ঢাকা,রোববার, ১০ নভেম্বর ২০২৪

পারিবারিক ব্যবসা ইয়াবা!

আলী আজম ::       পুলিশ তাদের কাছ থেকে জানতে পারে, মা মনোয়াবা বেগমের কাছ থেকেই ইয়াবা বিক্রির  হাতেখড়ি নেয় ছেলে সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। ছোট বেলা থেকে মায়ের ইয়াবা ব্যবসা পর্যবেক্ষণ করেন। একটু বড় হলেই খাওয়া শুরু করেন ইয়াবা। ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়ায় ছাত্রত্ব শেষ। কিন্তু লেখাপড়ায় না এগোলেও মায়ের পথ ইয়াবা ব্যবসায় বেশ দূরে এগিয়েছেন মাহবুবুর। এ ব্যবসায় তার স্ত্রী সৈয়দা সুমাইয়া ইসলাম নয়নকেও জড়িয়েছেন। স্বামী-স্ত্রী মিলে আলাদা বাসা নিয়ে দেদার ইয়াবা ব্যবসা করছেন। গত সোমবার রাতে রাজধানীর আদাবরের নবোদয় হাউজিং সোসাইটির ৬/এ নম্বর রোডের ১৭ নম্বর বাড়ির ৫ম তলা থেকে ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি)। তাদের কাছ থেকে ১৪ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যে মোহাম্মদপুরের জাফরাবাদ এলাকার ৩২৮ নম্বর বাড়ির দ্বিতীয় তলায় অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে আরও ১৪ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ জহিরুল ইসলাম বাবুকে গ্রেফতার করা হয়। ডিএনসির ঢাকা বিভাগীয় গোয়েন্দা কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক ফজলুল হক খান জানান, মাহবুবুর ও নয়ন দম্পতিকে গ্রেফতারের আগে আদাবরে তাদের ওই বাসায় অভিযান চালানো হয়। কিন্তু তাদের পাওয়া যায়নি। পরে ওই বাসা থেকে ইয়াবা বিক্রির ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৫০০ টাকা এবং ইয়াবা বিক্রির বিভিন্ন উপকরণ জব্দ করা হয়। নয়ন বিবিএ পাস করে স্বামীর সঙ্গে এ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। ওই দম্পতির গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর থানার বড়পিপদিয়ায়। গ্রেফতার বাবুর গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের টেকনাফ থানার চৌধুরীপাড়ায়। ২০১২ সালের বিয়ে করার পর এ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় এসে কলাবাগান এলাকায় উঠলেও মোহাম্মদপুরের ওই বাসায় অনেক বছর ধরে আছেন। বর্তমানে সে প্রতি সপ্তাহে ১০ হাজার পিস ইয়াবা টেকনাফ থেকে ঢাকা এনে বিক্রি করছিল। অল্প বয়সে ইয়াবা ব্যবসায় বেশ আধিপত্য স্থাপন করেছেন বাবু। এর আগে, ২০১৭ সালের ১০ জুলাই ৪৪ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড থেকে মাহবুবুরের মা মনোয়ারা বেগম, তার বোন আসমা আহমেদ ডালিয়া ও ডালিয়ার স্বামী রবিউল ইসলামকে গ্রেফতার করে ডিএনসি। এ ব্যবসায় মাহবুবুরের বোন স্বপ্না আক্তারও জড়িত। ওই সময়ই স্বপ্না, তার স্বামী শামিম আহমেদ ও মাহবুবুরের ফুফু মাহমুদা রানীকে গ্রেফতার করে ডিএনসি। ডিএনসির ওই কর্মকর্তা বলছেন, মূলত তারা কোটিপতি ইয়াবা ব্যবসায়ী পরিবার। ঢাকায় রয়েছে তাদের একাধিক ফ্ল্যাট, দামি গাড়ি, রয়েছে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা। মালয়েশিয়ার রয়েছে তাদের সেকেন্ড হোম। মাহবুবুরের বাবা পুলিশে চাকরি করতেন। এক সময় টানাপড়েনের সংসার থাকলেও ইয়াবা ব্যবসা তাদের কাছে রীতিমতো আলাদিনের চেরাগ।

পাঠকের মতামত: