ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

চুক্তিতে গ্রামার ও গাইড বইয়ের রমরমা বাণিজ্য !

imagesসেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও, কক্সবাজার-

জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টারের সাথে লাইব্রেরীর বই বিক্রেতাদের চুক্তিতে গ্রামার ও গাইড বইয়ের রমরমা বাণিজ্য চলছে। গাইড বই নিষিদ্ধ হলেও এসব লাইব্রেরী ও ষ্টেশনারী দোকানে মাধ্যমিক পর্যায়ে বিভিন্ন শ্রেণীর বাংলা ব্যাকরণ ও ইংরেজী গ্রামার বইয়ের মূল্য ৪শ থেকে সাড়ে ৪শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

জেলার বিভিন্ন লাইব্রেরী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা যায়, পাঞ্জেরী, দিগন্ত, কম্পিউটার, লেকচার, জুপিটার গাইড বই ৫শ থেকে সাড়ে ৫শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক শ্রেণীর অসাধু বই ব্যবসায়ীরা শিক্ষকদের সাথে আতাঁত করে এসব গাইড বই অস্বাভাবিক মূল্যে ক্রয় করতে ছাত্র ছাত্রীদেরকে বাধ্য করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকরা জানান, গ্রামার ও গাইড বই কোমলমতি ছাত্র ছাত্রীদের জন্য অভিশাপ। কতিপয় শিক্ষকদের আতাঁত বাণিজ্যে ছেলে মেয়েরা এর থেকে রেহাই পাচ্ছেনা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শিক্ষক ছাত্রদের জন্য সহায়ক হলেও এখন নিষিদ্ধ গাইড বই আমাদের জন্য সহায়ক মনে হচ্ছে। কারণ ক্লাসে স্যাররা কোন গাইড বইটি ক্রয় করবে তা নির্দিষ্ট করে বলছেন। তাছাড়া পরীক্ষার খাতায় ঐ গাইডের মত লিখলে নাম্বার পাওয়া যায় বেশী।

একাধিক অভিভাবকের অভিযোগ, লাইব্রেরীর বই বিক্রেতারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। যে যার মতন করে গাইড ও গ্রামার বিক্রি করছেন। সরকার শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হওয়ার জন্য ব্যাপক উদ্যোগ নিলেও সরকারের এ উদ্যোগ অমান্য করে বাজারের বই ব্যবসায়ীরা চড়া মূল্যে গ্রামার ও গাইড বইয়ের রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।

অন্যদিকে বিভিন্ন স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সরকার ঘোষিত নিষিদ্ধ নোট বই কিনতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত নোট ও গাইড বই সহায়ক বলে অর্থলোভী কোচিংয়ের কিছু শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের গাইড কিনতে প্রতিদিন চাপ প্রয়োগ করছেন। এতে করে শিক্ষক ও বই ব্যবসায়ীদের মধ্যে রমরমা ব্যবসা হলেও মেধাশূন্য ও সৃজনশীল শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশু কিশোররা।

বিভিন্ন স্কুল মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়, স্কুল মাদ্রাসার ২য়,৩য় শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণীর নোট ও গাইড বই দেদারচে বিক্রি হচ্ছে। নিষিদ্ধ এসব গাইড বই বিক্রেতা লাইব্রেরীর মালিকরা সারাক্ষণ স্কুল-মাদ্রাসায় ভীড় করছেন। তারা প্রতিষ্ঠান প্রধান-সুপার ও শ্রেণী শিক্ষকদের সাথে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে চুক্তি করে তাদের পছন্দের বই কিনতে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করাচ্ছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সদর উপজেলার ঈদগাঁও বাজারের এক বই বিক্রেতা জানান, শিক্ষকদের ম্যানেজ না করলে ব্যবসা হবেনা। অভিভাবকরা জানিয়েছেন স্কুল মাদ্রাসার শিক্ষকরা যে বই কিনতে বলবেন যাই হোক না কেন কিছুই না বুঝে ছেলে মেয়েরা সে গাইড কিনবে। তাদের অভিযোগ প্রশাসনিক কোন বাধা এখনো পর্যন্ত না আসায় তারা এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বীরদর্পে। ছাত্র-ছাত্রীদের অভিযোগ সৃজনশীল পদ্ধতির নামে শিক্ষকরা নির্দিষ্ট গাইড কিনতে বাধ্য করছেন। যার কারণে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা পড়েছেন চরম বিপাকে।

পাঠকের মতামত: