নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চলে মৎস্য চাষের জন্য স্থানীয় একাধিক প্রভাবশালী মহল শাখাখালে লবণ পানি ঢুকিয়ে মিঠাপানির উৎস বন্ধ করে দিয়েছেন। এই অবস্থার কারণে বেশকিছু দিন ধরে উপজেলার উপকূলীয় ঢেমুশিয়া, পশ্চিম বড়ভেওলা, কোনাখালী, বিএমচর ও বদরখালী ইউনিয়নের হাজার হাজার কৃষক মিঠাপানির সেচ সুবিধা নিতে পারছে না। এতে করে এসব ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বিপুল পরিমাণ বোরোধান ক্ষেত পানির অভাবে ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। আবার কিছু কিছু এলাকায় কৃষকরা বাধ্য হয়ে জমিতে লবণ পানির সেচ সুবিধা দিয়ে এখন বিপাকে পড়েছেন। তাদের বেশিরভাগ বোরোধান ক্ষেত লবণ পানির কারণে মরে যাচ্ছে।
অভিযোগ উঠেছে, কক্সবাজার জেলা প্রশাসন থেকে মিঠাপানির মৎস্য চাষের জন্য চকরিয়া উপজেলার ঢেমুশিয়া জলমহালটি ইজারা নিয়েছেন স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোকজন। তারা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে করা ইজারা চুক্তির শর্তাবলী লঙ্ঘন করে সম্প্রতি সময়ে কৌশলে জলমহাল দিয়ে সামুদ্রিক লবণ পানি ঢুকিয়ে নিয়েছেন।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, ঢেমুশিয়া জলমহালে লবণ পানি ঢুকিয়ে নেয়ার কারণে মুলত উপকূলীয় অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় এখন খাল-বিলে মিঠাপানির উৎস নেই। এই অবস্থায় কৃষকেরা রোপিত বোরোধান ক্ষেত রক্ষা করতে নিরুপায় হয়ে সেচ সুবিধা হিসেবে লবণ পানি দিচ্ছেন জমিতে। তাতে বেশিরভাগ বোরোধান ক্ষেত এখন মরে যাচ্ছে।
চকরিয়া উপকূলে লবন পানি ঢুকিয়ে কৃষকদের অপূরনীয় ক্ষতি করা হচ্ছে এইধরনের অভিযোগ পেয়ে গতকাল মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) বিকালে চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চলের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান। এসময় চকরিয়া থানার ওসি তদন্ত মো আবদুল জব্বার, ঢেমুশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মঈন উদ্দিন চৌধুরী, কোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার ছাড়াও ইউনিয়ন ও মেম্বার, এলাকার কৃষকেরা উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শন শেষে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, উপজেলার উপকুলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রনাধীন স্লুইসগেট গুলো দিয়ে যাতে কোনভাবে লবণ পানি না ঢুকানো হয় সেইজন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ঢেমুশিয়া ও কোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যানকে বিষয়টি তদারকি করতে বলা হয়েছে। এছাড়া ব্যক্তিগতভাবে যারা উপকুলে স্লুইসগেট তৈরি করে সামুদ্রিক লবণ ঢোকাচ্ছ তাদের স্লুইসগেট গুলো বন্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের কঠোর পদক্ষেপ নিতে বলেছি। আশাকরি এখন থেকে কৃষকেরা জমিতে মিঠাপানির সেচ দিতে পারবে। ##
পাঠকের মতামত: