের সদস্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের (মাইজঘোনা) কৃতিসন্তান বরণ্য রাজনীতিবিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আলহাজ্ব এস কে শামশুল হুদার ১৯তম মৃত্যু বার্ষিকী শনিবার (৬জুন) নানা অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে পালিত হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা চলাকালীন চকরিয়া মুক্তিযোদ্ধা সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মরহুম আলহাজ্ব এস কে শামশুল হুদার ১৯তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার জুহরের নামাজের পর সাহারবিল ইউনিয়নের শাহাপুরা পুরাতন জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে দোয়া মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মরহুমের দৌহিত্র নুর মোহাম্মদ শেরে গনির আয়োজন দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন চকরিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও মাতামুহুরী উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি মকছুদুল হক ছুট্টু, সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মাতামুহুরী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মহসিন বাবুল, আওয়ামী নেতা ইউছুফ, সাহারবিল ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান এনামুল হক এনাম, মরহুমের দৌহিত্র সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সিরাজুল গনী ছোটন, চকরিয়া পৌরসভা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল ফারুক লোটাস সহ স্থানীয় সমাজসর্দার মুরুব্বিবৃন্দ ও মরহুমের পরিবার সদস্য এবং আওয়ামীলীগ সহযোগি সংগঠনের বিভিন্নস্তরের নেতৃবৃন্দ।
প্রসঙ্গত: ২০০১ সালের ৬ ই জুন চট্টগ্রাম শহরের নিজ বাসভবন মৃত্যুবরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের (মাইজঘোনা) কৃতিসন্তান বরণ্য রাজনীতিবিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আলহাজ্ব এসে কে শামশুল হুদা।
মরহুম আলহাজ্ব এস কে শামশুল হুদার স্মৃতিচারণ করে চকরিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও মাতামুহুরী উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি মকছুদুল হক ছুট্টু বলেন, চকরিয়া-কক্সবাজার অঞ্চল তথা দক্ষিন চট্টগ্রামে হাতে-গোনা যে ক’জন মানুষ জনগনের কল্যাণে আদর্শ নির্ভর রাজনীতি করেছেন, সচেতন মহলের হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন, তাঁদেরই একজন হলেন মরহুম এস.কে. শামসুল হুদা। চকরিয়া উপজেলার শাহারবিল শাহ্পুরা গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নেয়া এ ক্ণজন্মা মানুষটি রাজনীতি নামক মহৎ শিল্প কর্মের খাতায় নাম লিখিয়েছিলেন ১৯৫০ সালে গণতন্ত্রের মানষপুত্র হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী হাত ধরে। ৫২’র ভাষা আন্দোলনের সময় ঠগবগে এই তরুণ সাতকানিয়া কলেজের ছাত্র হিসেবে মফস্বলে ভাষা আন্দোলনের স্বপক্ষে জনমত গঠনে অগ্রণী ভুমিকা পালন করেন।
ভাইস চেয়ারম্যান মকছুদুল হক ছুট্টু বলেন, দেশের কোন খ্যাতনামা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে এসকে সামসুল হুদার উচ্চতর কোন ডিগ্রী ছিলনা, অথচ রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক সর্ববিষয়ে তাঁর অগাধ জ্ঞান, কথা-বার্তার বাচন-ভঙ্গি সবই ছিল সর্বমহলে আকর্ষণীয়। ছাত্রত্ব শেষে মাতৃকূল চকরিয়ায় নেশার বশে রাজনীতি এবং পেশা হিসেবে বেচে নেন চট্টগ্রামে ঠিকাদারী।৬৬’র ৬ দফা এবং ৬৯’র ১১ দফায় বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্তভাবে কিছু রাজনৈতিক কর্মসূচী পালিত হলেও ৭০’র নির্বাচনের পুর্বে চকরিয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় আওয়ামীলীগের রাজনীতি এবং তিনি অর্জণ করেন- আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হওয়ার গৌরব। জন্মস্থান চকরিয়া, রাজনীতির মাঠ চকরিয়া-কক্সবাজার, কিন্তু আবাসস্থল চট্টগ্রামের দেওয়ান বাজার ডি.সি. রোড “জমিলা ম্যানসন”। তবে সপ্তাহে/১৫ দিনে চিরিঙ্গা বাটাখালীর ফুলতলার বাসায় আগমন ঘটতো রীতিমতো। সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবী পরিহিত দীর্ঘদেহী এ মানুষটি চট্টগ্রাম থেকে নিয়মিত গাড়ী চেপে চিরিঙ্গায় নামা মাত্রেই সর্ব বয়সের, সর্বদলের কিছু মানুষ আগ বাড়িয়ে তাঁর দিকে এগিয়ে যেতেন সালাম আর কুশর বিনিময়ের জন্য। এ ধরণের কয়েকজন পেলেই কোন কথা নেই, সোজা হেঁঠে চিরিঙ্গা গার্লস হাই স্কুল সড়ক ধরে দুলাল মার্কেটস্থ রাখাল মহাজনের দোকানে চলতো এক দফা চা-চক্র। এখানে ২০ মিনিট কিংবা আধাঘন্টা সময় কাটিয়ে সোজা পশ্চিম দিকে হাঁঠা শুরু করা মাত্রই ডানে-বামে সালাম, এ যেন কোন নেতাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণের অ-ঘোষিত আয়োজন।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আরও বলেন, জনতার কাতারে থাকা এসকে সামসুল হুদা চট্টগ্রাম থেকে চকরিয়া আসলে রিকসায় চড়ে ফুলতলার বাসায় গিয়েছেন এমন নজির খুব কম। তিনি স্বপ্ন দেখতেন চকরিয়া মাতামুহুরী মহা সেচ প্রকল্প, কক্সবাজার জেলার লবণ শিল্পের সমস্যা-সম্ভাবনা এবং ঊপকূলীয় অঞ্চলের ভাঙ্গন রোধ চকরিয়া-পেকুয়ার মানুষের জীবনকে সহজ করবে। বৃহত্তর চকরিয়া থানা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে কর্মকাল শুরুর পরের বছরই শুরু হয়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ এবং এই যুদ্ধে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সম্পৃক্ত করার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে তিনি চকরিয়ার মানুষকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান জানিয়েছিলেন। #
পাঠকের মতামত: