নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা ও পৌরসভায় গড়ে উঠা প্রায় অর্ধশত ডায়গনষ্টি সেন্টার, ল্যাব বা প্রাইভেট হাসপাতালের নেই বৈধ লাইসেন্স। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে নবায়ন নাই ৫ থেকে ৭ বছর ধরে। বছরের পর বছর ধরে সরকারের রাজস্ব ফাঁকিদিয়ে এসব প্রতিষ্টান গুলো চলতে থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেনা। ফলে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চরমভাবে হয়রানীর শিকার হয়ে আসছে।
কক্সবাজার জেলা সিভিল সার্জনের তালিকা মতে, জমজম হাসপাতাল চিরিংঙ্গা ও ডায়গনষ্টিক সেন্টার ২০১৯-২০, এশিয়ান হাসপাতাল ২০১৬-১৭, সেন্ট্রাল হসপিটাল চকরিয়া ২০১৬-১৭, হারবাং ডায়গনষ্টিক সেন্টার ২১০৬-১৭, ল্যাব হাউজ চকরিয়া ২০১৬-১৭, দি সিটি কেয়ার ডায়গনস্টিক চকরিয়া ২০১৬-১৭, হামজা প্যাথলজি চকরিয়া ২০১৫-১৬, মডেল ল্যাব চকরিয়া ২০১৭-১৮, ডিজিটাল সুপার ল্যাব চকরিয়া ২০১৫-১৬, সার্ভ ফিজিউথেরাপী ২০১৬-১৭, কবির ডেন্টাল কেয়ার ২০১৮-১৯, মর্ডান ডেন্টাল কিউর ২০১৮-১৯, ডিজিটাল ডেন্টাল সার্জারী ২০১৬-১৭, মা আয়েশা ডেন্টাল চিকিৎসালয় চকরিয়া ২০১৬-১৭, চকরিয়া ডিজিটাল ডায়গনষ্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল ২০১৬-১৭, হিল সাইড প্যাথলজি ২০১৬-১৭, বৈশাখী ল্যাব ২০১৬-১৭, পপুলার ল্যাব ২০১৬-১৭, কেয়া ডেন্টাল কিউর ২০১৫-১৬, চকরিয়া ফিজিউ থেরাপী ২০১৬-১৭, একুশে ডায়গনষ্টিক হাসপাতাল ২০১৬-১৭, সূর্যের হাসি ক্লিনিক চকরিয়া ২০১৬-১৭, চকরিয়া ইউনিক হাসপাতাল ২০১৮-১৯, আছিয়া মেমোরিয়াল হাসপাতাল ২০১৮-১৯, সিটি ডেন্টাল কেয়ার ২০১৬-১৭, কেয়া ডিজিটাল ফিজিউথেরাপী ২০১৬-১৭, শেফা প্যাথলজি ২০১৬-১৭, চকরিয়া ডিজিটাল সেন্টার ২০১৯-২০, লাইফ ডেন্টাল কেয়ার ২০১৬-১৭, ফ্যামেলি ডেন্টাল কেয়ার ২০১৬-১৭ এর লাইসেন্স মেয়াদোত্তীর্ন হয়েছে।
এছাড়া এসব তালিকার বাহিরে রয়েছে অনেক নাম জানা অজনা প্রতিষ্টান। সরকার দলের নাম ভাঙ্গিয়ে চলছে রমরমা বানিজ্য। প্রতিদিন হয়রানীর শিকার হয়ে পড়ছেন অসংখ্যা মানুষ।
স্থানীয় সচেতন লোকজন অভিযোগ করেছেন, সরকারী হাসপাতালের ডাক্তাররা হাসপাতালের দায়িত্ব শেষে নিজেদের কোয়াটারে প্রাইভেট চিকিৎসা না করে বিভিন্ন ডায়গনষ্টিট সেন্টার বা প্রাইভেট হাসপাতালে বসে প্রাইভেট চিকিৎসা বানিজ্য করে আসছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠান গুলো অনৈতিক ভাবে মোটাতাজা করণ হচ্ছে। অন্যদিকে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা লোকজন প্রতারিত হচ্ছে।
কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিসের হিসাবে মতে জেলায় ১১৭টি প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং ডায়গনষ্টিক সেন্টার আছে। কিন্তু তারমধ্যে মাত্র কয়েকটি ছাড়া বেশির ভাগ প্রাইভেট হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ নেই। অনেকে আবার ৫ বছর পর্যন্তও নবায়ন নেই। তবুও দিব্যি চলছে সেসব হাসপাতাল এবং ডায়গনষ্টিক সেন্টার। আবার এসব প্রাইভেট হাসপাতালে সরকারি যেসব সুযোগ সুবিধা থাকার কথা তার লেশমাত্র নেই। শুধু মাত্র ব্যবসায়িক মানসিকতা নিয়েই চলছে জেলা জুড়ে এসব হাসপাতাল। এতে স্বাস্থ্যসেবার বদলে অতিরিক্ত টাকা খরচ হচ্ছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্বাস্থ্য প্রশাসন সংশ্লিষ্টরা জানান, এখানে সব অনিয়ম নিয়মে পরিনত হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী লাইসেন্স ছাড়া একদিন হাসপাতাল চালাতে পারেনা। আবার লাইসেন্স নবায়ন করতে অনেক সরকারি নির্দেশনা আছে যেগুলো বেশিরভাগ হাসপাতালে নেই।মূলত: টাকার জোরে এখানে সব কিছু হয়। আবার স্বাস্থ্যখাত চালায় এমন নেতারা এগুলো নিয়ন্ত্রন করে স্বাস্থ্য প্রশাসন চাইলেও কিছু করতে পারেনা। মাঝে মধ্যে নামে মাত্র কিছু অভিযান যান হয়। তাদের দাবী শর্ত পূরণ না করলেও এসব হাসপাতালে প্রতি নিয়ত টাকা গুণতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
এ ব্যপারে কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডাঃ মাহাবুবুর রহমান চকরিয়া নিউজকে বলেন, অনেকে আবেদন করেছে তবে সেখানে ঢাকা থেকে পরিদর্শন করতে আসাসহ অনেক নিয়ম আছে সেটার কারনে হয়তো কিছুটা সমস্যা হচ্ছে তবে অনেকের দেখা যাচ্ছে ৩ বা ৫ বছরের বেশী সময় ধরে নবায়ন নাই, এটা কোন ভাবেই গ্রহন যোগ্য নয়। যারা লাইসেন্স এখনো নবায়ন করেনি খুবই দ্রুত সে সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।
পাঠকের মতামত: