ঢাকা,রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

চীনের অসাধারণ উত্থান নতুন সমরাস্ত্র প্রদর্শন

ডেস্ক নিউজ ::  প্রাচ্যের পরাশক্তিধর দেশ চীন তার ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠার ৭০তম বছরে কমিউনিস্ট চীন তার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে অসাধারণ উত্থানের ভেতর দিয়ে গেছে তা অনেক দেশের কাছে ঈর্ষণীয়। দেশটির শাসন এখনো কমিউনিস্ট পার্টির হাতে রয়েছে, যে পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্যরা এখনো অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয়করণকেই এগিয়ে রাখেন। বিশ্বের ব্যক্তিমালিকানাধীন পুঁজির বিকাশের এই সময়ে চীন কীভাবে রাষ্ট্রীয়করণের মাধ্যমে নিজের আধিপত্যবাদী অর্থনীতিকে টিকিয়ে রেখেছে তা বিশ্লেষণের দাবিদার।

এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে চীন নিজেদের প্রযুক্তিতে নির্মিত বিপুল সংখ্যক অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র প্রদর্শন করবে বলে ধারণা করছে সিএনএন। অক্টোবরের ১ তারিখ আয়োজিত কুচকাওয়াজে ১৫ হাজার সেনা সদস্য, ১৬০টি যুদ্ধবিমান ও ৫৮০টি আর্টিলারি প্রদর্শন করা হবে প্রায় আশি মিনিট সময় ধরে। গত ৭০ বছর ধরে দেশটির সামরিক অর্জনও তুলে ধরা হবে ওই কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়ে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই প্রদর্শনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য জায়গা পেতে যাচ্ছে দেশটির ড্রোন প্রযুক্তি। চীনের হাতে রয়েছে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে অত্যাধুনিক ড্রোন মিসাইল সিস্টেম। এছাড়া আছে ডিএফ-৪১ ক্ষেপণাস্ত্র, যা ২০১৫ ও ২০১৭ সালের কুচকাওয়াজে প্রদর্শনের কথা ছিল। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ মাধ্যম বলছে, চলতি মাসের শুরুর দিকে পেইচিংয়ে মহড়া দেওয়ার সময় ওই ক্ষেপণাস্ত্রটি দেখা যায়। প্রায় ৯ হাজার ৩২০ মাইল পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্র বিশ্বের যেকোনো ক্ষেপণাস্ত্রের তুলনায় অধিক শক্তিশালী। একটি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা থেকে অন্তত দশটি লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারবে ডিএফ-৪১। ১৯৪৯ সালের ১ অক্টোবর তিয়ানআনমেন স্কয়ারে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিয়েছিলেন আধুনিক চীনের প্রতিষ্ঠাতা মাও সে তুং। তার ভাষণের সময় স্কয়ারের আকাশ দিয়ে মাত্র ১৭টি যুদ্ধবিমান উড়ানো হয়েছিল সক্ষমতা প্রকাশের অংশ হিসেবে।

কিন্তু এবার দেশটি এইচ-৬এন বোম্বার বিমান দেখাতে যাচ্ছে বিশ্ববাসীকে। এই বোম্বার বিমানে ডিএফ-২১ জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়াও আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা থাকছে। আকাশে থাকাকালীন প্রয়োজনে রিফুয়েলিং করতে পারবে বিমানটি। দক্ষিণ চীনের সামনে এই বিমানের উপস্থিতি স্বাভাবিকভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। চীনের অধিকাংশ বাণিজ্যিক শহরেই আধুনিকতা ও প্রাচুর্যের ছোঁয়া লেগেছে। রাজনৈতিক স্বাধীনতা কমতি ও কঠোর নজরদারির মাঝেও শহরগুলো তাদের অর্থনৈতিক স্থায়িত্ব ও স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে পেরেছে। এর পেছনে রয়েছে দেশটির কঠোর আমদানি-রপ্তানি নীতিমালা ও মুদ্রানীতি। বিদেশের মাটিতে বাণিজ্য সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট শি চিন পিংয়ের দূরদর্শিতা নতুন অর্থনৈতিক বিপ্লবের সূচনা করেছে যা পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে হুমকি স্বরূপ। সম্প্রতি চীনের প্রযুক্তি কোম্পানি হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ সেই হুমকিকে প্রত্যক্ষ করে।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গ্লোবাল টাইমস এক রিপোর্টে জানায়, দেশটির নৌবাহিনীকে যুক্ত হয়েছে ড্রোন সাবমেরিন। তবে কতদিন ধরে চীন কত সংখ্যায় এই সাবমেরিন তৈরি করছে তা নিশ্চিত জানা যায়নি। ড্রোন সাবমেরিন ছাড়াও আছে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত টাইপ-৯৯ ও টাইপ-১৫ ট্যাংক।

পাঠকের মতামত: