এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: চকরিয়া উপজেলার পূর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জিএনএ মিশনারী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠটি এখন হাঁটুসমান পানিতে টইটম্বুর। প্রতিবছর বর্ষা এলেই মাঠটি জলমগ্ন হয়ে ডুবে থাকে। এই অবস্থা চলে মাসের পর মাস। দেখলে যেন কারো মনে হবে এটি একটি পুকুর বা বদ্ধ জলাশয়। বিদ্যালয়ের খেলার মাঠটি পানিতে ডুবে থাকায় শিক্ষার্থীসহ আশ-পাশ এলাকার শিশু-কিশোর ও তরুন যুবকদের মাঠে খেলতে এবং অনুশীলন করতে বড়ই দুস্কর হয়ে পড়ে। শুষ্ক মৌসুম হলে যেমন তেমন। বর্ষা এলেই পুরো মাঠটি হাটু পরিমাণ পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে পুকুরে পরিণত হয়।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলার অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্টান জি.এন.এ মিশনারী উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আশপাশে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়মিত খেলাধুলা করার প্রধান মাঠ হচ্ছে জি.এন.এ মিশনারী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ। একইসঙ্গে এলাকার কোন লোক মারা গেলে পাশের মসজিদে জানাযাও পড়ানো হয় এই মাঠে।
এ মাঠটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ছাড়াও এলাকার ক্ষুদে তরুণ ফুটবলার এবং যুবকেরা নানা ধরণের খেলাধুলা করতে এ মাঠ ব্যবহার করে আসছে। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম আসলেই পানি নিস্কাশনের কোন ধরণের ব্যবস্থা না থাকায় জলমগ্ন অবস্থায় ডুবে থাকে।
এই অবস্থার কারণে মাঠে সব ধরনের খেলাধুলা জলাবদ্ধতার জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। মাঠ সংলগ্ন রয়েছে একটি পুরনো বাজার (শামশু মিয়ার বাজার) নামে পরিচিত। বাজারে সকাল-সন্ধ্যায় প্রচুর লোকসমাগম ঘটে এবং বেচা-বিক্রিও হয় বেশ ভালো।
পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের একমাত্র উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল থাকায় মাঠে খেলতে প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থীর সমাগম ঘটে। তাছাড়া পাশে একটি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদও রয়েছে। মাঠটি ঘিরে রয়েছে নানা ইতিহাস ও ঐতিহ্য। এই মাঠে দেশের জাতীয় বিভিন্ন খ্যাতিমান ফুটবল খেলোয়াড়রা খেলে গেছেন।
এলাকাবাসী জানায়, একসময় এই মাঠের জৌলুস ছিল। প্রসিদ্ধ এ মাঠ স্টেডিয়াম হিসেবে উপজেলা পর্যায়ে ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হতো। জাতীয় পর্যায়ের খেলোয়াড় এই মাঠে খেলে গেছেন। এটি ঐতিহাসিক স্বাক্ষর বহন করে চলেছে। এছাড়াও বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসসহ রাজনৈতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠান, বিভিন্ন চিত্ত বিনোদন ও বড় ধরনের সভা সমাবেশ অনুষ্ঠান হয় এ মাঠে। সঠিক কোন ধরণের রক্ষনাবেক্ষণ দায়িত্ববান ব্যক্তি না থাকার সুবাধে বর্তমানে বিশাল এ মাঠটি যেন এখন অভিভাবকশূন্য। মাঠে পর্যাপ্ত পয়ঃ নিষ্কাশনের কোনও ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় অল্প বৃষ্টিতেই পানি জমে সয়লাব। আর বর্ষা মৌসুমে থাকে হাঁটুপানি, যা মাছ চাষের জন্য উপযোগী!
শমসুমিয়া বাজার এলাকার বাসিন্দা গোফরানুর রহমান চৌধুরী বলেন, বিদ্যালয়ের এই মাঠে খেলাধুলা করে নিজেরাই বড় হয়েছি। সংস্কারে অভাবে বর্ষা মৌসুমে হাঁটুপানিতে মাঠ ডুবে থাকায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত। মাঠ শুকনো থাকলে এলাকার যুবসমাজ ব্যস্ত থাকে নানা ধরণের খেলাধুলায়। ফলে মাদকের ছোবল থেকেও তারা রক্ষা পায়। যত বেশি ক্রীড়াচর্চা হবে ততবেশি এলাকার উঠতি যুবসমাজ মাদক থেকে দূরে থাকবে।
তিনি বলেন, মাঠটি সংস্কারপুর্বক বছর জুড়ে খেলাধুলার উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলতে চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সাংসদ আলহাজ জাফর আলম ও চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্রীড়া সংগঠক আলহাজ্ব ফজলুল করিম সাঈদীর কাছে শিক্ষার্থী এলাকাবাসির পক্ষথেকে জোর দাবী জানাচ্ছি।##
পাঠকের মতামত: