এম দিদারুল করিম :: কক্সবাজারের পেকুয়ায় দুর্বৃেেত্তর দেওয়া আগুনে পুড়ে গেল দুই সহোদরের বসতবাড়িসহ ৬টি দোকান। শনিবার (১৩মার্চ) দিনগত রাত ৩ টার দিকে উপজেলার পেকুয়া ইউনিয়নের বটতলীয়া পাড়া এলাকায় এ অগ্নিকান্ডের ঘটে। খবর পেয়ে পেকুয়া ফয়ার সার্ভিস স্টেশনের দমকল বাহিনির সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। সকালে সদর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মাহবুবুল করিম, পেকুয়া থানার এস আই আব্দুল হকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ও স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল হক সাদ্দাম অগ্নিকান্ডে ভস্মীভূত স্থান পরিদর্শন করেছেন।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানায়, বটতলীয়া পাড়া এলাকার মৃত মোজাহের আহমদের ছেলে সিএনজি চালক রেজাউল করিম ও ইকবাল হোসেনের বাড়িতে একদল দূর্বৃত্ত আগুন দেয় । এসময় মুহুর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা চর্তুদিকে ছড়িয়ে পাশ^বর্তী ৬টি দোকান পুড়ে যাই। ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে মৃত আলী আহমদের ছেলে নুরুল আবছারের মুদির দোকান, নেজাম উদ্দিনের ছেলে মোঃ মানিকের চায়ের দোকান, নওশা মিয়ার ছেলে আজগর হোসেনের চায়ের দোকান, মাষ্টার নুরুল আলমের ছেলে শামশুল আলমের ওষুধের দোকান, আমিরুজ্জানের ছেলে মুজিবুর রহমানের দর্জির (টেইলার্স) দোকান ও বাচা মিয়ার ছেলে নাজিম উদ্দিনের চায়ের দোকান সম্পুর্ন পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তাদের কাছে রক্ষিত নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও দামি আসবাবপত্রসহ প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আগুনে পাশ^বর্তী কোরবানের আলীর ছেলে শাহেদুল ইসলামের বসত ঘরের আংশিক পুড়ে যায়।
বাড়ির মালিক রেজাউল করিম বলেন, ঘটনার দিন আমারা পরিবারের লোকজন ১০ টার দিকে আমরা খাওয়া দাওয়া শেষ করে ঘুমাতে যাই। রাত আনুমানিক ২টা ৩০ মিনিটের সময় আমার মা ঘুম থেকে জেগে উঠে বাহিরে দেখতে পায় বাড়ির দক্ষিণ দিকে রাস্তার পাশে^ একটি দোকানে আগুন লেগেছে। মায়ের চিৎকারে আমরা ঘর থেকে বের হয়ে দেখতে পাই আমার বাড়ির উত্তর পাশে^ একই ভাবে আগুনের লেলিহান শিখা চার দিকে ছড়িয়ে পড়ছে। বাড়ির লোকজনসহ প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে আগুন নিবানোর চেষ্টা করে।
বাড়ির অপর মালিক ইকবাল হোসেন বলেন, কিছু বুঝে উঠার আগেই দেখতে পাই আগুন। তবে আগুন ধরেছে ঘরের উত্তর পাশের্^ ছাউনির উপরে। এতে আমি চিৎকার করতে থাকি। পরে বাড়ির সবাই এগিয়ে এসে আগুন নিভানোর চেষ্টা চালায়। আমাদের ধারণা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে নাশকতার পরিকল্পনায় দুবৃর্ত্তরা দাহ্য পদার্থ ছোঁড়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। আগুনের তীব্র লেলিহান শিখায় বসতবাড়ি পুঁড়ে ছাই হয়ে যায়।
খবর পেয়ে পেকুয়ার সিভিল ডিফেন্স ও ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দমকল বাহিনি সেখানে পৌঁছেন। তবে দমকল বাহিনির সদস্য পৌছানোর পূর্বেই বসতবাড়িটি সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়। এতে করে বসতবাড়ি ও দোকান মালিকের প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি গ্রস্থদের মধ্যে অনেকে বলেন এটি পূর্বপরিকল্পিত আগুনে সব কিছু জ¦লসে দিয়েছে। ইলেট্টনিক্স পণ্য, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা, আসবাবপত্র, তৈজসপত্র, কাপড় চোপড়, মূল্যবান কাগজপত্র, দলিল পত্র আগুনে পুঁড়ে ছাই হয়ে যায়।
রাজাখালী ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুল করিম বলেন, ধারণা করা হচ্ছে কে বা কারা এ আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। এটি জগন্য অপরাধ। অপরাধী যে হোক তাঁদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।
পেকুয়া সিভিল ডিফেন্স ও ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) উত্তম কুমার বেনার্জী জানান, পেকুয়া সদরের গোঁয়াখালী ১নং ওয়ার্ডের বটতলীয়া পাড়া এলাকায় মৃত মোজার আহমদের ছেলে সিএনজি চালক রেজাউলের বাড়িতে আগুন ধরে। খবর পেয়ে দমকল বাহিনির সদস্যদের নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। একঘন্টা ১০ মিনিট পর আগুন নিয়ন্ত্রে আনতে সক্ষম হই। তবে আগুনের সুত্রপাত এখনো নিশ্চিত করা যায়নি।
পাঠকের মতামত: