ঢাকা,সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় বিএনপির তিন নেতাকর্মী আটক

এম নুরুদ্দোজা, চকরিয়া :

আগামী ৮ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা করবেন ঢাকার পঞ্চম জজ আদালত। রায়কে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। বিএনপি বলছে, ওইদিন রাজপথে ফয়সালার দিন। আওয়ামী লীগ বলছে, বিএনপি যদি রায় ঘোষণার দিন বিশৃঙ্খলা করে তার জবাব দিতে আওয়ামী লীগও প্রস্তুত। ওইদিন যাতে বিএনপির চেয়ারপারর্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মামলার রায়কে ঘিরে বিএনপির নেতাকর্মীরা বিশৃঙ্খলা তৈরী করতে না পারে সেইজন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছেন কক্সবাজারের চকরিয়া থানা পুলিশ। ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মামলার রায়কে ঘিরে হার্টলাইনে অবস্থান নিয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে সম্ভাব্য বিশৃঙ্খলকারীদের গ্রেফতারে সাড়াশি অভিযানে নেমেছে পুলিশ।

সর্বশেষ রোববার ভোররাতে থানা পুলিশের একাধিক টিম অভিযান পরিচালনা করেছে উপজেলা ও পৌরসভার বিভিন্ন জনপদে। অভিযানে পুলিশ বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের তিন নেতাকে আটক করেছে। আটককৃতরা হলেন চকরিয়া পৌরসভা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কামরুল হাসান জাস্টিস ও চকরিয়া পৌরসভা যুবদলের সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম।

রোরবার রাতে কামরুল ইসলামকে চকরিয়া পৌরসভার ৩নম্বর ওয়ার্ডের ফুলতলা ও সাইফুল ইসলামকে পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডের মাস্টারপাড়াস্থ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল সোমবার দুপুরে তাদেরকে চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। আদালত জামিন না মঞ্জুর করে তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অপরদিকে গতকাল সোমবার সন্ধ্যার দিকে গ্রেফতার করা হয় পৌর বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিনকে।

আদালত সুত্রে জানা গেছে, বিএনপি-জামায়াত জোটের ২০০১-২০০৬ মেয়াদের সরকারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলাটি করে দুদক।

অভিযোগ প্রমাণিত হলে মামলায় খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদন্ড হতে পারে। সেক্ষেত্রে তিনি আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়ার অযোগ্য হয়ে পড়বেন। এ প্রেক্ষাপটে রায়কে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন।

জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারর্সন বেগম খালেদা জিয়ার মামলার রায়কে ঘিরে ওইদিন সারাদেশের মতো কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় কেন্দ্রীয় সিদ্বান্তের আওতায় আন্দোলনের কর্মসুচিতে অংশ নিতে পারেন বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এতে বিশৃঙ্খলার ঘটনা যাতে না ঘটে সেই বিষয়টি মাথায় রেখে ইতোমধ্যে কঠোর অবস্থানে রয়েছে চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেই আলোকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে সম্ভাব্য বিশৃঙ্খলাকারীদের গ্রেফতারে অভিযান জোরদার করা হয়েছে। অভিযানের অংশ হিসেবে পুলিশ রোববার রাতে ছাত্রদল ও যুবদলের দুই নেতাকে আটক করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার করেছে এক বিএনপি নেতাকে।

জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মামলার রায়কে ঘিরে যাতে চকরিয়া জনপদে কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা বা অঘটন না ঘটে সেইজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদা তৎপর রয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য বিশৃঙ্খলাকারীদের গ্রেফতারে ইতোমধ্যে নজরদারী বাড়ানো হয়েছে। এখানে কেউ বিশৃঙ্খলার চেষ্ঠা করলে তা কঠোরভাবে দমন করা হবে।

 

পাঠকের মতামত: