ঢাকা,শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় বন্দুকযুদ্ধে অস্ত্র-গুলি নিয়ে ধৃত দুজনসহ আটজনের বিরুদ্ধে তিন মামলা র‌্যাবের

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ কক্সবাজারের চকরিয়ার চিংড়িজোনে সশস্ত্র ডাকাতদলের সঙ্গে র‌্যাবের দীর্ঘক্ষণ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় থানায় পৃথক তিনটি মামলা রুজু করা হয়েছে র‌্যাবের পক্ষ থেকে। তন্মধ্যে একটি অস্ত্র, হত্যা ও সরকারি কাজে বাঁধা, র‌্যাব সদস্যদের আঘাতসহ হত্যাচেষ্টার ধারায়।

র‌্যাব-১৫ সিপিএসসি এর নায়েক সুবেদার মো. হারুন অর রশিদ বাদী হয়ে মামলাগুলো দায়ের করেন। মামলায় এজাহারনামীয় আসামী করা হয়েছে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনার সময় অস্ত্র-গোলাবারুদসহ ধৃত দুই জনকে। এছাড়াও আরো ৬ জনকে অজ্ঞাত আসামী দেখিয়েছে র‌্যাব।

মামলার এজাহারনামীয় আসামীরা হলেন-কক্সবাজারের মহেশখালীর শাপলাপুর ইউনিয়নের ছয় নম্বর ওয়ার্ডের পুচ্ছরি পাড়ার মৃত নজির আহমদের ছেলে আবুল কালাম (৪৫) ও চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের মল্লিক ছোবহান হাজিপাড়ার মৃত আবদুর রউফের ছেলে শাহনেওয়াজ টিপু (৪০)।

সেদিন র‌্যাবের সঙ্গে সশস্ত্র ডাকাতদলের মধ্যে চলা বন্দুকযুদ্ধে নিহত মহেশখালীর শাপলাপুর ইউনিয়নের মুকবেকী গ্রামের মৃত আমির হোছাইনের ছেলে মো. ইউনুস প্রকাশ কালু (৪০) ও চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের রিংভং ছগিরশাহ কাটার নারায়ণ জলদাসের ছেলে বাবুল জলদাস (৩৫)।

র‌্যাবের পক্ষ থেকে আজ মঙ্গলবার চকরিয়া থানায় রুজুকৃত মামলার এজাহারে ধৃত দুইজনসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৬ জন এবং বন্দুকযুদ্ধের সময় নিহত দুইজন সশস্ত্র ডাকাতদলের সক্রিয় সদস্য এবং চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তারা বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘসময় ধরে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড, ডাকাতি ও এলাকাবাসীকে জিম্মি করে থাকে।

এদিকে পুলিশ জানায়, নিহত দুইজনের মধ্যে মহেশখালীর শাপলাপুরের মুকবেকী গ্রামের মো. ইউনুস প্রকাশ কালুর বিরুদ্ধে আগে থেকে মারামারি ও চুরির ধারায় দুটি মামলা রয়েছে। নিহত অপরজন বাবুল জলদাসের বিরুদ্ধে একটি প্রতারণা মামলা ছিল। পুলিশের ক্রাইম ডাটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিডিএমএস) ও পিসিপিআরে দুইজনের ব্যাপারে এই তথ্য সংরক্ষিত রয়েছে।

সূত্র জানায়, চিংড়িপ্রকল্প দখল করতে গিয়ে সেদিন রাতে প্রকল্প এলাকায় ছাগল জবাই করে ভূরিভোজেরও আয়োজন করে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। সেটি কার বাহিনী এবং সেখানে কারা কারা ছিল তা নিশ্চিত করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

তবে গণমাধ্যমে কক্সবাজার জেলা পরিষদ সদস্য আবু তৈয়বকে ঘটনায় সাথে জড়ানোর প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি। আজ মঙ্গলবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি উপরোক্ত ঘটনার সাথে বিন্দুমাত্র সম্পৃক্ত নন এবং যারা সেই রাতে ছাগল জবাই করে ভুরিভোজ করেছেন তারাই ওই চিংড়িপ্রকল্পটি জবর-দখলের চেষ্টা চালিয়েছিল। তখন র‌্যাবের সাথে তারা গোলাগুলিতে লিপ্ত হয়েছিল বলেও দাবি তাঁর।

অপরদিকে নিহত বাবুল জলদাসের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তিনি কোন ডাকাত-সন্ত্রাসীদলের সদস্য নন। তিনি রাতে নদীতে ঝাঁকি জাল বসিয়ে মাছ ধরে সংসারের ভরণ-পোষণ চালাতেন। র‌্যাবের সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনা চলাকালে ভীতসন্ত্রস্থ হয়ে নিরাপদ দূরত্বে চলে যাওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এনিয়ে নিজ গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। একমাত্র উপার্জনকারী বাবুল জলদাস মারা যাওয়ায় পরিবারের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তিন সন্তানকে নিয়ে চোখেমুখে অন্ধকার দেখছেন স্ত্রী।

চকরিয়া থানার ওসি মো. ওমমান গণি জানান, র‌্যাবের পক্ষ থেকে পৃথক তিনটি এজাহার এবং ধৃত দুইজনকে উদ্ধারকৃত অস্ত্র-গোলাবারুদসহ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। মামলাগুলো রুজুর পর সোপর্দকৃত দুইজনকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত: