ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

টেকনাফের রোহিঙ্গা বস্তিগুলো অপরাধিদের নিরাপদ আস্তানা

cnশাহজাহান চৌধুরী শাহীন, নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার::::
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার লেদা এলাকার অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা বস্তিগুলোতে অপরাধিরা ডেরা গেড়েছে। চিহ্নিত সন্ত্রাসী, ডাকাত দলের সদস্য, মামলাবাজ কিছু রোহিঙ্গা নারী ও কতিপয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সোর্সের উৎপাতে সাধারণ ও নিরীহ রোহিঙ্গারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এসব অপরাধি দমনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের আন্তরিক সহায়তা কামনা করেছেন ভূক্তভোগী রোহিঙ্গারা।

জানা গেছে, হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা এলাকার অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা বস্তিগলোতে বর্তমানে প্রায় ১৮ হাজার রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু বসবাস করছেন। তবে এসব রোহিঙ্গার মাঝে কোন সংস্থার খাদ্যসহ মানবিক কোন সহযোগীতা পায়না। জীবিকার তাগিদে বেশিরভাগ সাধারণ রোহিঙ্গা ভিক্ষাবৃত্তি, পতিতাবৃত্তি, স্থলবন্দর শ্রমিক, লবণ মাট শ্রমিক, গৃহপরিচারিকা সহ কেউ কেউ মাদক বহনের কাজ করে আসছে। অনেকে চুরি-ডাকাতি,ছিনতাইসহ ভাড়াটে খুনি হিসেবে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।

গত ৯ মে গভীর রাতে টেকনাফ নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত শালবাগান আনাসার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে প্লাটুন কমান্ডার আলী হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় লুট করা হয় ১১টি অস্ত্র ও ৬৭০ রাউন্ড গুলি।

হামলার ১ মাস ১৭ দিন পর ৩০ জুন দিবাগত রাত আড়াই টার দিকে র‌্যাাব-৭ এর একটি টীম উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে চিহ্নিত রোহিঙ্গা ডাকাত রফিকসহ ৫ জনকে । আটকদের মধ্যে রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) সদস্যও রয়েছে। আটকরা হলেন, টেকনাফ মুচনী শরণার্থী ক্যাম্পের রফিক উরফে মামুন মিয়া, আব্দুর রাজ্জাক, তার ভাই আব্দুস সালাম, জয়নাল উরফে জানে আলম ও হারুন।

তাদের প্রাথমিক স্বীকার উক্তিতেও উঠে এসেছে আরএসও সম্পৃক্ততার তথ্য। ৩০ জুন বৃহস্পতিবার  সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দিন আহমেদও একই তথ্য জানান।

স্থানীয়রা জানান, রোহিঙ্গাদের মাঝে কেউ কেউ রয়েছে প্রভাবশালী। প্রভাবশালী রোহিঙ্গারা মানব পাচার ও ইয়াবা বাণিজ্যের মতো জঘন্য কাজে জড়িত রয়েছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।

অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় কতিপয় সুবিধাভোগী মহল বেকার রোহিঙ্গাদের একটি অংশকে ইয়াবার চালান বহনে সক্রিয় রেখেছে।

এইসব রোহিঙ্গা বস্তির নের্তৃত্ব হাতে নেয়ার জন্য সক্রিয় রয়েছে স্থানীয় একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি। তারা রোহিঙ্গা নারীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে তাদের দ্বারা বিভিন্ন লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করান। পরে পুলিশী ভয় দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার বানিজ্য চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

লেদা রোহিঙ্গা বস্তির নেতা ডাঃ দুদু মিয়া বলেন, বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এখানকার রোহিঙ্গারা। তাদের কঠোর ভাবে দমন করতে না পারলে আগামীতে বড় ধরনের সংঘাতের আশংকা উড়িয়ে দেয়া যায়না।

বস্তির আরেক বাসিন্দা কবির আহমদ বলেন, বস্তির রোহিঙ্গা বেপরোয়া চলাফেরা ও অপরাধ দমনে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী পরিচালনা কমিটি গঠন করা দরকার।

সাধারণ রোহিঙ্গাদের স্বাভাবিক জীবন ও স্থানীয়দের নিরাপত্তার স্বার্থে এব্যাপারে সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

পাঠকের মতামত: