এস এম জুবাইদ, পেকুয়া :: কক্সবাজারের পেকুয়ায় আওয়ামীলীগ, যুবলীগসহ সাংবাদিক মুহাম্মদ হাসেমের পরিবারের পাঁচ সদস্যদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৭ আগস্ট) বিকেল ৪টায় কলেজ গেইট চৌমুহনীতে এ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী পরিবার ও সর্বস্থরের জনসাধারণের ব্যানারে মিছিলটি প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন পেকুয়ার কার্যালয়ের সামনে এক প্রতিবাদ সভায় মিলিত হয়।
এ সময় বক্তারা বলেন,সম্প্রতি মাছ লুটকে কেন্দ্র করে মগনামার চেয়ারম্যান ওয়াসিমের অনুসারী ও মুহুরীপাড়া গ্রামবাসিরা মুখেমুখি অবস্থান নিয়েছিল। পুলিশের ভুমিকা ছিল চেয়ারম্যানের পক্ষে। থানায় পৃথক দুইটি মামলা হয়েছে। মামলায় আওয়ামীলীগ, যুবলীগসহ দলীয় নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে। পুলিশের ভুমিকা থাকবে নিরপেক্ষ। কিন্তু পুলিশ একপেশি আচরন করছে। আসামি ধরার নামে রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ভাংচুর করা হচ্ছে।
উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক হাসেমের স্কুল-কলেজ পড়ুয়া দুই ছেলেকে দুইটি মামলায় আসামি করা হয়েছে। অথচ তারা ছিলেন চট্টগ্রাম শহরে। ঢাকায় থেকে আসামি হয়েছে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মমতাজুল ইসলাম। এরপরেও তারা মামলার আসামি। এসব কিসের লক্ষন প্রশ্ন রাখেন বক্তরা। পুলিশের ধরপাকড়ের ভয়ে পুরুষশুন্য মুহুরীপাড়া গ্রাম। দলীয় নেতাকর্মীদের হয়রানি বন্ধসহ মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবী জানান তাঁরা।
জানাগেছে, গত ২৪ আগষ্ট সকালে মগনামায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মমতাজুল ইসলাম ও মগনামা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো.রোকনের মালিকানাধীন ব্যাঙখোয়াল ঘোনা থেকে মাছ লুটের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিমের ছোট ভাই এনায়েত উল্লাহ, মামাতো ভাই আরাফাতকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখমের ঘটনায় উত্তপ্ত হয় মগনামা। এদিন তারা মোটর সাইকেল যোগে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে হামলার শিকার হন।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়,পুলিশ ওয়াসিম চেয়ারম্যানের অনুসারী স্বশস্ত্র লোকজন নিয়ে মুহুরীপাড়া গ্রামে অভিযানে গেলে গ্রামবাসির সাথে চেয়ারম্যান অনুসারীদের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়। মুহরীপাড়া ষ্টেশনের ব্যবসায়ী নাছির উদ্দিন বাদশাহ ও আওয়ামীলীগ নেতা নাজেম উদ্দিনকে চেয়ারম্যানের লোকজন মারধর করে তুলে নেয়ার চেষ্টা করে। পরে শতশত নারী পুরুষ গ্রামবাসিদের সাথে তাদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। পুলিশ নাজেম উদ্দিনকে আটক করে। তবে তিনি জামিনে মুক্ত হয়েছেন। সৃষ্ট ঘটনায় আসামি ছিনতাই পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারী কাজে বাধা অভিযোগ তুলে পুলিশ বাদি হয়ে ১২৩ জনের বিরুদ্ধে ও চেয়ারম্যানের ছোট ভাই বাদি হয়ে ১৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১২ ও ১৩/২১।
মমতাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের চিংড়িঘের থেকে চেয়ারম্যানের ক্যাডাররা মাছ লুট করে নিয়ে যায়। ঢাকায় থেকেও আমি দুইটি মামলার ১নং আসামি। এসব বিএনপি নেতা ওয়াসিম চেয়ারম্যানের কাজ। আইনিভাবে মোকাবেলা করবো।
মোজাম্মেল বলেন,একের পর এক মামলা দিচ্ছে আমাদের পরিবারের লোকজনের ওপর।আমি আনসার সদস্য। সম্প্রতি দুইটি মামলায় আমাকে আসামি করেছে। ওয়াসিম চেয়ারম্যানের হুকুমে তার ক্যাডাররা আমার বাড়িতে তান্ডব চালায়। পিটিয়ে আমার দুই বোনকে আহত করে। বড় ভাই মকছুদকে জয়নাল হত্যা মামলায় আসামি করে।
সাংবাদিক মুহাম্মদ হাসেম বলেন, দুই ছেলেকে পৃথক দুটি মামলায় আসামি করেছে। স্ত্রী,ছোট ভাই ও ভগ্নিপতিও বাদ যায়নি মামলা থেকে।ছেলেরা চট্টগ্রাম থেকেও আসামি হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে মগনামার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে লেখালেখি করায় পুলিশ ক্ষুব্ধ হয়ে ও ওয়াসিম চেয়ারম্যানের টাকায় আমার পরিবারের ওপর ষ্ট্রীম রোলার চালাচ্ছে।
মগনামা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো.রোকন বলেন, পুলিশের মামলায় আমার স্ত্রীকে আর ওয়াসিমের ভাইয়ের মামলায় আমাকে আসামি করেছে। পুলিশ ওয়াসিমের ক্যাডারদের সাথে নিয়ে রাতে বাড়িঘরে গিয়ে ভাংচুর চালাচ্ছে। মাছ লুট করেছে আমাদের প্রজেক্ট থেকে। পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হলেও অবস্থান নিয়েছে ওয়াসিম চেয়ারম্যানে পক্ষে। টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছে পুলিশ।
পাঠকের মতামত: