ঢাকা,বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় সাহারবিল বিএমএস উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩৬ শিক্ষার্থীর এসএসসি পরীক্ষা দেয়া অনিশ্চিত

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::   চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল বিএমএস উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ৩৬জন ছাত্র-ছাত্রীর এসএসসি পরীক্ষা দেয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এ ধরণের অশোভন কর্মকান্ড নিয়ে অভিভাবক মহলে তীব্রক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়ার দাবিতে গতকাল সোমবার বিকালে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, উপজেলার সাহারবিল বিএমএস উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে মোট এসএসসি পরীক্ষার্থী রয়েছে ১৫৭জন। বিদ্যালয়ে সদ্য অনুষ্ঠিত এসএসসি টেষ্ট পরীক্ষায় এসব শিক্ষার্থী অংশ নিলেও কৃতকার্য হয়েছে মাত্র ৩৬জন। ইতোমধ্যে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কৃতকার্য হওয়া ওই ৩৬জন শিক্ষার্থীর ফরমও পূরণ করেছে।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, কৃতকার্য ৩৬জন শিক্ষার্থী ছাড়াও টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য আরো ৮৫ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অবৈধ উপায়ে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ফরম পূরণ করা হয়েছে। কিন্তু চাহিদামত টাকা দিতে না পারায় দরিদ্র পরিবারের অবশিষ্ট ৩৬জন শিক্ষার্থীর ফরম কোন ভাবেই পূরণ করছেনা প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম। অন্যদিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, এসএসসি ফরম পূরণের সময় রয়েছে আর মাত্র দুইদিন।

বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষক মো: নজরুল ইসলাম এসএসসি ফরম পূরণের ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত ফি: ১৫০০টাকার পরিবর্তে কৃতকার্য ৩৬জন থেকে অন্তত চার হাজার টাকা করে এবং অকৃতকার্য ৮৫জন থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে আদায় করেছে। তন্মধ্যে প্রতিজন থেকে ৩ মাসের কোচিং ফিস হিসেবে নেওয়া হয়েছে ১৫০০ টাকা করে। একইভাবে অবশিষ্ট ৩৬ জন শিক্ষার্থীও ৫ হাজার টাকা করে দিতে চাইলে তাদের কাছ থেকে আরো অতিরিক্ত টাকা দাবী করেন।

এ অবস্থার কারনে বর্তমানে দরিদ্র পরিবারের এসব শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের দাবীকৃত টাকা দিতে না পারায় এসএসসি ফরম পূরণ করছেনা। ফলে এসএসসি পরীক্ষা দেয়া নিয়ে তাদের মধ্যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

অনিশ্চয়তার আশঙ্কায় থাকা বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী ইয়াসিন, খোকন, মামুন, রাসিব, নাঈম, জিসান, ইমরান, আবু হোরাইরা, রাকিবুল ইসলাম, মাসুম, শহিদুল ইসলাম, আরাফাত, ইলিয়াছ, সাকিল, মুজিব, জিসান, বৃষ্টি, নয়ন মনি, সুমি, রেখা, তছলিমা, তামিম, নুসরাত, লাকি, ফারজানা ও রুবি অভিযোগ করে জানান, অকৃতকার্য যেসব ৮৫ জন শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করা হয়েছে, তাদের প্রত্যেকেই ২/৩বিষয়ে অকৃতকার্য ছিল। তারা দাবী করেন, অন্যান্যদের মতো আমাদের ফরম পূরণ করে এসএসসি পরীক্ষা করতে না দিলে আমরা সকল শিক্ষার্থীদের নিয়ে মানববন্ধনসহ কঠোর কর্মসূচী আয়োজন করতে বাধ্য হবো। শিক্ষার্থীরা জানান, তারা বিষয়টির আলোকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করবেন।

অভিযোগ অস্বীকার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি ও শিক্ষকদের সমন্বয়ে একটি কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এসএসসির টেস্ট পরীক্ষায় কৃতকার্য শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ করে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের বাদ দেওয়ার। তিনি ফরম পূরণকারী সকলেই কৃতকার্য বলে দাবী করেন। তবে কোন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মহসিন বাবুল বলেন, শিক্ষাবোর্ডের নির্দেশনা রয়েছে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ না করার। এবিষয়ে বিদ্যালয়ে জরুরী মিটিং হয়েছে। অকৃতকার্য কোন ছাত্রের ফরম পূরণ হয়ে থাকলে অবিশিষ্ট শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণের ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।##

পাঠকের মতামত: