ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় ‘ইজারাবিহীন’ রাজাখালী আরবশাহ বাজারে হাসিল আদায় চলছে!

মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া ::  কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলায় ইজারাছাড়া একটি বড় বাজার চলায় সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, উপজলার রাজস্ব ফান্ডও আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নে অবস্থিত আরবশাহ

বাজারটি বিগত দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে ইজারাবহির্ভূত থাকায় প্রতি বছর সরকার রাজস্ব হারালেও এ নিয়ে কোন ধরনের মাথা ব্যথা নেই সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের! আরবশাহ বাজার কেন্দ্রীক একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে প্রতি সপ্তাহে দুই দিন হাসিলের নামে হাতিয়ে নেয় টাকা। আর এসব টাকা সরকারী কোষাগারে জমা হচ্ছেনা। বাজার কেন্দ্রীক গড়ে উঠা সিন্ডিকেট বছরের পর বছর লুটেপাটে খাচ্ছে বাজার থেকে উত্তোলিত হাসিলের টাকা! পেকুয়া উপজেলার সবচেয়ে বড় এই বাজারটি সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের বিধিমতো ইজারা বা খাস কালেকশনের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় করার দাবি উঠেছে স্থানীয় জনগণ, সামাজিক সংগঠন ও ব্যবসায়ীদের মাঝে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী আরবশাহ বাজার দীর্ঘদিন ধরে সরকারী ইজারাবিহীন থাকলেও সপ্তাহের প্রতি হাটবার বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে হাসিল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হচ্ছে। সরকারী কোষাগারে বাজার থেকে উত্তোলিত হাসিলের টাকা জমা দেওয়া হচ্ছেনা। বছরের পর বছর এভাবে চলছে এ বাজারটি।  সরকারী কোন দফতরেরই নিয়ন্ত্রন নেই এ বাজারে। স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট নিজেদের ‘খেয়াল খুশিমতো’ মতো বাজার পরিচালনা কমিটি গঠন করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন।  এ নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কোন মাথা ব্যথা ও নেই।

অন্যদিকে বাজারটি সরকারী ইজারা বহির্ভূত হওয়ায় প্রতি বছর সরকার হারাচ্ছে মোটা অংকের রাজস্ব! বহু বছর পূূর্বে আদালতে মামলা দায়ের করে রাজাখালী আরব শাহ বাজারের ইজারা বন্ধ করে রেখে কৌশলে ওই সিন্ডিকেট নিজেরা কমিটি গঠন করে প্রতি সপ্তাহে দুই দিন (হাটের দিন) ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে হাসিল উত্তোলন করে।

বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানায়, স্থানীয় একটি মাদ্রাসার এক শিক্ষক বাজার কমিটির স্বঘোষিত সভাপতি দাবি করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন।

ওই শিক্ষকের সাথে আরো কয়েকজন প্রভাবশালীও জড়িত রয়েছে। ফলে শক্তিশালী ওই বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে স্থানীয় কেউ কথা বলতে পারেনা।

জানা যায়, রাজাখালী আরব শাহ বাজারে প্রতি সপ্তাহে দুই দিন হাট বসে। দূর-দূরান্ত থেকে বহু ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী পণ্য বেচাকেনার জন্য বাজারে আসে। এছাড়াও বাজারে প্রায় তিন শতাধিক স্থায়ী দোকান পাট ও রয়েছে। বাজারে একাধিক সমিল ও কাঠ বেচা কেনার দোকান রয়েছে।  রাজাখালী আরবশাহ বাজারে সরকারী খাস জায়গাও রয়েছে। এসব জায়গায় বিভিন্ন ব্যক্তি জবর দখল করে অবৈধভাবে দোকান তৈরী করে দীর্ঘদিন ধরে ভোগ দখলে রয়েছে। ভৌগলিক কারণে উক্ত বাজারটি পেকুয়া উপজেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র।

বাজারটির নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস। বাজারটির খাস কালেকশন বা ইজারা রয়েছে কিনা জানতে সম্প্রতি সরাসরি যোগাযোগ করা বারবাকিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার মো: হেলাল উদ্দিনের সাথে। এ কর্মকার্ত বলেন, রাজাখালী আরবশাহ বাজারের কোন ইজারা নেই। সম্ভবত মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারনে ইজারা বন্ধ রয়েছে। ইজারা বন্ধ থাকা অবস্থায় কোন ব্যক্তি বিশেষ হাসিল উত্তোলন করতে পারেনা। খাস কালেকশন করলে ইউনিয়ন ভূমি অফিসই লোক নিয়োগ করে করবে।

এ কর্মকার্তা বলেন, বারবাকিয়া ভূমি অফিসে তিনি নতুন যোগদান করেছেন। বাজার সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ খবর নিয়ে তিনি বাজারটি খাস কালেকশনের আওতায় আনার চেষ্টা করবেন।

পাঠকের মতামত: