চকরিয়ার এক কিশোরী মাদ্রাসা ছাত্রীকে অপহরন করে নয় মাস ধরে ধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে এক হিন্দু যুবকের বিরোদ্ধে। দীর্ঘ নয় মাস পর কাঞ্চন দাস নামের ওই প্রতারক অপহরনকারীকে আটক করে ৩দিন ধরে বেঁধে রেখেছে এলাকাবাসী। চকরিয়া উপজেলার ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের দক্ষিন ঘুনিয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনা কে কেন্দ্র করে মুসলিম-হিন্দু সংঘর্ষের ও আশংকা দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে জানাযায়, চকরিয়া চিরিঙ্গা শহরে লাভা ভিডিও এন্ড মিকচার সেন্টার নামের একটি ভিডিও এডিটিং এর দোকান রয়েছে। ভিডিও মিক্চার সেন্টারে চাকুরী করতো কক্সবাজার সদরের খুরুস্কুল দক্ষিণ হিন্দু পাড়ার বাসিন্দা কাজল কান্তি দে” র পুত্র ক্যামরাম্যান কাঞ্চন কান্তি দে। প্রায় ৪ বছর ধরে সে এ দোকানে চাকুরি করে আসায় দোকানের মালিক হোসনের বিশ্বস্থও ছিল কাঞ্চন। ঘটনার ৪/৫মাস আগে একটি বিয়ের অনুষ্টানের ভিডিও করতে চকরিয়া উপজেলার ফাসিয়াখালী দক্ষিন ঘুনিয়ায় যায় কাঞ্চন। ওই সময় ওই এলাকার মাদ্রাসা পডুয়া কন্যা সুমা আক্তার (১৬)এর সাথে পরিচয় হয়। পরিচয় সুত্রে কাঞ্চন নিজেকে মুসলিম পরিচয় দিয়ে সুমার সাথে প্রায়শ মোবাইলে কথা বলতো। বিগত ২০১৬ইং সালের মাঝামাঝি সময়ের কোরবানের দিন। সুমাদের বাড়ীতে কোরবানের দাওয়াত খাওয়ার বায়না ধরে কাঞ্চন। সুমা কাঞ্চনকে তার বন্ধুদের নিয়ে রাতে খেতে তার বাড়ীতে আমন্ত্রন জানায়। এ সুযোগে কোরবানের রাত ৮টার দিকে কাঞ্চন চকরিয়ার সওদাগরঘোনা এলাকার বন্ধু মোহাং মানিক সহ ৩/৪ জন একটি সিএনজি টেক্সী নিয়ে সুমার বাড়ীর কাছাকাছি রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে সুমাকে বাইরে রাস্তায় আসতে বলে। সুমা রাস্তায় এগিয়ে এসে কাঞ্চনদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করতেই সবাই সুমাকে ধরে জোর করে গাড়ীতে তুলে নেয়। গাড়ীতে তুলে সুমাকে নিয়ে সেই যে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় তার কোন খোঁজ আর গত নয় ও মাসে মিলেনি। সুমার পিতা জানায়, কে কোথায় নিয়ে গেছে বা কার সাথে গেছে দীর্ঘ নয় মাসে ও না পাওয়ায় এক প্রকার হতাশ হয়ে পড়েছিলেন তার পরিবার। গত কিছুদিন আগে হঠাৎ অজ্ঞাতনামা একটি মোবাইলের সুত্র ধরে কাঞ্চনের উপর সন্দেহ হয় তাদের। শুক্কুর নামের সুমার ভগ্নিপতি মোবাইলের মাধ্যমে কাঞ্চনকে একটি বিয়ের ভিডিও র অর্ডারের কথা বলে ডেকে করাইয়া ঘোনার এক বাড়িতে নিয়ে যায়। একটি বাড়িতে আটকিয়ে মারধরের চেষ্টা করলে কাঞ্চন স্বীকার করে সুমা তার কাছেই আছে এবং সে সুমাকে বিয়ে করেছে বলে ও স্বীকার করে। সুমাকে উদ্ধার করতে এবার তারা ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। গত ৮মে মঙ্গলবার চেয়ারম্যানের চাপের মুখে কাঞ্চনের আত্মীয়স্বজন সুমাকে হিন্দু নববধু বেশে সাজিয়ে হাতে শাখা, কপালে সিঁদুর ও পায়ে নুপুর পরিয়ে চেয়ারম্যান কার্যালয়ে হাজির করে। সেখানে শতশত মানুষের সামনে কাঞ্চন দাবী করে সে সুমা আক্তার মুসলিম ধর্ম ত্যাগ করে হিন্দু ধর্ম গ্রহন করেছে। এবং সুমা আক্তার নাম পরিবর্তন করে সুমা দে রেখেছে। সুমা এখন তার তার বিবাহিত স্ত্রী। উপস্থিত শতশত জনতা তাদের কথা শুনে হতবাক! অনেকে বললেন, এ কেমন কথা? কারন, সুমা- আক্তার হউক আর দে হউক তার বয়স এখনো মাত্র সতের। এ পরিস্থিতিতে সুমা কে উপস্থিত তার বাবা-মায়ের সামনে নিয়ে গেলে সুমা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। অভযোগের সুরে সুমা বলে, মা আমি হিন্দু হতে চাই না-। মা ওরা আমাকে জোর করে শাঁখা সিঁদুর পরিয়ে দিয়েছে–। সে আরো বলে আমি মুসলমান হবো মা , আমি হিন্দু হতে চাই না॥ কাঞ্চন আমাকে জোর করে ঘরে তালাবদ্ধ করে রেখেছে। নয় মাসে একদিনের জন্য ও সে আমাকে ঘরের বাহিরে যেতে দেয়নি। সে আমাকে প্রতিদিন ধর্ষন করেছে।
সর্বশেষ আজ ১১মে ২০১৭ সকালে সুমার বাপের বাড়ীতে গিয়ে সুমার সাথে কথা বললে সে অকপটে স্বীকার করে তাকে অপহরন এবং ধর্ষনরে কথা। সুমা জানায়, গত নয় মাসে একদিনের জন্য ও কারো সাথে মোবাইলেও কথা বলতে দেয়নি।
স্থানীয় ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, কাঞ্চন কান্তি দে নামক অপহরনকারী যুবককে আটক করে রাখা হয়েছে। তার পরিবারকে খবর দেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ঢাকায় থাকায় কোন ব্যবস্থা নিতে পারছেন না তারা। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পাঠকের মতামত: