এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: চকরিয়া উপজেলার উপকুলীয় সাতটি ইউনিয়নে চাষাবাদ এবং বর্ষামৌসুমে অতি বৃষ্টিতে সৃষ্ঠ বন্যার পানি চলাচল নিবিঘ্ন করতে অবিলম্বে সাহারবিল ইউনিয়নের চোয়াঁরফাড়ি স্লইচ গেইটটি মেরামতের দাবি তুলেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে সর্বস্তরের জনসাধারণ। দীর্ঘ বছর যাবত সংস্কার নেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতীবগুরুত্বপুর্ণ এই স্লুইচ গেইটটি। সংস্কারের অভাবে ইতোমধ্যে ভেঙ্গে গেছে স্লইচ গেইটের একাধিক জলকপাট।
অবশ্য বেশ কবছর ধরে চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় স্থানীয় সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদ ছোট-খাট মেরামতের মাধ্যমে স্লইচ গেইটটি সচল রেখেছে। তাতে শুস্ক মৌসুমে পানি প্রবাহ কোনমতে আটকে রাখা সম্ভব হলেও বর্ষামৌসুমে অতিবৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপকুলীয় অঞ্চলের সাতটি ইউনিয়নের বির্স্তীন জনপদ মুর্হুতে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। এতে চাষাবাদ নিয়ে প্রতিবছরই চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন হাজারো কৃষক।
সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহসিন বাবুল বলেন, চোয়াঁরফাঁিড় স্লইচ গেইটটি উপজেলার উপকুলীয় সাতটি ইউনিয়নের অন্যতম রক্ষাকবজ। এটির মাধ্যমে প্রতিবছর শুস্ক মৌসুমে পানি প্রবাহ আটকে রেখে চাষাবাদে সেচ সুবিধা নিশ্চিত করা হয়। কিন্তু প্রায় অকোজো স্লইচ গেইটের (জলকপাট) দরজা সমুহ ভেঙ্গে যাওয়ায় বর্ষামৌসুমে অতি বর্ষণের কারণে মাতামুহুরী নদীতে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি আটকানো সম্ভব হচ্ছেনা। এতে চাষাবাদ নিয়ে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন হাজারো কৃষক।
তিনি বলেন, প্রায় দুই যুগের বেশির সময় স্লুইচ গেইট নির্মাণ করেন কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু দীর্ঘবছর যাবত স্লুইচ গেইটটি সচল রাখতে বড়ধরণের কোন কাজ করেনি। বরং চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে প্রতিবছর সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদ অরক্ষিত স্লইচ গেইটটি রক্ষনা-বেক্ষনে কাজ করে যাচ্ছে।
ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, সম্প্রতি সময়ে এলাকাবাসির আহবানে চোয়ারফাঁিড় সুইচ গেইটটির বর্তমান প্রেক্ষাপট পরিদর্শন করেছেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ সামসুল তাবরীজ। ওইসময় উপকুলীয় জনপদের সাতটি ইউনিয়ন যথাক্রমে সাহারবিল, পুর্ববড় ভেওলা, কোনাখালী, বিএমচর, ঢেমুশিয়া, পশ্চিম বড়ভেওলা ও বদরখালী ইউনিয়নের হাজারো কৃষক এবং বসবাসরত অন্তত আড়াই লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা নিশ্চিতে অবিলম্বে স্লইচ গেইটটি মেরামতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়কে অনুরোধ করেছি। তিনি দাবির স্বপক্ষে সরেজমিনে বিষয়টি দেখেছেন।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ সামসুল তাবরীজ বলেন, পরিদর্শনে দেখলাম সাহারবিল ইউনিয়নের চোঁয়ারফাঁিড় স্টেশনে অবস্থিত স্লুইচ গেইটটি উপকুলের সাতটি ইউনিয়নের সর্বসাধারণ এবং কৃষকের জন্য অতীবগুরুত্বপুর্ণ। স্লুইচটি আটকানোর মাধ্যমে পানি সুবিধা নিয়ে কৃষকরা চাষাবাদ করেন। আবার বর্ষাকালে জলকপাট (দরজা) গুলো আটকিয়ে অতি বৃষ্টি এবং বন্যার পানি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
তিনি বলেন, এই স্লুইচ গেইটটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার হচ্ছেনা বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসি জানিয়েছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড স্লুইচটি নির্মাণ করলেও রক্ষনা-বেক্ষন করছেন উপজেলা প্রশাসন। তবু উপকুলীয় সাতটি ইউনিয়নে চাষাবাদ এবং পানি চলাচল নিবিঘ্ন করতে স্লইচ গেইটটি মেরামতে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলে করুণীয় নির্ধারণ করা হবে।
পাঠকের মতামত: