এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নে গরু চুরির অপবাদ দিয়ে মা-মেয়েকে রশি দিয়ে বেঁধে প্রকাশ্যে সড়কে ঘোরানো এবং শাররীক নির্যাতনের ঘটনাটি তদন্ত করার জন্য এবার কক্সবাজার জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। গত ৬ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে চিঠি দিয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে ওই ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। চিঠিতে স্থানীয় সরকার পল্লীউন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এমপি ঘটনা তদন্ত করে জরুরিভিত্তিতে প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
অবশ্য তাঁর আগে গত ২৩ আগস্ট কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো.কামাল হোসেন এর নির্দেশে ঘটনাটি তদন্তে জেলা প্রশাসন থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন। এতে জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার শাখার পরিচালক (উপ-সচিব) শ্রাবন্তী রায়কে প্রধান করা হয়। অন্য দুই সদস্য হলেন চকরিয়া উপজলা সহকারি কমিশনার ভুমি তানভীর হোসেন ও উপজেলা বিআরডিবির প্রকল্প কর্মকর্তা (হারবাং ইউনিয়নের দায়িতপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার) সঞ্জয় চক্রবর্তী। তদন্ত কমিটিকে পরবর্তী তিন কার্যদিবসের মধ্যেই প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশনা থাকলেও ইতোমধ্যে দুইদফা সময় বর্ধিত করেছে তদন্ত কমিটি।
গত ২১ আগস্ট গরু চুরির অভিযোগ তুলে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নে মা-মেয়েসহ পাঁচজনকে রশিতে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা। প্রথমে উৎসাহী লোকজন তাদের উপর নির্যাতন চালায়। পরে তাদেরকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে নিয়ে গেলে সেখানেও তাদের ওপর দ্বিতীয় দফা নির্যাতন চালায় চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম ।
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভাইরাল হলে নজরে আসে চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের। এরই আলোকে গত ২৪ আগস্ট আদালতের বিচারক রাজিব কুমার দেব স্বপ্রণোদিত হয়ে একটি মামলা করেন। সর্বশেষ বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের স্বপ্রণোদিত মামলার প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) কাজী মো.মতিউল ইসলাম।
আদালতে দাখিল করা ওই তদন্ত প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা (পুলিশের এএসপি) কাজী মতিউল ইসলাম মা-মেয়েকে নির্যাতনের ঘটনায় হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলামসহ ৮ জনের সম্পৃক্ততার কথা তুলে ধরেন।
তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহনের পর ওইদিন আদালতের বিচারক রাজিব কুমার দেব চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলামসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
অপরদিকে আদালতের স্বপ্রণোদিত মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি আগে গত ২৫ আগস্ট জামিনে কারামুক্তির পর নির্যাতিত নারী পারভীন বেগম বাদী হয়ে চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামী করে ৪জনের নাম উল্লেখপূর্বক ৩০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে চকরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় এজাহার নামীয় তিনজন গ্রেফতার হয়ে জেলহাজতে থাকলেও প্রধান আসামী চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম এখনো অধরা রয়ে গেছেন।
পাঠকের মতামত: