নিজস্ব প্রতিবেদক :: আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম সমবায় প্রতিষ্ঠান বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন। তফসিল অনুযায়ী সমিতির ১২পদের বিপরীতে মোট ৩৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়েছেন প্রার্থীরা। নির্বাচনে সভাপতি পদে ৪জন, সহ-সভাপতি-৫জন, সম্পাদক পদে ৫জন এবং ৯টি বøকে পরিচালক পদে ২৪ জন প্রার্থী ভোট যুদ্ধে রয়েছেন।
নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে সভাপতি-পদে লড়ছেন ৪জন। তারা হলেন প্রবীণ সমবায়ি সাবেক তিনবারের সম্পাদক দেলোয়ার হোছাইন এমএ (গোলাপ ফুল), সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত আবদুল হান্নানের বড় ছেলে নুরে হাবিব তছলিম (ছাতা), বর্তমান কমিটির সভাপতি নুরুল আলম সিকদারের ছেলে ছরওয়ার আলম সিকদার (চেয়ার) ও মনজুর আলম।
সহ-সভাপতি পদে ভোটযুদ্ধে রয়েছেন বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি আলী মোহাম্মদ কাজল (বাই সাইকেল), আনছারুল করিম (মই), কামাল উদ্দীন বাবুল (হাঁস), মাস্টার মকবুল হোছাইন (কলসি) ও আহমদ উল্লাহ।
সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন পাঁচজন। তাদের মধ্যে ভোটের মাঠে রয়েছেন মোহাম্মদ আলী চৌধুরী (দেওয়াল ঘড়ি), এস্তেফাজুর রহমান (আনারস), মঈনউদ্দিন (চাকা)। অন্য দুইজন নজরুল ইসলাম ও আরিফ জুনায়েত রাসেল। এখানে মুলত ভোট যুদ্ধ হবে প্রথম তিনজনের মধ্যে।
সমিতির ৯টি বøক থেকে নির্বাচিত হবেন ৯জন পরিচালক। এখানে ৯টি পদের বিপরীতে ভোটযুদ্ধে রয়েছেন ২৪ জন প্রার্থী। তারা হলেন বর্তমান কমিটির সদস্য জসিম উদ্দিন টিটু, শাহাব উদ্দিন শাকিল, আব্দুল আজিজ, মোজাহার আহমদ, আবুল হাসনাত মো. পারভেজ, নাজেম উদ্দীন, কতুব উদ্দীন, মেম্বার বখতিয়ার উদ্দিন রুবেল, রেজাউল করিম বাদল, নাজিম উদ্দিন, জয়নাল আবদীন, নুরুল কাদের, মো বেলাল উদ্দীন, জিয়া উদ্দীন, হামিদ উল্লাহ, মো. নাছির উদ্দীন, জাফর আলম, এসএম শওকত ওসমান, সিরাজুল হক, মেজাফ্ফর আহমদ, কুতুব উদ্দীন সোহেল, আব্দুল কাদের মানিক, আহমদ আলী মাজু, মোহাম্মদ নুরুল কাইছার।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বদরখালী জনপদের চারদিকে এখন নির্বাচনী উত্তাপ বিরাজ করছে। উৎসবের আমেজ সাজ সাজ অবস্থা চলছে উপকূলীয় ইউনিয়ন বদরখালীতে। পরিস্থিতি দেখে যে কারো মনে হবে এখানে যেন জাতীয় নির্বাচনের উৎসব চলছে। উপনিবেশ সমবায় আইন অনুযায়ী তিন বছর পর পর অনুষ্টিত হয় সমিতির নির্বাচন।
বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় গেল দুইমাস আগে নির্বাচনের নতুন তফসিল ঘোষণা করা হয়। চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়ক। দুইজন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা যথাক্রমে চকরিয়া উপজেলা সমবায় অফিসার জাহাঙ্গীর আলম ও কক্সবাজার সদর উপজেলা সমবায় অফিসার মো.রমিজ আহমদ দায়িত্ব পালন করছেন।
এশিয়ার বৃহত্তম জনপদ কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বদরখালীতে ৫০ হাজার জনগোষ্টির সম্পদ বদরখালী সমবায় ও কৃষি উপনিবেশ সমিতি। এখানে মোট ভোটার ১৫০০ জন। তারা প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে আগামী তিনবছরের জন্য নতুন ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচিত করব্নে। অবশ্য তফসিল ঘোষণার পর পুরো বদরখালীজুড়ে ভোটার ও সাধারণ জনগণের মাখে উৎসব মুখর পরিবেশ লক্ষ্য করা গেছে। আর প্রার্থীরা প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের কাছে গিয়ে প্রচার প্রচারণা ও কুশল বিনিময়ে ব্যস্থ সময় পার করছেন।
শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, বদরখালী বাজার, গ্রামের অলিগলি প্রার্থীদের তোরণ ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন প্রার্থীরা তুমুল প্রচারনা চালাচ্ছেন। প্রতিদিনই প্রার্থীদের মাইকে আওয়াজ ও নির্বাচনী গানে মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো বদরখালী জনপদ। পাশাপাশি চলছে মিছিল ও সভা সমাবেশ।
সাবেক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী চৌধুরী বলেন, বিগত সময়ে দায়িত্বপালনকালে আমি সবার আগে সমিতির স্বার্থকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছে। চেষ্ঠা করেছি, সমিতির উন্নয়ন ও আয়েরখাতকে বাড়াতে। কাজ করেছি বদরখালীবাসির ভাগ্য উন্নয়নে।
সম্পাদক প্রার্থী এএম এস্তাফেজুর রহমান বলেন, আমি আশাবাদী সভ্যরা বিজয়ী করে বড়ভাই ইকবাল বদরীর অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করতে সুযোগ দেবেন।
অপর সম্পাদক প্রার্থী মঈন উদ্দিন বলেন, বদরখালী সমিতির সভ্যরা পরিবর্তন চান। সেই চেতনাকে ধারণ করে এবারের নির্বাচনে সমিতির স্বার্থ রক্ষা ও সভ্যদের অধিকার সুনিশ্চিতে আমাকে বিজয়ী করবে।
সভাপতি প্রার্থী দেলোয়ার হোছাইন এমএ বলেন, বদরখালী সমিতির ইতিহাসে প্রতিটি সংকটময়কালে সম্পাদক পদে সফলতার সঙ্গে দায়িত্বপালন করেছি। সমিতির স্বার্থে সব সংকট স্থায়ীভাবে মোকাবেলা করেছি। জটিলতা হলে আইনীভাবে মোকাবেলা করেছি। কোনদিন সমিতিকে পরাজিত হতে দেইনি। এখন দায়িত্বশীল নেতৃত্ব সংকটে পড়েছে বদরখালী সমিতি। সেই কারণে বহিরাগত দখলবাজরা বদরখালী সমিতির সম্পদ লুটে নিতে অপচেষ্ঠা চালাচ্ছে। আমি মনে করি, সংকটময় পরিস্থিতি উত্তোরণের জন্য বদরখালী সমিতির সভ্য পোষ্যরা ইনশালাহ এবারের নির্বাচনে আমাকে বিজয়ী করবেন।
বদরখালী সমিতির সাবেক সভাপতি ও প্রয়াত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হান্নান বিএ। শ্রেষ্ঠ সমবায়ি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পুরস্কারও পেয়েছেন আবদুল হান্নান। এবারের নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন সেই আবদুল হানান্ন মিয়ার বড় ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা নুরে হাবিব তছলিম। জানতে চাইলে নুরে হাবিব তছলিম বলেন, আমার বাবা মরহুম আবদুল হান্নান বিএ’র আর্দশ ধারণ করে বদরখালীবাসির সু:খ দু:খের সারথী হিসেবে কাজ করতে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। আমার বাবা যেমন বদরখালী সমিতিকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন, তেমনি বদরখালী ইউনিয়নবাসিকে আলোর পথে এগিয়ে নিয়েছেন। বদরখালী সমিতিকে উন্নয়ন করতে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর ছাতা মার্কায় ভোট দিয়ে এগিয়ে থাকুন।
পাঠকের মতামত: