নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
চকরিয়া উপজেলার সাহারবিলের চোয়ারফাড়ি এলাকায় সড়কে ডাকাতির নাটক সাজিয়ে প্রবাসীর চালান হিসেবে পাঠানো ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। চকরিয়া পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের কাহারিয়াঘোনা খামারপাড়া এলাকার রশিদ আহমদের ছেলে রাসেল উদ্দিন ওই ২২ লাখ টাকা লুটের নাটের গুরু বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী প্রবাসী মো জমির উদ্দিন। এ ঘটনায় পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের উত্তর কাহারিয়াঘোনা কমিশনারপাড়া গ্রামের মৃত সোলতান আহমেদের ছেলে ভুক্তভোগী প্রবাসী জমির উদ্দিন গতকাল চকরিয়া থানায় একটি এজাহার জমা দিয়েছেন।
এজাহারে আত্মসাতকারী রাসেল উদ্দিন, তার বাবা রশিদ আহমদ, সহযোগী একই এলাকার সোনা মিয়া, রোকন উদ্দিন ও সাহারবিলের মোহাম্মদ কাজলসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
চকরিয়া থানার এজাহারে বাদি জমির উদ্দিন বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে দুবাই প্রবাসে রয়েছেন। এক নম্বর আসামি রাসেল উদ্দিন তার ভাতিজা হয়। সেও তার সঙ্গে দুবাই এক বাসায় বসবাস করছেন। ইতোমধ্যে রাসেল ছুটিতে বাড়ি এসেছে। কিছুদিন আগে আমার পরিচিত বন্ধু চকরিয়া পৌরসভার ফুলতলা এলাকার আক্তার আহমদ এর ছেলে আনিছুর রহমান ব্যবসায়ীক অংশদারিত্ব হিসেবে একটি স্কেভেটর গাড়ি কেনার প্রস্তাব দেন। কথা মতো আনিছুর রহমানের নামীয় আল আরফাহ ইসলামি ব্যাংক পেকুয়া শাখা থেকে তিনটি চেকের মাধ্যমে ১২ লাখ টাকা উত্তোলন এবং আনিছুর রহমানের হাতে থাকা নগদ ১০ লাখ ৬ হাজার টাকা মোট করে ২২ লাখ ৬ হাজার টাকা নিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী রাত আনুমানিক নয়টার দিকে কাহারিয়াঘোনাস্থ খামারপাড়া বাড়িতে গিয়ে আমার ভাতিজা রাসেল উদ্দিনের হাতে জমা দেন আমার বন্ধু আনিছুর রহমান। কথা ছিল পরদিন ১ মার্চ সকালে ওই টাকা নিয়ে রাসেল উদ্দিন ও আনিছুর রহমান দুইজন চট্টগ্রামে গিয়ে টাকাগুলো স্কেভেটর গাড়ি মালিককে বুঝিয়ে দেবেন। এরপর রাসেল দুবাই চলে যাবে।
এজাহারে বাদি প্রবাসী জমির উদ্দিন আরও বলেন, ১ মার্চ (বুধবার) সকাল ৬টার দিকে দুইজন ( ভাতিজা রাসেল ও বন্ধু আনিছ) একটি সিএনজি গাড়িতে করে ওই ২২ লাখ টাকা নিয়ে একসঙ্গে চট্টগ্রাম যাবার কথা থাকলেও রাসেল উদ্দিন টাকাগুলো আত্মসাৎ এর জন্য কৌশল করে। সকালে চকরিয়া থানা সেন্টার থেকে সিএনজি গাড়িতে আনিছুর রহমানকে তুলে নেয়ার কথা থাকলেও রাসেল সকালে তাকে (আনিছুর রহমান) ফোন দেয়নি। উল্টো এদিন সকাল ৬টার এক মিনিট আগে দুবাই আমার কাছে মোবাইল ভয়েজ পাঠিয়ে বলে আপনার বন্ধু আনিছ আসেনি, তাই টাকাগুলে নিয়ে আমি আরেকজন সঙ্গী সোনা মিয়াসহ চট্টগ্রাম যাচ্ছি। আবার এক মিনিট পরে নতুন করে আমার মোবাইলে ভয়েজ ও ছবি পাঠায় ভাতিজা রাসেল, সেখানে বলেন, চট্টগ্রামে যাবার পথে চকরিয়ার সাহারবিলের চোয়ারফাড়ি এলাকায় ডাকাতের কবলে পড়েছেন, ডাকাতরা টাকাগুলো নিয়ে গেছে। এভাবে তিন মিনিটে তিনটি সাজানো ভয়েজ পাঠায়।
ভুক্তভোগী প্রবাসী জমির উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, প্রতারণার মাধ্যমে আমার স্কেভেটর গাড়ি কেনার টাকা আত্মসাতের জন্য অভিযুক্ত প্রতারক রাসেল উদ্দিন সড়কে মিথ্যা ডাকাতির নাটক সাজিয়েছে। ঘটনাটি তাৎক্ষণিক আমি পরিবার সদস্যদের জানাই। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে রাসেল উদ্দিন ও সঙ্গে থাকা তার শ্বাশুড় সোনা মিয়াকে সম্পুর্ন অক্ষত অবস্থায় দেখতে পান। এতে আমার পরিবার সদস্যদের কাছে আরও সন্দেহ বেড়ে যায়, কারণ ডাকাতের কবলে পড়লে তাদের শরীরে কোনধরনের আঘাত নেই। হাতের মোবাইল ও দুবাই যাবার পাসপোর্ট ও টিকেট সবই অক্ষত অবস্থায় ছিল।
ভুক্তভোগী জমির উদ্দিন অভিযুক্ত প্রতারক রাসেল উদ্দিনের কাছ থেকে তার লুন্ডিত টাকা গুলো ফেরত পেতে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, প্রবাসির চালান হিসেবে পাঠানো ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় একটি এজাহার পাওয়া গেছে। এব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
পাঠকের মতামত: