নিউজ ডেস্ক ::
দেশে করোনা ভাইরাস এবং পবিত্র রমজান মাসে সাধারণ মানুষ যাতে স্বল্প মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারে সেজন্য সরকার টিসিবির ডিলারের মাধ্যমে তা বিক্রি করে। দামে সাধারণ মানুষ একটু স্বস্তি নিতে আর্থিক ব্যয় সাশ্রয় করতে কক্সবাজারের ১৯ জন ডিলারকে নিয়োগ দেয়া হয়। ডিলাররা সরকারের নির্দেশনা না মানার কারণে অর্থাৎ টিসিবির পণ্য বিক্রি না করায় ১৮ জন ডিলারের লাইসেন্স বাতিল করেছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। নতুন করে ১৭ জনের তালিকা প্রণয়ন করে তাদের নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে মন্ত্রনালয়ে পাঠিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাহেদ ইকবাল।
তিনি বলেন, উক্ত ডিলাররা বেশ কয়েকবছর যাবৎ টিসিবির পণ্য বিক্রি বন্ধ রেখেছেন। তাদের নোটিশের মাধ্যমে অবগত করানো হলেও তা শুনেনি। ফলে তৎকালিন জেলা প্রশাসক তাদের লাইসেন্স বাতিলের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ পাঠান। ফলে মন্ত্রণালয় সম্প্রতি লাইসেন্স বাতিল করে জেলা প্রশাসনে চিঠি প্রেরণ করে।
তিনি বলেন- গতবছর রমজান মাসেও উক্ত ডিলাররা টিসিবির পণ্য বিক্রি করেনি। বর্তমানে কার্যকর রয়েছেন ৪ জন ডিলার। এরমধ্যে পুরাতন রয়েছেন ১ জন। সরকারি নির্দেশনা মেনে পণ্য বিক্রি করা কার্যকর ডিলাররা হলো সদরের বাংলাবাজারের কাদের এন্টারপ্রাইজ, শহরের মধ্যম টেকপাড়ার তাহনিক এন্টারপ্রাইজ, টেকপাড়ার নিলুফা এন্টারপ্রাইজ, সমিতিপাড়ার তাহেরা এন্টারপ্রাইজ, ঈদগাও এর মাশরুর এন্টারপ্রাইজ।
এদিকে মন্ত্রণালয়ের আদেশে বাতিল হওয়া টিসিবির ডিলাররা হলেন ২০০৯ সালে নিয়োগ পাওয়া শহরের পৌরসভা কুতুবদিয়া পাড়ার ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ আতিক উল্লাহ, বিমান বন্দর সড়কের জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মোঃ রহিম উদ্দিন বা মের্সাস রহিম ট্রেডার্স, রুমালিয়ারছড়ার আনোয়ার এন্ড ব্রাদার্স, ঈদগাও এর হামিদ এন্ড ব্রাদার্স, পেকুয়া নতুন বাহারছড়ার মের্সাস এন এম ট্রেডার্স, চকরিয়ার কাকারার মের্সাস মুছা এন্ড ব্রার্দাস, কোর্ট বিল্ডিং এলাকার মের্সাস এমএন আফসার, একই এলাকার সজিব এন্ড সন্স, কুতুবদিয়া উপজেলার যথাক্রমে মের্সাস নাহার এন্টারপ্রাইজ, লেমশীখালীর মেসার্স বিছমিল্লাহ ট্রেডার্স, দক্ষিণ ধুরুং এলাকার শাহেদ এন্টারপ্রাইজ, রামুর মের্সাস মাস্টার বিল্ডার্স, আমিন বানিজ্য সংস্থা, জোয়ারিয়ানালার মের্সাস মাহবুবে ইলাহি, মহেশখালীতে গোরকঘাটায় ফরসুন ভ্যারাইটি ষ্টোর, মেসার্স সাজ্জাদ এন্টারপ্রাইজ, উখিয়ার কালিয়াপাড়ার মেসার্স ইসহাক ট্রেডার্স, ভালুকিয়ায় মেসার্স ইস্কান্দার হোসেন চৌধুরী।
ডিলারদের অবহেলা এবং সরকারি নির্দেশনা না মানায় জেলায় টিসিবির (ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ) পণ্য বিক্রয়ের সুফল বঞ্চিত হয় জেলার করোনায় আতংকে থাকা দরিদ্র জনগোষ্ঠি। সরকার ২০০৯ সালের অক্টোবর এবং নভেম্বরে কক্সবাজার জেলায় ১৯ জন ডিলার নিয়োগ প্রদান করেন। সে সময় দলীয় নেতাকর্মীদের তদবিরে অতিষ্ঠ হয়ে অনেক আবেদনকারিদের মধ্যে সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষা করবে এমন লোককে বিবেচনায় এনে টিসিবির ডিলার নিয়োগ প্রদান করা হয়। করোনা মহামারিতে সরকার দরিদ্র অসহায় মানুষের সুবিধার্থে স্বল্প মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রির সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। কিন্তু উক্ত ডিলাররা টিসিবির পণ্য বিক্রি করেনি।
কক্সবাজার ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মোঃ ইমরান হোসেন জানান, টিসিবির পণ্যের পর্যাপ্ত চাহিদা রয়েছে। আমরা শহরের ৩টি পয়েন্টে তা বিক্রি করার জন্য ডিলারদের নির্দেশনা দিয়েছি। তিনি বলেন সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ি চিনি কেজি ৫৫ টাকা, মশুর ডাল ৫৫ টাকা কেজি, সয়াবিন লিটার ১০০ টাকা এবং পেঁয়াজ কেজি ২০ টাকা, খেজুর ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হয়। এ মুহুর্তে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে খেজুরের।
শহরের একজন ডিলারকে ট্রাকের মাধ্যমে বিক্রি করার নির্দেশও দেয়া হয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাহিদ ইকবাল বলেন- টিসিবির কার্যক্রম খুবই দরকারি একটি কর্মসূচি। যে সব ডিলার টিসিবির পণ্য বিক্রি করছেনা তাদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। নতুন সুপারিশকৃতদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হলে এটি আরো গতিশীল হবে। সাধারণ মানুষ এর সুফল ভোগ করতে পারবে।
পাঠকের মতামত: