ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়া পৌরসদরের হোটেল গুলোতে পচাঁ ও বাসী খাবারে বাড়ছে রোগ-ব্যাধি, রান্না ঘরে ইঁদুর, তেলাপোকা ও মশা মাছির অবাধ বিচরন

imagesসাইফুল ইসলাম খোকন, নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :::
চকরিয়ার উপজেলা ও পৌরসভা সদরের বেশীর ভাগ হোটেল রেষ্টুরেন্টে পঁচা-বাসি ও নি¤œমানের খাবার পরিবেশন করে মোটা অংকের অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্চে বলে অভিযোগ উঠেছে। অসাধু হোটেল ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন থেকে পচাঁ বাসি ও রোগা পশুর মাংস, বিভিন্ন ধরনের নষ্ট মাছ, তরকারী পরিবেশন করে প্রতিনিয়ত হোটেলের মালিকরা গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা ও হয়রানি করে গেলেও দেখার কেউ নেই বললে চলে।
সরজমিনে পরিদর্শন করে দেখা গেছে, চকরিয়া পৌরসভার হোটেলে গুলোতে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে এসব খাবার তৈরী করা হচ্ছে। রান্না ঘরে খোলা ও ঢাকনা বিহীন রাখা হয় এসব খাদ্যদ্রব্য। তাছাড়া বাসি, পুরনো তেল ও নিন্মমানের ময়দা-আটা দিয়ে সকাল-বিকালের নান্তা, পরটা রুটি তৈরি করে খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেবে রোগাগ্রস্ত পশুর মাংস, বিভিন্ন ধরনের পচাঁ ও নষ্ট মাছ তরকারীর খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এমনকি মাছ, মাংস ভালভাবে পরিষ্কার না করেই রান্না করা হচেছ । হোটেল গুলোর মেঝে একবারে অপরিস্কার। রান্না ঘরে ইঁদুর, তেলাপোকা ও মশা মাছির অবাধ বিচরন। হোটেলের ভিতরের দুগর্ন্ধের মধ্যে খাবার পরিবেশন করা হয়।
চকরিয়া পৌরসদরের ভিআইপি ভাবে পরিচিত ধানসিড়ি, গ্রীণ সিলি, দি-কিং, দি জামান, এবিপি, নিউ জামান, সোনার গাও, রাজভবনসহ বেশ কিছু হোটেল রেষ্টুরা গুলোতে বাসি নিন্মমানের তৈল ও আটা দিয়ে তৈরী পরটা, রুটি, সমুচা, মুগলাই, সিঙ্গারাসহ রকমারী খাবার খেয়ে অনেকেই জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকতে হচ্ছে।
অথচ এই হোটেল গুলোর আশে পার্শ্বে নামী-দামি হাসপাতাল, বিভিন্ন কাপড়ের দোকান, স্বর্ণের দোকান, টেইলার্স, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, লাইব্রেরী, বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী ব্যাংক, ক্লিনিকসহ বেশ কিছু থেরাপী, প্যাথলজি সেন্টার। এই জনবহুল এলাকায় এমন একটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে হোটেল চললেও প্রশাসনের কোন মাথা ব্যাথা নেই।
সারা দেশে সরকারী নিয়ম অনুযায়ী প্রশাসনিক ভাবে ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান করার কথা থাকলেও চকরিয়া উপজেলা ও পৌরসভার হোটেল গুলোতে কোন অভিযান পরিচালনা করতে দেখা যাচ্ছেনা। যার ফলে হোটেল মালিকরা অধিক মুনাফার লোভে গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছে।
তথ্য মতে জানাযায়-১৯৬৯ সালে খাদ্রদ্রব্য প্রস্তুত ও পরিবেশনের অধ্যাদেশের ২৩ নং ধারায় কেক, রুটি, দুধ, পরটা, সমুচা, মুগলাই, পাউরুটি, সিঙ্গারা, পেয়াজু, মিষ্টান, ডাল ভাত এবং অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য বাসি করা যাবে না। এবং একই অধ্যাদেশের ২৪ নং ধারায় ৩নং উপধারায় হোটেল, রেস্তোরা, বেকারির মেঝে, দরজা, জানালা এবং অন্যান্য অংশ অব্যশই পরিষ্কার পরিচছন্ন থাকতে হবে। আর ৮নং অনুচেছদ অনুযায়ী খাদ্য প্রস্তুত ও পরিবেশনে নিয়োজিত লোকদের পরিচছন্ন বস্ত্র পরিধান করতে হবে। এছাড়া ও ২৫নং ধারা মতে চর্মরোগসহ অন্যান্য সংক্রমক রোগাক্রান্ত ব্যক্তি খাদ্য প্রস্তুত পরিবেশন এমনকি স্পর্শও করতে পারবে না। কিন্তু এর সবই হয় উল্টো।
চকরিয়া বারের একজন আইনজীবি এ প্রতিনিধিকে জানান, হোটেল, রেস্তোরা ও বেকারিতে কর্মরত কর্মচারীদের সিভিল সার্জন কর্তৃক চর্মরোগ বা সংক্রমক রোগ নেই মর্মে সনদ গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু চকরিয়ায় উপজেলা ও পৌরসভার হোটেল কর্মচারীরা এসব মনে হয় দেখেনি। ইচ্ছামত সরকারি নিয়ম না মেনে ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছে।
চকরিয়া সরকারী হাসপাতালে কর্তব্যরত এক প্রবীন ডাক্তার নাম প্রকাশের শর্ত্বে এ প্রতিবেদককে জানান, চকরিয়া পৌরসভায় গড়ে উঠা বেশীর ভাগ ভিআইপি হোটেল রেস্তোরা গুলোতে উৎপাদিত খাবার অতি নিন্ম মানের ও অপরিষ্কার । আর এসব খাবার খেলে বিভিন্ন ধরনের পেটের পীড়ায় আক্রন্ত হবার সম্ভাবনা আছে।
উপজেলার সচেতন জনসাধারন অভিযোগ করে বলেন-অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্না ও বাসন পত্র ময়লা পানিতে পরিষ্কার করা সহ পচাঁ ও বাসি খাবার গরম করে পরিবেশন করে খাওয়ানো হয় গ্রহকদের।
এব্যাপারে ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ হোটেল মালিকদের এধরনের অপতৎপরতা ও প্রতারণা থেকে মুক্তি পেতে উপজেলা প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

পাঠকের মতামত: