ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

 অবৈধ পার্কিং, ভাসমান দোকান ও নিষিদ্ধ যান

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ৬৬ কিলোমিটারের ১৮ স্পটে তীব্র যানজট

নিজস্ব প্রতিবেদক ::
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া থেকে কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জ্যারটেক পর্যন্ত ৬৬ কিলোমিটারের ১৮ স্পটে প্রায় প্রতিদিন তীব্র যানজট থাকে। এতে করে দূরপাল্লার যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়। দুর্ভোগ সঙ্গী করে তাদের পথ চলা।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, মোড়ে মোড়ে অবৈধ পার্কিং থাকে এবং মূল সড়কে গাড়ি দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করে। ভাসমান দোকানপাট ও মহাসড়কে অবৈধ যানবাহনের দৌরাত্ম্যের ফলে মহাসড়কের এসব স্পটে প্রতিনিয়ত যানজট থাকে। এসব স্পটে যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়। পটিয়া, চন্দনাইশ ও লোহাগাড়া উপজেলা প্রতিনিধিদের সরেজমিনে পরিদর্শন এবং স্থানীয় বিভিন্ন পেশাজীবীর সঙ্গে কথা বলে মহাসড়কে যানজটের কারণ ও দুর্ভোগের চিত্র উঠে আসে।

সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সড়ক বিভাগ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যানজট নিরসনে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এসব পরিকল্পনার মধ্যে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় ১৮ ফুট থেকে ৩৬ ফুটে উন্নীতকরণ, বেশ কিছু জায়গায় সড়কের বাঁক সরলিকরণ করা। পর্যায়ক্রমে ৬ লেনে উন্নীত করার কাজ সম্পন্ন হলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কটি যানজটমুক্ত করা যাবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে লোহাগাড়া উপজেলার ঠাকুরদিঘি বাজার, পদুয়া তেওয়ারীহাট বাজার, বটতলী মোটর স্টেশন, আধুনগর খানহাট বাজার ও চুনতি বাজারে প্রতিনিয়ত যানজট হয়। প্রতিটি স্পটে মহাসড়কের উভয় পাশে লেগুনা, সিএনজি টেক্সি, ব্যাটারি রিকশা ও মালবাহী ট্রলি দাঁড়িয়ে থাকা; সড়কের উপর গাড়ি দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করা, মহাসড়কের নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল, সড়কের উভয় পাশে ফুটপাত দখল করে অস্থায়ী দোকানপাট বসানো, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং ও ট্রাফিক আইন না মানার কারণে প্রতিনিয়ত যানজট হচ্ছে। একই কারণে সাতকানিয়া উপজেলার কেরানিহাট এলাকায়ও প্রতিনিয়ত যানজট হয়।

দোহাজারী, দেওয়ানহাট ও বাগিচারহাট, গাছবাড়িয়া কলেজ বাজার, খানহাট বাজার, রৌশনহাটে সড়কের উভয় পাশে দাঁড়িয়ে থাকে ব্যাটারি রিকশা। সড়কের উভয় পাশে লেগুনা ও যাত্রীবাহী বাস থেকে যাত্রী ওঠানামা করে। সিএনজি টেঙি সড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকায় নিত্য যানজট দেখা যায়। তাছাড়া মহাসড়কের দুই পাশ দখল করে বসা ভাসমান দোকানগুলোও যানজটের অন্যতম কারণ।

এদিকে পটিয়া ও কর্ণফুলী উপজেলার কমলমুন্সির হাট, বাসস্টেশন, ডাকবাংলোর মোড়, থানার মোড়, মুন্সেফবাজার, শান্তিরহাট, শিকলবাহা ক্রসিং ও মইজ্জ্যারটেক এলাকায় প্রতিনিয়ত তীব্র যানজট লেগে থাকে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ দোহাজারী নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের উন্নয়নে সড়ক বিভাগ স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনায় আছে শিকলবাহা ওয়াই জংশন থেকে কেরানিহাট পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার সরু সড়ককে ১৮ ফুট থেকে ৩৪ ফুটে উন্নীতকরণ। আগামী ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বিজিসি ট্রাস্ট থেকে কেরানিহাট পর্যন্ত অংশের মধ্যে ১৮ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি দুই কিলোমিটার অংশ বাঁক সরলিকরণ প্রস্তাব এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে।

এছাড়া দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা আছে পুরো মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীত করা। এর জন্য বুয়েট সম্প্রতি ফিজিবিলিটি স্টাডি শেষ করেছে। ডিজাইনও প্রস্তুত করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করা হলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক যানজট হবে না।

পাঠকের মতামত: