এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: চকরিয়া পৌরশহরকে যানজটমুক্ত করতে এবার কঠোর অফিস আদেশ জারি করেছেন মেয়র আলমগীর চৌধুরী। তিনি ঘোষনা দিয়েছেন যানজটমুক্ত শহর নিশ্চিতল্পে প্রয়োজনে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রতিদিন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হবে। তিনি সবাইকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন সুন্দর শহর বির্নিমানে সহযোগিতা দেয়ার আহবান জানিয়েছেন।
ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে চিরিঙ্গা শহরে যানজট নিরসন করতে একটি পরিপত্র জারি করে ইউএনও বরাবরে পাঠিয়েছে চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী। এতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও নিকট ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। ২৯ডিসেম্বর সন্ধ্যায় জারি করা পরিপত্র আমার কক্সবাজারের কাছে এসেছে।
জারি করা পত্রে বলা হয়েছে, চকরিয়া পৌর শহরের প্রধান সড়কের চিরিঙ্গায় পুরাতন এস.আলম কাউন্টার সংলগ্ন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সম্পূর্ণ অবৈধভাবে গড়ে উঠা বাস কাউন্টার, লোকাল সিএনজি, টমটম, ছারপোকা, হাইয়েচ-মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড স্থাপন এবং ফুটপাতে ভাসমান দোকান বসানোর কারণে পর্যটন রাজধানী কক্সবাজারগামী হাজার হাজার পর্যটক পৌর শহরে যানজটের ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
পত্রে আরও বলা হয়েছে, প্রধান সড়কের পুরাতন এস.আলম কাউন্টার সংলগ্ন সকল বাস কাউন্টার বন্ধ থাকবে। এছাড়াও তিন ও চার চাকার যান ছারপোকা, টমটম, সিএনজি স্ট্যান্ডগুলো ছিদ্দিক ফিলিং ষ্টেশনের পাশে এবং থানার রাস্তার মাথার পশ্চিমপাশে স্থানান্তরিত হবে। একই পত্রে আরও বলা হয়েছে, তিন চাকার যান টমটম চিরিঙ্গা ভাই ভাই বোর্ডি এর সামনে থেকে সোসাইটি মসজিদ মার্কেটের সামনে রাস্তার পশ্চিমপাশে চলাচল বন্ধ থাকবে এবং ফুটপাতে কোন প্রকার ভাসমান হকার বসতে পারবে না।
জনদূর্ভোগ লাঘবে স্থায়ীভাবে জনস্বার্থে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার মাধ্যমে উচ্ছেদে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উপজেলা প্রশাসন ও চকরিয়া থানার নিকট অনুরোধ করেছে চকরিয়া পৌর কর্তৃপক্ষ।
এই পত্র জারি’র পর চকরিয়া পৌরসভার সুশীল সমাজ চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষের একাধিক অভিযানের পরও কতিপয় মহল অবৈধভাবে গাড়ি দাঁড় করিয়ে এবং ফুটপাতে হকার বসিয়ে যানজট সৃষ্টি করে আসছিল। সচেতন মহল দ্রুত সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়ন হবে বলে আশা করছে।
চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেছেন, চকরিয়া পৌরসভার অধীন শহরের চিরিংগা ষ্টেশনে অর্থাৎ সমিতি মার্কেট, নিউ মার্কেট, আনোয়ার শপিং কমপ্লেক্স, ইসলামী ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, পুরাতন এস আলম কাউন্টার, ওয়াপদা সড়ক, গার্লস হাইস্কুল সড়ক ,সোসাইটি জামে মসজিদ এর সামনের এলাকায় যেসব অবৈধ দোকানপাট বসানো হয়েছে তার কোন অনুমতি নেই। এমনকি পৌরসভা থেকে উল্লেখিত পয়েন্টে কাউকে কোনধরণের ইজারা দেওয়া হয়নি।
মেয়র বলেন, যদি কেউ উল্লেখিত পয়েন্ট থেকে পৌরসভার নাম ব্যবহার করে কোনধরণের টোল বা চাঁদা আদায় করে তাৎক্ষনিক তাকে হাতে নাতে ধরে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা পুলিশে ধরিয়ে দিন। আগামীতে চকরিয়া পৌরশহরকে যানজটমুক্ত করার প্রয়োজনে চকরিয়া পুরাতন এস আলম কাউন্টার থেকে সোসাইটি মসজিদে সামনে পর্যন্ত রাস্তার পশ্চিম পাশে কোন ধরনের যানবাহন ষ্ট্যান্ড থাকবে না। এব্যাপারে উপজেলা পরিষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্বান্ত হয়েছে। একইসঙ্গে জনসাধারণের ভোগান্তি নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে চিঠি পাঠিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। আশা করছি ভ্রাম্যমান অভিযানের মাধ্যমে দ্রুত পৌরবাসীকে যানজটমুক্ত পৌরশহর উপহার দেওয়া হবে।’
চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী, চকরিয়া পৌরসভার অর্থায়নে ইতিমধ্যে চিরিংগা ষ্টেশন এবং তৎসংলগ্ন যানজট নিরাসনের জন্য পৌরশহরের জনতা মার্কেট সড়ক, পাইলট হাইস্কুল সড়ক, গার্লস হাইস্কুল সড়ক, হাসপাতাল সড়ক, কোঁচপাড়া সড়ক, ষ্টেশন পাড়া সড়ক সম্প্রসারণ কাজ অতিসহসা শুরু হবে। উল্লেখিত পয়েন্টে সড়ক সম্প্রসারণ কাজ সমাপ্ত হলে আগামীতে চকরিয়া পৌরশহরে আর যানজট থাকবেনা। তিনি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন চকরিয়া শহর বিনির্মাণে পৌরবাসির সহায়তা কামনা করেছেন।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান বলেন, ‘ভোগান্তি নিরসনে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চকরিয়া পৌরসভা থেকে একটি চিঠি হাতে পেয়েছি। এব্যাপারে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পাঠকের মতামত: