ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় টমটম চালক হত্যাকাণ্ডের মুলহোতাসহ তিন আসামি গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বদরখালি ইউনিয়নের কুতুবদিয়াপাড়া এলাকায় টমটম চালক মোহাম্মদ জিসান হত্যাকান্ডের আলোচিত ঘটনায় মামলা দায়েরের ১৩ ঘণ্টার মধ্যে মূলহোতা বাবু’সহ তিন আসামিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৫। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক সাড়ে তিনটার দিকে র‌্যাবের একটি চৌকস টিম মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের কুতুবদিয়াপাড়া এলাকার মো: জাহাঙ্গীর এর ছেলে এজাহারনামীয় আসামি ফাহাদ বাবু (১৯), আবু তাহের টুক্কুর ছেলে এজাহারনামীয় আসামি মোঃ সায়েম (২৩) ও মো: ইসমাইলের ছেলে সন্দিগ্ধ আসামি মোঃ মিজান (২০)।

অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ক্যাম্পের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: আবদুস সালাম চৌধুরী। তিনি বলেন, গত ২৭ নভেম্বর রাতে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডস্থ কুতুবদিয়াপাড়া এলাকায় টমটম চালক জিসান’কে পাশবিক নির্যাতন করে হত্যার ঘটনা ঘটে। হত্যাকারীরা মূলত বাবু’র নেতৃত্বে গড়ে উঠা স্থানীয় একটি গ্যাং এর সদস্য। যার প্রত্যেক সদস্য ১৮ থেকে ২১ বছর বয়সী।

তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত বাবু’র বাবা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় সে গ্যাংটি নিয়ন্ত্রণ করতো। এই গ্যাং এর সদস্যরা মাদক ব্যবসা, চুরি, ছিনতাই, মারামারিসহ সকল ধরণের অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। নিহত জিসান এই চক্রের রুবেল নামে একজন সদস্যের একটি অটো ভাড়ায় চালাতো। এই সুবাদে রুবেল প্রায়শই জিসানকে মাদক পরিবহনের জন্য চাপ দিত। কিন্তু জিসান তা করতে অস্বীকৃতি জানায়। ফলে জিসানের প্রতি এই চক্রের একটি ক্ষোভ তৈরী হয়। ঘটনার দিন জিসান রাত ১০ টার মধ্যে গাড়ি গ্যারেজে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও সে যাত্রী নিয়ে চকরিয়াতে যাওয়াতে আসতে দেরী হয়। জিসান যখন অটোটি নিয়ে গ্যারেজে আসে তখন রুবেল জিসানকে চুরির অপরাধ দেয় এবং বাবু’সহ চক্রের অন্য সদস্যদের গ্যারেজে ডেকে নিয়ে চালক জিসানকে রাতভর কিল, ঘুষি, লাথিসহ লোহার রড ও কাঠের বাঠাম দিয়ে নির্মমভাবে পাশবিক নির্যাতন করে।

একপর্যায়ে ভিকটিমের এর অবস্থা আশংকাজনক হলে তারা স্থানীয় মেম্বারকে কল দিয়ে ভিকটিমকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। পরবর্তীতে মেম্বার পরিবারের সদস্যসহ গ্যারেজে এসে ভিকটিমকে মুমূর্ষু অবস্থায় পায় এবং দ্রুত তাকে চকরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সালাম চৌধুরী বলেন, ঘটনার পরবর্তী নিহতের বাবা বাদী হয়ে গত ২৯ নভেম্বর চকরিয়া থানায় এজাহানামীয় ০৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।
এরপর বিষয়টি সর্ম্পকে অবগত হয়ে র‌্যাব-১৫, কক্সবাজার ছায়াতদন্ত শুরু করেন এবং ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করেন। এরই অংশ হিসেবে ৩০ নভেম্বর দিবাগত রাত আনুমানিক সাড়ে তিনটার দিকে র‌্যাবের একটি চৌকস দল কক্সবাজারের মহেশখালী থানাধীন মাতারবাড়ি পশ্চিম সিকপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে মূলহোতা বাবু’সহ তিনজন আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে চকরিয়া থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ##

পাঠকের মতামত: