জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাশেদুল হক রাসেলের সাথে তৃণমূল নেতাকর্মীদের সৌজন্য সাক্ষাত।
বিশেষ প্রতিবেদক ::::
কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণার পর থেকে উজ্জীবিত হয়ে ওঠছে তৃনমূল। ছাত্র দলকে আরো বেশী সুসংগঠিত করতে চায় নতুন কমিটির নেতারা। কমিটি ঘোষণার পর থেকে কিছু বিতর্ক ওঠলেও তা আমলেই নিচ্ছেনা নেতারা। পেছনে যাওয়ার সময় নেই। তারা সাহস-শক্তি সঞ্চয় করছে এগিয়ে যাওয়ার।
এদিকে কমিটি ঘোষণার পর থেকে বিতর্ক পিছু ছাড়ছেনা ছাত্রদলের। ইতিমধ্যে জেলা কমিটি থেকে ২০ জনের অধিক নেতা পদত্যাগ করেছেন। আরো অনেকে পদত্যাগের প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে, পদত্যাগ গঠনতান্ত্রিক নয় বলে দাবী ছাত্রদল নেতাদের। ‘অযথা’ বিতর্ককারীদের কথায় কান না দিয়ে অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে চায় শহীদ জিয়ার সেনারা।
সুত্র মতে, গত ২৪ অক্টোবর জেলা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষিত হয়। রাশেদুল হক রাসেল ও মনির উদ্দিন মনিরের নেতৃত্বাধীন কমিটিতে মেধাবী নেতৃত্বের পাশাপাশি বিগত আন্দোলন সংগ্রামের কর্মীদের মূল্যায়ন করা হয়েছে বেশী। পুরাতন নেতৃত্বের পাশাপাশি নতুনভাবে ওঠে আসা তৃণমূলের কর্মীদের স্থান দেয়া হয়েছে। শহরকেন্দ্রীক নেতৃত্বের সাথে পাল্লা দিয়ে গ্রামের নেতৃত্ব তুলে আনার চেষ্টা করা হয়েছে কমিটিতে। ছোটখাট কয়েকটি বিতর্ক থাকলেও জেলা ছাত্রদলের ৪২৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি বিগত যেকোন সময়ের তুলনায় অনেক বেশী শক্তিশালী ও মানসম্মত মনে করছেন দলীয় নেতারা।
ছাত্রদল নেতাদের মতে, একযুগেরও বেশী সময় ধরে জেলা ছাত্রদলের কমিটি না হওয়াতে নেতৃত্বে জট তৈরী হয়। সঠিক সময়ে কাউন্সিল হতে না পারায় অনেক বেগ পেতে হয়েছে ছাত্রদলকে। ওঠে আসার সুযোগ হয়নি নতুন নেতৃত্বের। রাসেল-মনির এর নেতৃত্বে কমিটি সেই জটলা কেটে জেলা ছাত্রদলে নতুন ভীত রচিত হবে-এমনটাই প্রত্যাশা তৃণমূলের।
জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আবদুল্লাহ খান জানান, কমিটি ঘোষণার পর থেকে ছাত্রদলের তৃণমূলে নতুনভাবে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। নতুন কমিটিতে মেধাবী ও তৃণমূল নেতৃত্ব প্রাধান্য পেয়েছে। সুযোগ সন্ধানীদের স্থান না হলেও মূল্যায়িত হয়েছে মাঠের কর্মীরা।
আবদুল হামিদ খান নামের ছাত্রদলের এক নেতার দাবী, জেলা কমিটি গঠনে সভাপতি-সম্পাদক যথেষ্ট বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন। মেধা নির্ভর ছাত্র নেতৃত্ব তুলে আনতে তাদের আন্তরিকতার কোন ঘাটতি ছিলনা।
জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মনির উদ্দিন মনির বলেন, শহীদ জিয়ার আদর্শ ও বেগম জিয়ার নির্দেশনায় ছাত্রদল পরিচালিত হয়। দলীয় আদর্শ ও নীতিমালার বাইরে গিয়ে ছাত্রদল করার সুযোগ নেই। যোগ্যতা সম্পন্ন ও মেধাবীদের নিয়েই জেলা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছে। মাঠের কর্মীদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়েছে। আগামীতেও নেতৃত্বের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, যারা কমিটি নিয়ে বিতর্ক তৈরীর চেষ্টা করছেন যাচাই বাছাই করে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলের ভেতরে বিভেদ সৃষ্টিকারীদের ছাড় দেওয়া হবেনা।
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাশেদুল হক রাসেল জানান, দলের দুঃসময়ের কান্ডারীদের নিয়েই গঠিত হয়েছে জেলা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। কমিটিতে নতুন-পুরাতন সমন্বয় করা হয়েছে। স্থান পেয়েছে মেধাবী ও নিয়মিত ছাত্ররাই। প্রশ্নবিদ্ধ ও সুযোগ সন্ধানী প্রকৃতির কাউকে কমিটিতে পদ দেওয়া হয়নি। ইউনিয়ন কিংবা ওয়ার্ড পর্যায় থেকেও আমরা নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে চেয়েছি। দলের সিনিয়র নেতাদের সাথে পরামর্শ করেই কমিটির কাঠামো ঠিক করা হয়েছে। কারো ব্যক্তিগত মতামত প্রাধান্য দেয়া হয়নি। দলীয় আদর্শ ও কর্মতৎপরতাই মূখ্য হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা বিদায় নিলেও যেন ছাত্রদল নেতৃত্ব সঙ্কটে না পড়ে সেজন্য মেধাবী ও তরুন নেতৃত্ব তুলে আনতে কাজ করছি। সেক্ষেত্রে আমরা অনেকটা সফলও হয়েছি। দু’য়েকটি বিতর্ক থাকলেও সেগুলো কেটে যাবে।
তার মতে, যোগ্য নেতৃত্বের জেলা কমিটি অনেক দূর এগিয়ে যাবে। আওয়ামী দুঃশাসন বিরোধী আগামীর আন্দোলনে বর্তমান কমিটির একেকজন নেতা একেকটি শক্তি।
গত ২৪ অক্টোবর ৪২৫ সদস্য বিশিষ্ট জেলা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেন দলের বর্তমান সভাপতি রাজিব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আকরামুল হাসান।
এদিকে ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্ব ঘোষণার পর থেকে সভাপতি রাশেদুল হক রাসেল এর বাস ভবনে প্রচুর ভীড় জমাচ্ছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। জেলা কমিটিতে স্থান পাওয়া নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন ইউনিট কমিটির নেতারাও যাচ্ছেন শুভেচ্ছা জানাতে। কুশল বিনিময় করছেন তাদের প্রিয় নেতার সাথে।
গত কয়েক দিনের সৌজন্য সাক্ষাতে দলীয় নেতাকর্মীরা জেলা সভাপতি রাশেদুল হক রাসেলের যোগ্য নেতৃত্বকে স্বাগত জানায়। তারা আগামীতে দলের যেকোন সিদ্ধান্তে সাথে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
ধারাবাহিক সাক্ষাতের অংশ হিসেবে শনিবার (২৯ অক্টোবর) জেলা সভাপতির বাসভবনে গিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন শহরের বৃহত্তর পাহাড়তলী ও বৃহত্তর তারাবনিয়ারছরা এলাকার তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
এদের মধ্যে ছিলেন জেলা কমিটির সহ-সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন, জিল্লুর রহমান, যুগ্ম-সম্পাদক শামসুল আলম, জাহেদুল হক, মুজিবুর রহমান রুমান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল আলম রানা, ইজতেহাদুল হক মাসুম, প্রচার সম্পাদক আশরাফ ইমরান, সাংস্কৃতিক সম্পাদক একরামুল হক, আইন বিষয়ক সম্পাদক রেজাউল হক, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আবদুল্লাহ খান, পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, সহ-প্রচার সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন, সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. ফায়েজ, সহ-ক্রিড়া সম্পাদক নুর হোসেন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মনজুর আলম, জেলা সদস্য ওসমান সরওয়ার, মো. বাদশা মিয়া, জিয়াউদ্দিন বাবলু, নাজিম উদ্দিন, ইফতেখার আলম সামি, ইরফানুর রহমান, আরফাত আলম রনি, শহিদুল আলম, ওমর ফারুক, মো. সালাহ উদ্দিন, নুরুল আজাদ, মো. ইমরান।
তৃণমূল ছাত্রনেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মো. পারভেজ, নুর উদ্দিন, মো. সাগর, মো. আরাফাত, মো. ইউছুপ, মো. ইউনুছ, ইমাম হোসেন, রিয়াজুল ইসলাম রিয়াদ, মো. শহিদুল্লাহ প্রমুখ।
এ সময় দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে জেলা সভাপতি রাশেদুল হক রাসেল বলেন, ছাত্রদল তার আপন গতিতেই চলবে। শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিকদের বিরুদ্ধে অতীতে ষড়যন্ত্র হয়েছে। কোন ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। আগামীতেও কোন ষড়যন্ত্র সফল হবেনা।
এ সময় তিনি অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে ছাত্রদল নেতাদের আরো বেশী সুসংহত হওয়ার আহবান জানান।
পাঠকের মতামত: