পেকুয়া প্রতিনিধি :: কক্সবাজারের পেকুয়া থানায় মাদকসেবি এক পলাতক আসামিকে নিয়ে বৈঠকে বসলেন খোদ থানার ওসি! মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টায় পেকুয়া থানা ভবনের নিচ তলায় ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমানের সাথে পলাতক আসামির সাথে বৈঠকের ঘটনায় পেকুয়া উপজেলা জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সুত্র জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের হরিনাফাঁড়ি গ্রামের জহির আলমের ছেলে কবির হোসেন পেকুয়া থানার ওসির সাথে থানা ভবনের নিচ তলায় আলাপচারিতার বিষয়টি নজরে আসে।
জানা গেছে কবির হোসেনের বিরুদ্ধে পেকুয়া থানায় দায়েরকৃত জিআর ৪২/১৪ ইং মামলায় আদালত কর্তৃক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। এবং আদালতের পরোয়ানাটিও পেকুয়া থানায় রয়েছে। মামলার পর থেকে কবির হোসেন পেকুয়া থানা পুলিশের কাছে পলাতক আসামি। দীর্ঘদিন ধরে ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট থাকলেও পেকুয়া থানার ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমানের সাথে সখ্যতা থাকায় পুলিশের নাকের ডগায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
এনিয়ে সচেতন মহলে পুলিশের এহেন ভুমিকায় চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কবির হোসেনের মা গোলবাহার কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, গত ১৮ এপ্রিল তার মাদকাসক্ত ছেলে কবির হোসেন ও আলী হোসেন তাকে ব্যাপক মারধর করে ঘর থেকে তাড়িয়ে দেয়। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় তিনি ওই দুই কুলাঙ্গার পুত্রের বিরুদ্ধে পেকুয়া থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির ইশারায় পেকুয়া থানা পুলিশ তার এজাহারটি গত চার দিনেও মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেননি।
তিনি আরো জানান, তারা দুই ভাই দীর্ঘদিন ধরে আমাকে শারীরিক ও মানসিক অত্যচার ও নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের অত্যচারে আমি অতিষ্ট হয়ে পড়েছি। তার ছেলে কবিরের বিরুদ্ধে দুইটি মামলার ওয়ারেন্ট থাকলেও ওসি তদন্তের সাথে নিয়মিত ওঠাবসা করে। কবির হোসেন ও আলী হোসেন মাদকসেবি। তারা আমাকে কয়েকদফা পিটিয়ে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। বাড়ি ফিরলে তারা আমাকে হত্যা করবে বলে প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে। তাদের এহেন হুমকিতে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।তিনি এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
পেকুয়া থানার ওসির সাথে পলাতক আসামির বৈঠকের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে চকরিয়া-পেকুয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মতিউল ইসলাম বলেন তিনি এখন কি থানার ভিতরে আছেন? আমি বিষয়টি দেখছি।
এ প্রসঙ্গে পেকুয়া থানার ওসি কামরুল আজম জানায়, পলাতক আসামির সাথে বৈঠক হয়নি। কবির হোসেনকে আমি চিনিনা। আলী হোসেনকে থানায় ডেকে এনে তার মাকে জিম্মায় দিয়েছি। ওয়ারেন্ট থাকলে অবশ্যই খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কবির হোসেন মাদকসেবি বলে আমার কাছে তথ্য আছে। আমি তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিব।
পাঠকের মতামত: