ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ার মহাসড়ক নিষিদ্ধ যানবাহনের দখলে !

মোঃ নিজাম উদ্দিন, চকরিয়া :  সরকার ঘোষিত নিষিদ্ধ ধীরগতি যানবাহনগুলো দখলে নিয়েছে মহাসড়ক। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক তিন চাকার (ত্রি-হুইলার) যানবাহন চলাচল একেবারেই নিষিদ্ধ করলেও ব্যস্ততম মহাসড়কে রাম রাজত্ব কায়েম করছে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলা আওতাধীন হারবাং, বরইতলী, ফাঁসিয়াখালী, ডুলাহাজারা, খুটাখালীর মহাসড়কে ডজনাধিক দুর্ঘটনায় অর্ধশত লোকজন হতাহত হয়েছে।

এ দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ ছিল নিষিদ্ধ ঘোষিত টমটম, লেগুনা ও বালু বহনকারী অবৈধ ডাম্পার। ডুলাহাজারা ও খুটাখালীর ১০-১২টি বালু মহাল থেকে প্রতিদিন কয়েকশত বালুর ডাম্পার মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করছে। এসব বালুর ডাম্পারের কোনপ্রকার বৈধ লাইসেন্স, ইনসিউরেন্স, রোড় পারমিট, ফিটনেস সার্টিফিকেট নেই। কিন্তু এ পরিবহনগুলো মহাসড়কে ঘটাচ্ছে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা। চলতি বছরের ৩ মার্চ ডুলাহাজারা কলেজ গেইটে বালুর ডাম্পারের কারণে কলেজের মেধাবী ছাত্র রিপন (১৮) নিহত হয়। বালুর ডম্পার চাপায় ৩০ মার্চ তারিখে মহাসড়কের পাগলিরবিলে নিহত হয় এসএসসি ফলপ্রার্থী মোঃ রাজিব। ডুলাহাজারা কলেজ সংলগ্ন মহাসড়কে এর আগে ২২ জানুয়ারী বেপরোয়া বালুর ডাম্পার হায়েস গাড়িকে ধাক্কা দিলে মোঃ আবদুল্লাহ্ (২৯) নামের যুবক নিহত হয়। এসময়ের গুরুতর আহত এক রিকসা চালক এখনো পঙ্গুত্ব জীবনযাপন করছে। সর্বশেষ চকরিয়ার হারবাং বরইতলী এলাকায় টমটম লেগুনায় পৃথক দুর্ঘটনায় ১১জন যাত্রী নিহত হয়। এত দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির পরও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজরদারী বাড়ছে না।চকরিয়ার মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি প্রতিনিয়ত টমটম আটক করে সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার টাকা করে আদায় করছে। এতে ফাঁড়ির আশপাশের মহাসড়ক কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আলমগীর হোসেন জানান অবৈধ বালুর ডাম্পার, নিষিদ্ধ লেগুনা, ম্যাজিক গাড়ি, অটো রিক্সার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রতিনিয়ত এসব অবৈধ পরিবহন আটক করে জরিমানা আদায় ও মামলা দেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান। অপরদিকে মহাসড়কে অভিযানের দেখা মিলছে না চিরিঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের।

সরেজমিনে চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী থেকে পৌর শহর পর্যন্ত দীর্ঘ চার কিলোমিটারের ব্যস্ততম মহাসড়কে অনবরত চলছে তিন চাকাযান টমটম। এসব নিষিদ্ধ অটোরিকশা, টমটম মহাসড়ক দখলে নেওয়ায় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে ভারী যানবাহনের। ফলে কক্সবাজার শহর থেকে আসা দুর পাল্লার যানবাহনগুলো চকরিয়া অতিক্রম করতে দীর্ঘক্ষণ সময় লাগছে এবং চরম হিমসিম পোহাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কোনরূপ ব্যবস্থা না নেওয়ায় জনমনে প্রশ্নের সৃষ্টি হচ্ছে। এব্যাপারে জানতে চিরিঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক সাঈদুল ইসলামের যোগাযোগ করা হলে ফোনের সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

হাইওয়ে পুলিশের চট্টগ্রামের দায়িত্বরত সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরহাদ বলেন, মহাসড়কে নিষিদ্ধ ঘোষিত যানবাহন ও লাইসেন্স ফিটনেস বিহীন পরিবহণ কিছুতেই চলাচল করতে দেওয়া যাবে না। এব্যাপরে উভয় ফাঁড়ির সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেবেন বলেও তিনি জানান।

পাঠকের মতামত: