ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়া ঢেমুশিয়ায় গভীর রাতে বসতঘরে হামলায় মহিলা আহত, ব্যাপক ভাংচুর-লোপাট

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় ঢেমুশিয়া ইউনিয়নে গভীর রাতে বসতঘরে ঢুকে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে দুবৃর্ত্তরা। এসময় প্রাণের ভয়ে স্বামী ফোরকান পালিয়ে গেলেও ঘরে থাকা তাঁর স্ত্রী তাবারাকা জান্নাত (২৬) নামের এক নারীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করেছে হামলাকারীরা। ওইসময় গৃহকর্তা ফোরকানও মারধরে কমবেশি আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার ভোর রাত আনুমানিক তিনটার দিকে ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের আম্মারডেরা এলাকায় ঘটেছে এ হামলার ঘটনা। আহত তাবারাকা জান্নাত ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আম্মারডেরা মিয়াজিপাড়া এলাকার বাসিন্দা হাফেজ মোহাম্মদ ফোরকান ওরফে খোকনের স্ত্রী।
ঘটনার পর ভোররাত চারটার দিকে তাঁকে চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। তবে শাররীক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় গতকাল বিকালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই নারীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেছেন।

আহত গৃহকর্তা মোহাম্মদ ফোরকান বলেন, ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের জমিদারপাড়া এলাকার বাসিন্দা হারুনর রশিদের ছেলে মুহাম্মদ শিহাব উদ্দিনের কাছ থেকে আমার স্ত্রী তাবারাকা জান্নাত এর নামে পাঁচশতক জায়গা রেজিস্ট্রিমুলে ক্রয় করি। উল্লেখিত জমির বিপরীতে ইতোমধ্যে আমার স্ত্রীর নামে চকরিয়া উপজেলা ভুমি অফিস থেকে নামজারি জমাভাগ খতিয়ানও সৃজিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ক্রয় করার পর ওই জমিতে বসতঘর নির্মাণ করে আমরা পরিবার নিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করে আসছি। কিন্তু সম্প্রতি সময়ে ঢেমুশিয়া জমিদার পাড়া এলাকার বাসিন্দা মৃত দেলোয়ার হোসেন এর শফিউদ্দিন কূটকৌশলে আমার স্ত্রীর নামে ক্রয়কৃত বাড়িভিটা জবরদখলে নিতে নানাভাবে অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। বিষয়টি নিয়ে ইতোপূর্বে উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে একাধিকবার সালিসি বৈঠকও হয়েছে। সেখানে ক্রয় সুত্রে পাঁচ শতক জমির মালিকানা আমার স্ত্রী তাবারাকা জান্নাতের বৈধ প্রমাণিত হয়েছে।

গৃহকর্তা মোহাম্মদ ফোরকান বলেন, সালিসি বৈঠকের সিদ্ধান্ত অমান্য করে অভিযুক্ত শফিউদ্দিন দখল চেষ্টা অব্যাহত রাখলে তাঁর বিরুদ্ধে কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা ও স্থানীয় ঢেমুশিয়া ইউনিয়ন পরিষদে একটি সীমানা নির্ধারণ নিষ্পত্তি মামলা রুজু করি। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যানের গ্রাম আদালত দীর্ঘ একবছর ধরে সীমানা নির্ধারণ মামলাটি নিষ্পত্তি করেননি। তাতে অভিযুক্ত শফিউদ্দিন আস্কারা পেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে।
এরই জেরধরে গতকাল সোমবার ভোর রাত আনুমানিক তিনটার দিকে শফিউদ্দিনের নেতৃত্বে ২০ /২৫ জনের একটি অস্ত্রধারী দুবৃর্ত্ত দল হামলা চালায় আমার বসতঘরে। এসময় প্রাণের ভয়ে আমি পালিয়ে গেলেও ঘরে থাকা আমার স্ত্রী তাবারাকা জন্নাতকে বেদড়ক পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেছে হামলাকারীরা। ঘটনান সময় দা দিয়ে কেটে ও ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে আমার বসতঘর।

ভুক্তভোগী পরিবারের গৃহকর্তা হাফেজ ফোরকান অভিযোগ করে বলেন, হামলার সময় অস্ত্রধারীরা আমার বসতঘর থেকে গরু ব্যবসার নগদ দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা, বিপুল আসবাবপত্র, গহনাপাতি ও মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। ঘটনা চলাকালে আমি পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন দিলে তাৎক্ষণিক চকরিয়া থানার এসআই জসিম উদ্দিনের সঙ্গীয় পুলিশ টিম ঘটনাস্থল পৌঁছে। তবে ততক্ষণে হামলাকারী দুবৃর্ত্তরা মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসী চক্রের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় মামলা রুজু করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

এব্যাপারে জানতে চাইলে ঢেমুশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মঈনুদ্দিন চৌধুরী বলেন, দুইপক্ষই ক্রয় সুত্রে পাশাপাশি ওই জায়গার মালিক। তবে একজন আগে, অন্যজন অনেক পার রেজিস্ট্রি নিয়েছেন। সীমানা নির্ধারণের বিষয়ে গ্রাম আদালতে মামলা করলেও নিষ্পত্তির শুরুতে একই বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা করা হয়েছে। সেকারণে আমি গ্রাম আদালতের কার্যক্রম স্থগিত রেখেছি।

চকরিয়া থানার ওসি জাবেদ মাহমুদ বলেন, গতকাল ভোররাতে পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন কল পেয়ে তাৎক্ষণিক চকরিয়া থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে যান। এব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: