মো. সাইফুল ইসলাম খোকন, চকরিয়া :: কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ফুলছড়ি রেঞ্জের আওতাধীন চকরিয়া উপজেলা খুটাখালী ইউনিয়নের মেধাকচ্ছপিয়া বিটে শত বর্ষী গর্জন বাগানকে জাতীয় উদ্যানে রূপান্তরিত করার উদ্যোগ এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। ওই বিটের অসংখ্য মাদার ট্রি (গর্জন গাছ) বোট তৈরীর কাজে ব্যবহারের জন্য সংঘবদ্ধ কাঠচোরের দল নির্বিচারে প্রতিনিয়ত উজাড় করে নিয়ে যাচ্ছে।
এসব মূল্যবান গাছ পাচারে জড়িত রয়েছে বন বিভাগের দূনীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ভিলিজারগণ। বন বিভাগের লিপিবদ্ধ রেজিষ্ট্রারে এবিটে গত ৫ বছর আগে কি পরিমান খাড়া গাছ ছিল তা তদন্ত করে দেখা হলে এ বিট থেকে কি পরিমান গাছ উজাড় হয়েছে তা উৎঘাটন সম্ভব হবে বলে দাবী করেছেন এলাকার পরিবেশ সচেতন লোকজন।
পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক লাগোয়া চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী মেদাকচ্ছপিয়া বিটে জাতীয় উদ্যানে দেশের প্রথম ইকো অ্যাডভেঞ্চার করার পরিকল্পনা নিয়ে ছিল বন বিভাগ। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তা কার্যকর হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে, বেসরকারী সংস্থা ইউউএসএ আইডি’র নেকম-ক্রেল প্রকল্পের আওতায় এ বিটে বিভিন্ন প্রকল্প দেখিয়ে সম্প্রতি ৬ লাখ টাকা তছরুপ করেছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, ৩৯৬ হেক্টর বনভূমিতে ইকো ট্যুরিজম বাস্তবায়িত হলে তা পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করার পাশাপাশি এখানে পর্যটক ও দর্শনার্থীরা দেখতে পেত মেছোবাঘ, হাতির পাল, বানর, উল্টোলেজ বানর, বনবিড়াল, খাটাশসহ শত প্রকারের বন্যপ্রাণী, বন মোরগ, শুশুক, ইগল, সবুজ ঠোঁট ফিঙে, চিল,শ্যামাসহ দেড় শতাধিক প্রজাতির পাখি, গুইসাপ, হ্যাজা সাপসহ নানা প্রজাতির সাপ ও বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণী দেখাসহ সাইক্লিন, হ্রদে বোটিং, ফিশিং, টি হাউস, ইকো হাউস, তাঁবু জলসা, হেমগ, গাছে ঝোলা, ট্রেল হাইকিং, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার অন্যতম। পর্যটক-দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা কর্মীও নিয়োগ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু এ পর্যন্ত এ প্রকল্পটি বাস্তবে রূপ পায়নি।
প্রকল্পটি পরিচালনা করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল, কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন মেদাকচ্ছপিয়া সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটি (সিএমসি)কে।
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফুলছড়ি রেঞ্জের মেধাকচ্ছপিয়া বিটের ৩৯৫.৯৩ হেক্টর বনভূমিতে ছিল বাংলাদেশের বৃহৎ মাদার গর্জন বাগান। বর্তমানে এ বাগানের অর্ধেকর বেশী মাদার গর্জন আর চোখে পড়েনা। চোরের দল যেসব গাছ এখনো খাড়া রয়েছে তা প্রতিনিয়ত কেটে নিয়ে যাচ্ছে বোটসহ বিভিন্ন নির্মাণ কাজে।
এ বাগানে মাদারট্রি গর্জন ছাড়াও ডুমুর, বহেড়া, অর্জুন, বাঁশঝাড়, বেত, বাদাম, ছাতিমসহ নানা প্রকারের গাছ রয়েছে। যা কক্সবাজারে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের আকৃষ্ট করে।
পাঠকের মতামত: