ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় সরকারি শাখাখাল দখলে প্রভাবশালীর বাঁধ নির্মাণে চলছে চিংড়িঘের তৈরীর মহোৎসব

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার উপকুলের পশ্চিম বড়ভেওলা ইউনিয়নের কাকাড়াদিয়া এলাকায় সরকারি চলাচলের খালে মাটি দিয়ে বাঁধনির্মাণে চিংড়িঘের তৈরীর মহোৎসব চলছে। অভিযোগ উঠেছে, সরকারি খাল রক্ষনাবেক্ষনের তদারক প্রতিষ্ঠান জেলা প্রশাসন এবং মাটি ফেলে জায়গার শ্রেণী পরিবর্তন প্রতিরোধে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তর এব্যাপারে কার্যকর কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় জড়িতরা ইতোমধ্যে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।

স্থানীয় সুত্রে অভিযোগ পাওয়া গেছে, বদরখালীর বাসিন্দা নুরুন নবী নামের একব্যক্তির নেতৃত্বে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল বিগত কয়েকমাস ধরে থেমে থেমে স্কেভেটর গাড়ি দিয়ে মাটি কেটে বাঁধ নির্মাণপুর্বক ডেবডেবি পা কাটা খালটি দখলে নিয়েছে। পাশাপাশি খালের আশপাশের ব্যক্তি মালিকানাধীন বিপুল পরিমাণ জায়গাও দখলের চেষ্ঠা চালাচ্ছে অভিযুক্ত মহলটি। বর্তমানে সেখানে চিংড়িঘের তৈরীর সবধরণের প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছে।

সর্বশেষ শনিবার ২৩ এপ্রিল সকালেও সরকারি চলাচলের খালটি দখলে নিয়ে মাটি দিয়ে বাঁধ নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছে অভিযুক্ত প্রভাবশালী নুরুন নবীর নেতৃত্বে ওই চক্রটি। এতেকরে খালের পানি চলাচল বন্ধ হবার কারণে ডেবডেবি ও কাকাড়াদিয়া এলাকার বিপুল পরিমাণ চিংড়িঘেরে আগামীতে মৎস্য চাষ হুমকির মুখে পড়েছে।

এই অবস্থার প্রেক্ষিতে স্থানীয় একাধিক চিংড়িঘের চাষী বাঁধা দিতে গেলে উল্টো জড়িতরা তাদেরকে নানাভাবে হুমকি ধমকি দিয়েছেন অভিযোগ তুলে শনিবার (২৩ এপ্রিল) চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও চকরিয়া থানার ওসির কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন উপজেলার পশ্চিম বড়ভেওলা ইউনিয়নের দরবেশকাটার পুর্বপাড়ার বাসিন্দা মৃত মোস্তাক আহমদের ছেলে মোহাম্মদ এহেছান নামের এক ভুক্তভোগী চিংড়িচাষী।

চকরিয়ার ইউএনও ও থানার ওসি কাছে জমা দেওয়া অভিযোগে আসামি করা হয়েছে উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের ২নং ব্লক নতুনঘোনা এলাকার মৃত আমির হোসেনের ছেলে নুরুন্নবী গংকে। বাদি মোহাম্মদ এহেছান দাবি করেন, চকরিয়া উপজেলার পশ্চিম বড় ভেওলা মৌজার ডেবডেবি ও কাকড়াদিয়া এলাকার পা কাটা নামক খালটি সরকারি একটি শাখা খাল। এই খালটি দিয়ে লোনা পানি চলাচল বিদ্যামান। খালের পানি নিয়ে ডেবডেবি ও কাকড়াদিয়া এলাকার চিংড়িঘেরগুলোতে চাষীরা মৎস্য চাষ করে থাকে। কিন্তু হঠাৎ করে কিছুদিন ধরে অভিযুক্ত নুরুন্নবী গং বিপুল পরিমাণ শ্রমিক দিয়ে মাটি কেটে খালের দুই পয়েন্টে বাঁধ দিয়ে ঘের তৈরী করছে।

চিংড়িচাষী এহেছানসহ স্থানীয় একাধিক চাষী অভিযোগ তুলেছেন, অভিযুক্ত মহলটি বর্তমানে সরকারি চলাচলের খালটি দখলে নিয়ে বাঁধ দিয়ে চিংড়িঘের নির্মাণ করার পাশাপাশি আশপাশের ব্যক্তি মালিকানাধীন বেসুমার জায়গাও দখলের চেষ্ঠা চালাচ্ছেন। তাদের এইধরণের অনৈতিক কাজের কারণে বর্তমানে খালের লোনা পানি সুবিধা বঞ্চিত হবে স্থানীয় চিংড়িঘের গুলো। এতে ঘেরে মৎস্য চাষাবাদ নিয়ে চাষীদের মাঝে উদ্বেগ আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

ভুক্তভোগী চিংড়িচাষীরা অভিযোগ করেছেন, সরকারি চলাচল খালে মাটি দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করার ঘটনা জানতে পেরে তাঁরা কয়েকজন জড়িতদের বারণ করেন। তাতে উল্টো জড়িতরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন। এখন হুমকি দিচ্ছেন, তাদের কাজে কেউ বাঁধা দিতে প্রয়োজনে হত্যা করবে, নতুবা মামলায় জড়িয়ে এলাকাছাড়া করবে। এই অবস্থায় নিজেদের নিরাপত্তা এবং চিংড়িঘেরে মৎস্য চাষাবাদের পরিবেশ ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও চকরিয়া থানার ওসির কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

পাঠকের মতামত: