কক্সবাজার সদরের খুরুশকুলে নির্বাচনোত্তর সহিংসতায় হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় ৯ জনকে এজাহারনামীয় এবং আরো ২শ/৩শ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। স্থানীয় দক্ষিণ হিন্দুপাড়ার তিলক ঘোষ বাদী হয়ে সোমবার এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলার আসামীরা আওয়ামীলীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত। এরমধ্যে প্রধান আসামী ও পরাজিত মেম্বার প্রার্থী আবুল হোসেন ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং জেলা কৃষকলীগের সহ-সভাপতি। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে স্থানীয় আওয়ামীলীগের দাবী, ঘটনাটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। ভোট পূন:গণনাসহ নিরপেক্ষ তদন্ত করলেই ঘটনার প্রকৃত রহস্য উম্মোচিত হবে।
গত ২৮ মে শনিবার ইউপি নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষে ফলাফল ঘোষণার পর পরাজিত মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকেরা প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে কয়েকটি হিন্দু বাড়ীতে হামলা চালায়। এ ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় তীব্র প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে। এ ঘটনায় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং জেলা কৃষকলীগের সহ-সভাপতি আবুল হোসেনকে প্রধান আসামী করে সোমবার কক্সবাজার সদর থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়। মামলার আসামীদের সকলেই খুরুশকুল কূলিয়াপাড়ার বাসিন্দা। এ মামলায় ইতোমধ্যে ৩জনকে আটক করা হয়েছে। আটকরা হলেন- মামলার ২ নং আসামী ও খুরুশকুল মডেল হাইস্কুলের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র এবং স্থানীয় মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মহিউদ্দিন (১৮), মামলার ৮ নং আসামী ও স্থানীয় আলী হোসেনের ছেলে স্কুল মাস্টার সাইফুল ইসলাম এবং মামলার ৯ নং আসামী ও স্থানীয় মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা শাহজাহান। মামলার অন্যান্য আসামীরা হল- কবির আহমদের ছেলে দিনমজুর দেলোয়ার হোসেন (৩৪), মৃত আমির হামজার ছেলে ও স্থানীয় বিএনপি নেতা সেলিমউদ্দিন, ছৈয়দ আহমদের ছেলে আনিসুর রহমান, বজল করিমের ছেলে শিবির কর্মী নুরুল হক আরমান এবং কালা মিয়ার ছেলে মাহমুদুল হক পুত।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি আসলাম হোসেন জানান, মামলার অন্যান্য আসামীদেরকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা দাবী করেছেন, ঘটনাটি একটি সাজানো ও পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। ভোট পূন:গণনাসহ নিরপেক্ষ তদন্ত করলেই ঘটনার প্রকৃত রহস্য উম্মোচিত হবে।
খুরুশকুল ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল হোসেন বলেন- ভোটের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার ঘটনা ধাপাচাপা দিতেই সংখ্যালঘু নির্যাতনের ইস্যু সৃষ্টি করা হয়েছে। এটা আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে এবং দুটি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে একটি গভীর ষড়যন্ত্র। তিনি বলেন- প্রিসাইডিং অফিসার রাজিব দাশ তার মোবাইলে একটি ফোন কল আসার পর ওইদিন কেন কেন্দ্রে অর্ধেক ভোট গণনার পর তা বন্ধ করে উপজেলাতে নিয়ে গেলেন?
ভোট পূন:গণনাসহ ওই দিনের ঘটনাটি নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করলেই ঘটনার আসল রহস্য বের হয়ে আসবে বলে মন্তব্য করেন।
পাঠকের মতামত: