ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন গেল ‘এলসিটি কাজল’

ইমাম খাইর, কক্সবাজার ::
প্রশাসনের অনুমতির তোয়াক্কা না করে প্রায় ৭০০ জন পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন গেল এলসিটি কাজল নামে একটি পর্যটকবাহী জাহাজ।
মঙ্গলবার বেলা দুইটার দিকে জাহাজটি দ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা করে। ওই জাহাজে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৪০ জন ছাত্র ছিল বলে জানিয়েছেন টেকনাফ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রনয় চাকমা।
তিনি বলেন, প্রশাসনের কোন ধরণের অনুমতি ছাড়াই এলসিটি কাজল নামের জাহাজটি সেন্টমার্টিন যাওয়ার জন্য তৈরী হয়। যেখানে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৪০ জন শিক্ষার্থী ছিল। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এতগুলো শিক্ষার্থী অপেক্ষা করতে থাকতে দেখে অমানবিক মনে হয়েছে। তাদের বিষয়টি বিবেচনা করে জেলা প্রশাসক মৌখিক অনুমতি দেন। ২৯ নভেম্বর ফেরার কথা শিক্ষার্থীদের।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, সকাল থেকে টেকনাফের দমদমিয়া ঘাট থেকে পর্যটক নিয়ে যেতে চাইলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রনয় চাকমা বাধা দেন।
এর পর থেকে প্রায় ২ টা পর্যন্ত বসে থাকে পর্যটক ও জাহাজ। পরে পর্যটকরা হৈ-চৈ শুরু করে দিলে বাধার মুখে পড়ে জাহাজ কর্তৃপক্ষ। পরক্ষনে জাহাজ কর্তৃপক্ষ কক্সবাজার জেলা প্রশাসক বরাবর অনুমতির জন্য আবেদন করছে মর্মে বিকেলে সেন্টমার্টিনের উদ্যোশ্যে ছেড়ে দেয়। বিকেল সাড়ে ৫ টায় সেন্টমার্টিন পৌঁছে বলে জানা গেছে।
সুত্রে জানা গেছে-এ পর্যন্ত সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে কেয়ারী সিন্দাবাদ, কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইন ও বে ক্রুজ নামে তিনটি জাহাজকে অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু হঠাৎ এলসিটি কাজল ২৬ নভেম্বর ঘাটে ভিড়ে। একদিনের মাথায় কোন ধরনের অনুমতির কাগজপত্র ছাড়াই প্রায় ৭০০ জনের একটি গ্রুপ নিয়ে প্রবালদ্বীপে যায়।
প্রশাসনের অনুমোদন তোয়াক্কা না করে কিভাবে ঝুঁকি নিয়ে সেন্টমার্টিন গেল? তা সকলকে ভাবিয়ে তুলেছে স্থানীয়দের।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন-একটি ঝুঁকিপূর্ন জাহাজ যদি অনুমতি ছাড়া সেন্টমার্টিন গমন করে তাহলে পথিমধ্যে কোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে এর দ্বায়ভার কে নিবে?
এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসান বলেন, এলসিটি কাজল প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ধরনের অনুমতি নেয়নি। হঠাৎ মঙ্গলবার সকালে দমদমিয়া ঘাট থেকে প্রায় ৭০০ জন পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন যেতে চাইলে এ্যাসিল্যান্ড প্রনয় চাকমা ঘাটে গিয়ে জাহাজ না ছাড়তে নিষেধ করে চলে আসে। পরে শুনেছি বিকেলে সেই জাহাজ সেন্টমার্টিন গেছে। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনি ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।
উল্লেখ্য- গেল বছর অদক্ষ চালকের কারনে ‘এলসিটি কাজল’ বঙ্গোপসাগরে ডুবোচরে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী সাগরের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় আটকা পড়ে। ওই জাহাজে কমপক্ষে সাড়ে সাতশ’ পর্যটক ছিল যা ধারণ ক্ষমতার দুই গুণ বেশি।
স্থানীয়রা জানায়, ‘এলসিটি কাজল’ টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে চলাচলের যোগ্য নয়। তবুও প্রশাসন কিভাবে জাহাজটিকে চলাচলের অনুমতি দেয় তা বোধগম্য নয়।
এর আগেও গেলবছরের ৩ জানুয়ারী অতিরিক্ত যাত্রী বহন করায় সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফে ফেরার পথে পর্যটক নিয়ে মাঝপথে আটকা পড়েছিল পর্যটকবাহী জাহাজ ‘এলসিটি কাজল’।
এছাড়া এই জাহাজটি প্রায় এক হাজার যাত্রী নিয়ে বঙ্গোপসাগরের সন্দ্বীপ চ্যানেলে ‘এলসিটি কাজল’ বিআইডাব্লিউটিসি’র জাহাজ বিকল হয়ে যায়। জাহাজটি সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাট থেকে সীতাকুন্ডের কুমিরা ঘাটে আসছিলো।

পাঠকের মতামত: