জারিন ইসলাম. মিশমা, নিজস্ব প্রতিবেদক ::
চকরিয়ায় সৌদিয়া পরিবহনের বেপরোয়া গতির একটি যাত্রীবাহি বাসের সাথে ডাম্পার (মিনি ট্রাক) গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে তিনজনে উন্নীত হয়েছে। এর আগে ঘটনাস্থলে ডাম্পারের চালক ও হেলপারসহ দুইজন নিহত হলেও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ডাম্পার গাড়ির শ্রমিক (লেবার) ছিলেন।
নিহতরা হলেন, পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বলিরপাড়া আবাসন এলাকার শফিউল আব্বাসের একমাত্র ছেলে মো. মানিক (৩২), একই এলাকার সাহাব উদ্দিনের ছেলে তারেকুল ইসলাম বাবু (২০) ও একই এলাকার আবু বক্করের ছেলে মমতাজ আহামদ (২৮)। তাদের মধ্যে মো. মানিক ডাম্পার গাড়ির ড্রাইভার ও তারেকুল ইসলাম বাবু ওই গাড়ির হেলপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মানিক ও বাবু ঘটনাস্থলে এবং মমতাজ আহামদ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
আজ শুক্রবার (১ জানুয়ারী) সকাল পৌনে ৯টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের বরইতলী রাস্তার মাথা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এদিকে একই এলাকার তিনজন ব্যক্তির মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ায় নিহতের পরিবারসহ পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নিহত তিনজনের নামাজে জানাযা শেষে তাদেরকে স্থাণীয় মোরারপাড়া সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
প্রসঙ্গত: শুক্রবার সকালে ইট আনার জন্য পেকুয়া থেকে ডাম্পার গাড়ি নিয়ে লামা উপজেলার ফাইতং এলাকায় যাচ্ছিলেন মো. মানিক ও তার সহযোগীরা। সকাল পৌনে ৯টার দিকে ডাম্পার গাড়িটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের বরইতলী রাস্তার মাথা এলাকায় পৌছলে পার্বত্যজেলা বান্দবানের আলীকদম থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রাম অভিমুখি সৌদিয়া পরিবহনের একটি বেপরোয়া গতির যাত্রীবাহি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ডাম্পার গাড়িটি দুমড়ে মুচড়ে গিয়ে ওই গাড়ির চালক ও হেলফারসহ দুইজনই ঘটনাস্থলে নিহত হয়। এ সময় দূর্ঘটনা কবলিত বাসটিও সড়কের পাশে খাদে পড়ে যায়।
দূর্ঘটনায় বাসের সাতজন যাত্রী ও ডাম্পারে একজন শ্রমিক আহত হয়। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত ডাম্পার গাড়ির শ্রমিক মমতাজ আহামদকে (২৮) আশংকাজনক অবস্থায় কক্সবাজার সদর হাসপাতাল ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এছাড়া দূর্ঘটনায় অন্যান্য আহত ব্যক্তিদের চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন, পার্বত্য লামা উপজেলার বাসিন্দা অতুল বড়–য়া (২২), নিমিতা বড়ুয়া (১৮),লাচিং মং (২৮), ও সফুরা খাতুন (৬৫)। এছাড়া আহত অন্যান্যদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। আহতরা সবাই যাত্রীবাহি সৌদিয়া পরিবহনের যাত্রী ছিলেন।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে চিরিংগা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর আনিসুর রহমান চকরিয়া নিউজকে বলেন, সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ডাম্পার গাড়ির চালক ও হেলফারকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে পুলিশ ফাঁড়িতে ও আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছি। পরে লাশ সনাক্তের পর নিহতদের পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুইটি জব্দ করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনী প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ।
পাঠকের মতামত: