নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ অমান্য করে দিনেদুপুরে সরকারি স্কুলের খেলার মাঠ দখলে নিয়েছে স্থানীয় একটি দখলবাজ চক্র। উপজেলার লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের আমজাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটেছে এ ঘটনা। এ নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থী অভিভাবক মহলে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
আমজাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হামিজিুর রহমান ছমদী বলেন, চকরিয়া উপজেলার লক্ষ্যারচর মৌজার আরএস খতিয়ান নং ১৩, আরএস দাগ নং ১৬১৬, বিএস ৭৭৩ খতিয়ানের বিএস ১৯৯৬দাগের ৩০ শতক জায়গা আমজাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্পত্তি। উলেখিত সম্পত্তির বেশিরভাগ অংশে বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত অবস্থান এবং অল্প পরিমাণ জমিতে খেলার মাঠ ও খোলা জায়গা। সেখানে শিক্ষার্থীরা দৈনিক সমাবেশ ও খেলাধুলা করে আসতো। বর্তমানে আমাদের বিদ্যালয়ে অন্তত দুইশতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত রয়েছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ পাঁচবছর আগে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ ও খোলা জায়গাটি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠে স্থানীয় একটি চক্র।
এ ঘটনায় দখলচেষ্ঠায় জড়িত লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের রোস্তমআলী চৌধুরী পাড়ার মৃত আকবর আহমদের ছেলে আইয়ুব মোহাম্মদ ইকবালকে আসামি করে ২০২০ সালে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ কক্সবাজারের যুগ্ম জেলা জজ আদালতে একটি অপর মামলা (নং ৪১৪/২০) রুজু করেন। পরবর্তীতে মামলাটি চকরিয়াস্থ সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে অপর মামলা (১৩২২/২১) বিচারধীন রয়েছে। সেখানে বিবাদি আইয়ুব মোহাম্মদ ইকবাল মামলার ধার্য্য তারিখে হাজিরাও দিয়ে আসছেন।
প্রধান শিক্ষক হাজিফুর রহমান ছমদী বলেন, আদালতে মামলাটি চলমান থাকাবস্থায় সর্বশেষ ১ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত বিবাদি ইকবাল তিনটি ট্রাক গাড়িতে করে ইট বালু এনে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে মজুদ করে। এখন বিদ্যালয়ের ওই জায়গায় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের জন্য তোড়জোড় শুরু করেছে। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান ছমদী বাদি হয়ে কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে নতুন একটি এমআর মামলা ( নং ১৭৩১) রুজু করেছেন। সেখানে অভিযুক্ত আইয়ুব মোহাম্মদ ইকবালকে আসামি করা হয়েছে। আদালত বাদির আবদেন আমলে নিয়ে চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে ও থানার ওসিকে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান ছমদী বিদ্যালয়ের সরকারি সম্পত্তি রক্ষাকল্পে সম্প্রতি চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ চেয়ে লিখিত আবেদন করেন। এরই প্রেক্ষিতে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) জেপি দেওয়ান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এসময় তিনি স্কুল কতৃপক্ষ ও অভিযুক্ত পক্ষকে স্কুলের মাঠে কোনধরনের কাজ না করতে বারণ করেন। প্রধান শিক্ষক বলেন, অভিযুক্ত আইয়ুব ইকবাল একই খতিয়ানের আবদুল আলীর ছেলে ফজল করিম ও সোলতান আহমদের স্ত্রী ছমুদা খাতুনের অংশ কিনেন এবং দখলেও আছেন। তারা অন্যদাগে ভোগদখলে থাকলেও লোভের বশবর্তী হয়ে স্কুলের মাঠ দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, স্কুলের খেলার মাঠ দখল চেষ্টার অভিযোগ পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। সেখানে স্কুল কতৃপক্ষ ও অভিযুক্ত পক্ষের সঙ্গে কথা বলি। যেহেতু বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা আছে, সেইজন্য দু’পক্ষকে সেখানে কোনধরনের কাজ না করতে বারণ করেছি।
তিনি বলেন, এরপরও কেউ সরকারি স্কুলের মাঠ দখলে নিয়ে অবৈধ স্থাপনা করতে চেষ্টা করলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ##
পাঠকের মতামত: