স্টাফ রিপোর্টার, চকরিয়া :: কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার চিরিংগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল হোসেন চৌধুরীর লোকজনের বিরুদ্ধে চাঁদা না দেওয়ায় মুজিব বর্ষের বাড়িতে গুলিবর্ষণ, দোকান ভাংচুর ও চিংড়ি ঘেরে লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ অবস্থায় আতঙ্কিত ভুক্তভোগী জনসাধারণ প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ চেয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের রামপুর ৮নং ওয়ার্ডের এলাকাবাসী প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করেছে। অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে কয়েকশত নারীপুরুষ এলাকবাসি অংশগ্রহণ করেন।
ভুক্তভোগী চিংড়ি চাষি সাহারবিল ইউনিয়নের রামপুর এলাকার লুৎফর রহমান জানান, চকরিয়া উপজেলার চিংড়িজোন রামপুরে আমার মালিকানাধীন চিংড়ি ঘের থেকে চাঁদা দাবি করেন চিরিংগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল হোসেন চৌধুরী। দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দেয়ায় চেয়ারম্যানের ছত্রছায়ায় গত রোববার দিবাগত রাতে জাহাঙ্গীর ও নেজামের নেতৃত্বে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ঘেরে ব্যাপক লুটপাট চালিয়ে পাশে মুজিব বর্ষের বাড়িতে গুলিবর্ষণ ও পাশ্ববর্তী কয়েকটি দোকানে লুটপাট- ভাংচুর করেন।
এসময় তাঁরা পরপর কয়েকটি কয়েক রাউন্ড গুলি করেন। এ ঘটনায় এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে। গুলি শব্দে ও সন্ত্রাসীদের দাপাদাপিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এলাকার ঘুমন্ত সাধারণ মানুষ। হামলার একপর্যায়ে তাঁরা চাঁদা না দিলে আমার চিংড়ি ঘের জবরদখলে নেবে বলে হুমকি দেন।
ঘের মালিক লুৎফর রহমান অভিযোগ করে জানান, ইউপি চেয়ারম্যান জামাল চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে সহযোগী জাহাঙ্গীর ও নাসিরের সহায়তায় রামপুর এলাকার চিহ্নিত বোমাবাজ সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মাছের ঘেরে থেকে টাকা চাঁদা দাবি করে।
বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করলে। সর্বশেষ গত রোববার ১৫ অক্টোবর রাতে আমার চিংড়ি ঘেরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক লুটপাটের পর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর করে আমার ৫ লক্ষ টাকা ক্ষয়ক্ষতির করেন।
প্রতিবাদ সভায় ঘের মালিক লুৎফর রহমান আরও জানান, আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর ও লুটপাটের পর এখন হুমকি দিচ্ছে তাঁরা আমার মৎস্য ঘের জবরদখল ও লুটপাটের করবে। আমাকে এবং পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশসহ বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতি করবে বলেও হুমকি দিচ্ছে।
এ অবস্থায় আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। নিরাপত্তার পাশাপাশি আমার মালিকানাধীন চিংড়ি ঘেরটি পুনরুদ্ধার এবং হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।
মুজিববর্ষের উপহারের ঘরের বাসিন্দা ছায়রা বেগম বলেন, আমরা খুবই আতংকে দিনাতিপাত করছি। বঙ্গবন্ধুর কন্যার দেয়া মুজিব বর্ষের ঘরে শান্তিপূর্ণ বসবাস করতে পারছিনা সন্ত্রাসীদের কারণে।
চিরিংগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল হোসেন চৌধুরীর কাছে চাঁদাদাবী ও গুলিবর্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সন্ত্রাস নির্মূলে সবসময় কাজ করে যাচ্ছি। আমার নেতৃত্বে কোন বাহিনী হামলা করেনি। যারা হামলা করেছে তারা চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাদের আইনের আওতায় আনা হোক আমিও চাই।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদ চকরিয়া নিউজকে বলেন, এখনো কেউ থানায় অভিযোগ দায়ের করে নাই। অভিযোগ পেলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পাঠকের মতামত: