ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

ঢাল তলোয়ারহীন জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস

কক্সবাজার  প্রতিনিধি :::
ঢাল তলোয়ারহীন কক্সবাজার কর্মসংস্থার ও জনশক্তি অফিস। দপ্তরের সামনে সিটিজেন চার্টারে বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা কোন কিছুই নেই। বিদেশ গমনিচ্ছুদের ফিঙ্গার নিতে পারলেও তাদের ইমিঙ্গেশন কার্ড নিতে যেতে হয় ঢাকা-চট্টগ্রামে। এছাড়া প্রশিক্ষন মেডিকেলও হয় না এখানে এমন কি সরকারি ভাবে বিদেশ গমনিচ্ছুদের পাসপোর্ট পেতেও কোন সহযোগিতা করতে পারছে না তারা। আর সম্প্রতি যোগ হওয়া পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট নিতে তারার কিছু করার নেই বলে জানান এই সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা। আলাপ কালে নিজেদের অক্ষমতার কথা স্বিকার করে নিয়ে এ পর্যন্ত শুধু নাম নিবন্ধন আর ফিঙ্গার দেওয়া ছাড়া কোন কাউকেই বিদেশ পাঠাতে না পারার কথা জানান তারা।
কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী এলাকার শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, আমি সম্প্রতি কাতার যাওয়া জন্য ভিসা পেয়েছি সে জন্য একটি বেসরকারী এজেন্সির সাথে কথা বললে তারা ইমিগ্রেসন কার্ড, মেডিকেল, ভিসা প্রসেসিং, প্রশিক্ষনসহ মিলিয়ে বিমানের টিকিটসহ ৫০ হাজার টাকা দাবী করে। পরে আমি এক আত্মীয়ের পরামর্শে সরকারিভাবে কোন সহযাগিতা পাওয়ার আশায় কক্সবাজার কোর্ট বিল্ডিংস্থ কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে আসলে তারা আমাকে ব্যাংকে ২২৩ টাকা জমা দিয়ে আঙ্গলের ছাপ দিতে বলে। পরে আমি প্রয়োজনিয় কাগজপত্র জমা দিয়ে আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে আমাকে একটি নাম্বার দিয়ে বলে কোন বেসরকারী এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করতে। আমি জানতে চাইলে তারা বলে আমাদেরএর বাইরে আর কিছুই করার নেই। আমরা আর কোন ধরনের সহযোগিতা করতে পারবো না। পরে আমি বাধ্য হয়ে টাকা দিয়ে বাকি কাজ শেষ করেছি। এর আগে আমি খেয়াল করে দেখলাম এই সরকারি দপ্তরে সিটিজেন চার্টারে বেশ কিছু সেবার কথা লেখা থাকলেও বাস্তবে তার কিছুই নেই।
এদিকে খুরুশকুল মনুপাড়া এলাকার দিলারা খানম নামের এক মহিলা বলেন, আমি সরকারিভাবে বিদেশে কর্মী হিসাবে যেতে আগ্রহী হওয়ার পর আমাকে জেলা কর্মসংস্থান অফিসের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। পরে আমি এখানে যোগাযোগ করে দেখলাম। তারা আমাকে বলছে আগে পাসপোর্ট করে আনতে। আমি টাকা দিয়ে পাসপোর্ট করে দেওয়ার কথা জানালেও তারা এতে সহযোগিতা করেনি। পরে আমি ৭ হাজার টাকা দিয়ে পাসপোর্ট করেছি। এরপরে আমি আবার আসলে তারা আমাকে ফিঙ্গার নিয়ে চট্টগ্রাম গিয়ে প্রশিক্ষন আর মেডিকেল দিতে বলে। সেখানেও তারা কোন সহযোগিতা করেনি। এখন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নিতে গেলেও তারা আমাকে কোন সহেযাগিতা করছে না। তাহলে আমার প্রশ্ন সরকার কিভাবে বিদেশ গমনিচ্ছুদের সহযোগিতা করছে?
এদিকে রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের ফারুক আহাম্মদ নামের এক বিদেশ ফেরত যুবকের সাথে কথা বলে তার ক্ষোভের কথা আরো ভয়াবহ। তিনি বলেন, আমি ৩ মাস আগে কাউয়ারখোপ এলাকার এক পরিচিত ব্যক্তিরসাথে কথা বলে ভিসা নিয়ে কাতার যায়। কিন্তু সেখানে আমাকে যে ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়ার কথা তার কিছুই দেয়নি। আমি দারুন কষ্টের মধ্যে থেকেও কোন মতে ৩ মাস থেকে বাধ্য হয়ে ফেরত এসেছি। এখন টাকা উদ্ধারের জন্য জেলা কর্মসংস্থান অফিসের সহযোগিতা চাইলে তারা কোন সহযোগিতা করতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়। অথচ আমি যাওয়ার আগে নিবন্ধন করে গেছি এবং তাদের কর্মকর্তাদের সাথে এ সংক্রান্ত কথাও বলেছিলাম।
এসময় আরো কয়েক জন অভিযোগ করেন, নামে থাকলেও কাজে তেমন কাজে আসছে না জেলা কর্মসংস্থান অফিস। এখানে গদবাধা কিছু কাজ ছাড়া তেমন কোন কিছুই নেই। অথচ সিটিজেন চার্টারে বিদেশে যেতে আসতে সবধরনের সহযোগিতার কথা উল্লেখ আছে। আর বিদেশে কেউ মারা গেলেও তাকে ফেরত আনা সহযোগিতা করা আর বৃত্তির ব্যবস্থার কথা লেখা আছে বাস্তবে তা আছে কিনা সেটা সবার জানা।
এব্যাপারে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক রমিয়ন কান্তি দাশ বলেন, আসলে আমরা নিবন্ধন আর ফিঙ্গার নেওয়া ছাড় তেমন কিছু করতে পারি না। সরকার চাইলে এ অফিসের সক্ষমতা আরো বাড়াতে পারে। ইমিগ্রেসন কার্ড দেওয়ার সক্ষমতা নেই। এটা শুধু আগে ঢাকায় ছিল এখন চট্টগ্রামে হচ্ছে। আমার মতে কক্সবাজারে প্রবাসির সংখ্যা অনেক বেশি। সে হিসাবে এখানে আরো কিছু নতুন কর্মসুচী নেওয়া দরকার। এতে মানুষ উপকার পেত।

পাঠকের মতামত: