বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে করা নাইকো দুর্নীতি মামলা তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
মওদুদ আহমদের আবেদনের শুনানিতে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চ আজ বুধবার এই আদেশ দেন। আদালতে মওদুদের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান।
ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন সাংবাদিকদের জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের নাইকো দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ফলে বেগম খালেদা জিয়া ও মওদুদ আহমদের নাইকো দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম আপতত চলবে না।
পরে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের এই আদেশের ফলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদসহ আসামিদের বিরুদ্ধে নাইকো মামলার পুরো কার্যক্রমই তিন মাসের জন্য স্থগিত হয়ে গেল। তাই বেগম খালেদা জিয়াসহ অন্যদের মামলাও এই সময়ে স্থগিত থাকবে। তবে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান সাংবাদিকদের জানান, শুধু মওদুদ আহমদের ক্ষেত্রে নাইকো দুনীর্তি মামলা ৩ মাস স্থগিত থাকবে।
নাইকোর সঙ্গে পেট্রো বাংলা ও বাপেক্সের সঙ্গে চুক্তি সংক্রান্ত বিষয়ে একটি মামলা আন্তর্জাতিক সালিশী আদালতে নিষ্পন্নাধীন থাকায় আদালত এই আদেশ দেন। সালিশি আদালতের সিদ্ধান্তের পর এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
গত ১২ এপ্রিল বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মওদুদের মামলার স্থগিতাদেশের বিষয়ে জারি করা রুল খারিজ করে দেন। এর ফলে এই মামলার বিচারিক আদালতে চলতে বাধা কেটেছে বলে জানিয়েছিলেন আইনজীবীরা। এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন মওদুদ আহমদ।
হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে পরে আপিলে যান মওদুদ। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৩ এপ্রিল চেম্বার বিচারপতি রায় স্থগিত করে ৭ মে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন। এরপর মামলার কার্যক্রমের উপর স্থগিতাদেশ দেন আপিল বিভাগ।
জানা যায়, কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন। ২০০৮ সালের ৫ মে এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। যেখানে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্স্’র সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
পাঠকের মতামত: