ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

চৌফলদন্ডীতে পাউবোর বেড়ীবাঁধ হুমকির মুখে কোটি টাকার সম্পদ দখলের মহোৎসব

indexসেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও (কক্সবাজার) প্রতিনিধি :::

দিন দিন বেড়েই চলেছে কক্সবাজার সদরের উপকূলীয় ইউনিয়ন চৌফলদন্ডী ব্রীজ হতে পোকখালী স্লুইচ গেইট পর্যন্ত এলাকায় বেড়ীবাঁধের উপর পাকা দালান ও কাঁচাঘর সহ অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ চলছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা হলেও এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে কোন উদ্যোগ নেই। ফলে প্রতিযোগিতামূলকভাবে চলছে দখল বাণিজ্য। এসব অবৈধ স্থাপনাগুলো দ্রুত উচ্ছেদ করে সরকারী বেড়ীবাঁধ দখলমুক্ত করার দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সদরের চৌফলদন্ডী মৌজায় কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের মালিকানাধীন বিপুল পরিমাণ জলাশয়সহ ভূ সম্পত্তি রয়েছে। এ জমিগুলোতে চৌফলদন্ডী ব্রীজ এলাকা হতে পোকখালী স্লুইচ গেইট এলাকা পর্যন্ত ওয়াপদা বেড়ীবাঁধের পূর্ব ও পশ্চিম পাশের্^র পাকা দালান ঘর, দোকান ঘর, লবণের আড়ৎ (গোডাউন), কাঁচা দোকান ও ঘরবাড়ীসহ বিভিন্ন স্থাপনা অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া আরো বেশ কিছু পাকা স্থাপনা গড়ে তোলা হচ্ছে। এসব স্থাপনা মোটা অংকের টাকায় বেচাবিক্রিসহ ভাড়া দিয়ে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা আদায় করছে দখলদাররা। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, চৌফলদন্ডী ব্রীজ এলাকায় বেড়ীবাঁধের পূর্ব ও পশ্চিম পাশের্^ যারা অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করেছে তাদের মধ্যে রয়েছে স্বপন ডাক্তারের পুত্র মালেকের ২টি পাকা দালান (তেলের দোকান)। পূর্ব ও পশ্চিম পাশের্^ ২০টি পাকা দোকান দখল করে রেখেছে দখলবাজরা। তাদের মধ্যে বজল আহমদের ২টি, দিল মোহাম্মদের ২টি, আশরাফ আলীর ১টি, আলী আকবরের ৩টি, নুরুল হাকিমের ২টি, মোস্তফার ৫টি, আসকার আলীর ছেলে মোঃ শাহজাহানের ৮টি পাকা দালান ঘর নির্মাণ করেছে। সরেজমিনে আরো দেখা যায়, মৌলভী বাজার এলাকায় আবুতালেবের ২টি, আবদু ছালামের ২টি, সিরাজ বহদ্দারের ৪টি পাকা দালানঘর, অজিত বাবুর ২টি, মনসুর আলমের ৬টি, আবু বক্কর বহদ্দারের ২টি, শফি আলম বহদ্দারের ২টি, আবদু শুক্কুরের ২টি ও জাফর আলমের ১টি, আবদুর রশিদের সেমিপাকা টিনশেড বাড়ী ১টি, মাছ ব্যবসায়ী ছাবেরের পাকা ঘর ১টি, মাঝের পাড়ার নাজির হোসেনের ৭টি কাঁচা দোকান, ছৈয়দ আলম বহদ্দারের ১০টি পাকা দোকান ঘর, কামালের ৪টি, জাফর আলমের ১টি, নুরুল আলম সওদাগরের ১টি, মিজান সওদাগরের ১টি, লিটন শীলের ১টি, নুরুল হুদার ১টি, আবুল হাশেমের ২টি, মুনচি রাখাইনের ১টি, নাসু রাখাইনের ২য় তলা বিশিষ্ট বসতঘর, মোঃ কামালের ১টি, মোহাম্মদ আলমের ২টি, কবির আহমদ মেম্বারের পাকা দালান ঘর, মৃত আসকর আলীর ছেলে শাহজাহানের ৫টি পাকা দোকানঘর, দক্ষিণ রাখাইন পাড়ায় সৌদি প্রবাসী ফখরুদ্দীনের ১২টি পাকা দোকান, আবদু শুক্কুরের ছেলে শাহজাহান মেম্বারের ২য় তলা বিশিষ্ট টিনশেড লবণের আড়ৎ ১টি, কাশেম আলীর ছেলে বাবুল মেম্বারের ২য় তলা বিশিষ্ট লবণের আড়ৎ ১টি, ছফর আলীর ২য় তলা বিশিষ্ট টিনশেড লবণের আড়ৎ ১টি, পোকখালী স্লুইচ গেইট এলাকায় আসু আলী মাঝির পাকা দোকান ঘর ৩টি, পোকখালী এলাকার আবদু ছালামের ছেলে শাহজাহানের নির্মাণাধীন ৮টি দোকানসহ অসংখ্য অবৈধ ও কাঁচা স্থাপনা রয়েছে।

এলাকার সচেতন লোকজন জানান, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বিভিন্ন কৌশলে পানি উন্নয়ন বোর্ড পাউবোর কাছ থেকে ১ বছর, ৫ বছর, ১০ বছরসহ বিভিন্ন মেয়াদে জলাশয় ইজারা নিয়ে বেড়ীবাঁধের উভয় পাশে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত রেখেছে। সরেজমিন তদন্ত পূর্বক উক্ত অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করে বেড়ীবাঁধ দখলমুক্ত করার দাবী জানান। তা না হলে সরকারী জমি দিন দিন বেহাত হয়ে যাবে এবং স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণের হার আরো বৃদ্ধি পাবে বলে স্থানীয়দের অভিমত। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।

################

পোকখালীতে প্রকাশ্যে গুলিবর্ষণ : আতঙ্কিত এলাকাবাসী

সেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও (কক্সবাজার) প্রতিনিধি ::

কক্সবাজার সদরের পোকখালীতে সীমানা বিরোধ নিয়ে প্রকাশ্যে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সংঘটিত ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করলেও কেউ হতাহত না হয়নি। সৃষ্ট ঘটনায় ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে অভিযোগ দায়ের করেছে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার। ২৩ অক্টোবর রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বর্ণিত ইউনিয়নের দক্ষিণ নাইক্ষ্যংদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় মৃত খলিলুর রহমানের পুত্র মনছুর আলমের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল একই এলাকার মৃত মোজাম্মেল হকের পুত্র আবদুল কুদ্দুছের সাথে। তারই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন মনছুর আলমের বসতবাড়ীর সীমানা টেংরা ভাঙচুর ও রোপিত বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে ফেলে। এতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে উভয়পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়।

এক পর্যায়ে আবদুল কুদ্দুছের নেতৃত্বে আরো কয়েকজন দূর্বৃত্ত তার বসতঘর থেকে দুটি লম্বা বন্দুক বের করে তাদের লক্ষ্য করে ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। ভয়ে মনছুর আলম ও তার ভাই শামসুল আলম দৌড়ে ঘরের ভিতর ঢুকে পড়ে। সেখানেও বাড়ী লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে বলে জানায় মনছুর আলম। এসময় বাড়ীর দরজা-জানালার সামান্য ক্ষতি হয়। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে। পোকখালী ইউনিয়নের ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার মনজিয়ারা বেগম গুলিবর্ষনের সত্যতা স্বীকার করেন।

ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ দেবাশীষ সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি এএসআই ফিরোজ আহমদকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানান। আবদুল কুদ্দুছের সাথে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

পাঠকের মতামত: