চকরিয়া পৌরসদরের মার্কেট গুলোতে তৈরী পোষাক ও কাপড়ের দোকানে চলছে গলাকাটা বানিজ্য
চকরিয়া প্রতিনিধি ::
চলতি রমজান মাসে ভোগ্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষের চেষ্টার কমতি নেই। ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কঠোর নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে ভোগ্যপণ্যের সঠিক মূল্য নির্ধারণপূর্বক তা দোকানের সামনে প্রদর্শন করা হচ্ছে। অপরদিকে পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী মাংস বিক্রেতাদেরও কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে হাড়বিহীন প্রতিকেজি গরুর মাংস ৫০০ টাকায় বিক্রি করতে। এই নির্দেশনা যারাই অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এজন্য একটি মনিটরিং সেলও করা হয়েছে উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার পক্ষ থেকে। এদিকে চকরিয়া পৌরসদরের মার্কেট গুলোতে তৈরী পোষাক ও কাপড়ের দোকানে চলছে গলাকাটা বানিজ্য। এ মুহুর্তে চকরিয়া সদরের মার্কেট গুলোতে প্রশাসনের নজরদারী বাড়ানো দরকার বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ক্রেতারা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান বলেন, ‘রমজান মাস শুরুর বেশ কয়েকদিন আগে থেকে একাধিকবার পৌরশহর চিরিঙ্গাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় ব্যবসায়ীদের সতর্ক এবং কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয় প্রতিটি ভোগ্যপণ্যের সঠিক মূল্যতালিকা তৈরি করে দোকানের সামনে প্রদর্শিত করতে। যাতে একজন ক্রেতা দোকানে গেলেই জানতে পারে কোন পণ্যের কত মূল্য।’
ইউএনও বলেন, ‘রমজান মাসের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখাসহ সার্বিক বিষয়ে ব্যবসায়ীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করার সময়ও ভোগ্যপণ্য বিক্রির সঠিক মূল্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে।’
চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, ‘গত বুধবার পৌরসভার সম্মেলনকক্ষে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে বাজার মনিটরিং কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। সেখানে মাংসের দোকানে এখন থেকে হাড়বিহীন গরুর মাংস প্রতিকেজি ৫০০ টাকা এবং ২৫০ গ্রাম হাড়সহ প্রতিকেজি ৪৩০ টাকায় বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়।’
মেয়র আরো বলেন, ‘নির্ধারণ করে দেওয়া দাম থেকে কেউ একটাকা অতিরিক্ত এবং ওজনে কারচুপি করলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পবিত্র মাহে রমজান সামনে রেখে চকরিয়া পৌরসভার সকল কাঁচাবাজার ও মাংসের দোকানদারদের নিয়ে অনুষ্ঠিত জরুরী সভায় মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, ‘রমজান মাসে মাছ মাংস, তরিতরকারী ও নিত্যপন্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। প্রতিটি দোকানে পণ্যমূল্য টাঙিয়ে রাখতে হবে। পণ্যবিক্রিকালে ডিজিটাল পরিমাপ যন্ত্রের মাধ্যমে সঠিক ওজন নিশ্চিত করতে হবে।’
অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান, বিশেষ অতিথি ছিলেন চকরিয়া থানার ওসি মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ইয়াছির আরাফাত, চকরিয়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র বশিরুল আইয়ুব, সচিব মাস-উদ মোরশেদ, কাউন্সিলর আলহাজ মছুদুল হক মধু, জাফর আলম কালু, জিয়াবুল হক, ফোরকানুল ইসলাম তিতু, নজরুল ইসলাম ও জামাল উদ্দিন এবং ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে চকরিয়া পৌরসভার উদ্যোগে বাজার মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত কমিটিতে মেয়র আলমগীর চৌধুরীকে সভাপতি, পৌরসভার প্যানেল মেয়র বশিরুল আইয়ুব, পৌরসভার কাউন্সিলর আলহাজ মকছুদুল হক মধু, রেজাউল করিম, জিয়াবুল হক, মুজিবুল হক মুজিব ও জাফর আলম কালুকে সদস্য এবং পৌরসভার সচিব মাস-উদ মোরশেদকে সদস্যসচিব ও সোসাইটি কাঁচা বাজার মার্কেট মালিক মুজিবুল হক মনু, চকরিয়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রেজাউল হক সওদাগর, চকরিয়া বিমানবন্দর রোড ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম. নুরুস শফিকে সদস্য করে ১৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পাঠকের মতামত: